ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশ সুপারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন

মগনামায় মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে পুলিশের উপর হামলা

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন মগনামা মুহুরী পাড়া গ্রামে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল ২৪ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে পেকুয়া থানা পুলিশ মুহুরী পাড়া গ্রামে আসামী ধরতে গেলে ওই গ্রামের কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক মুহুরী পাড়া মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে পুলিশের উপর হামলা করার উসকানি দেয়।  এরপর মুহুরী পাড়া গ্রামের একদল সন্ত্রাসী পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে পেকুয়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। এদিন দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জানা যায়, সম্প্রতি সময়ে সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে উপকূলীয় জনপদ মগনামা। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। এদিকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মগনামায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।  তবে যে কোন মুহুর্তে সন্ত্রাসীরা আবারো মাথা ছাড়া দিয়ে উঠেছে। ২৪ আগস্ট সকালে মগনামা থেকে চকরিয়া হাসপাতালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিমের ভাই এনায়েত উল্লাহ ও তার মামাতো ভাই আরফাতের উপর হামলা করে মুহুরী পাড়া গ্রামের সংঘবদ্ধ একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। হামলায় এনায়েত উল্লাহ গুরুতর আহত হয়। তাকে প্রথমে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চমেকে রেফার করেছে পেকুয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।

স্থানীয়রা জানান, সকালে মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের ভাই এনায়েত উল্লাহর উপর হামলার পর মুহুরী পাড়া গ্রামের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সংঘবদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করে মুহুরী পাড়া স্টেশনে অবস্থান নেয়। এ খবর পেয়ে পেকুয়া থানা থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মুহুরী পাড়া গ্রামের কিছু সন্ত্রাসী পুলিশের উপর হামলার করে। হামলায় পেকুয়া থানার এএসআই তৌহিদুর রহমান, কনস্টেবল আল আমিন ও ইমরান হোসেন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে মগনামা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নাজেম উদ্দিন নাজু নামের ১ জনকে আটক করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, জয়নাল হত্যায় জড়িত সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটটি আমার ভাইদের উপর হামলা চালিয়েছে। গতকাল জয়নাল হত্যার অন্যতম আসামী নুর মোহাম্মদ গ্রেফতার হওয়ার প্রতিক্রিয়া এটি। সন্ত্রাসীরা মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে পুলিশের উপর হামলা করেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, চিহ্নিত দুর্বৃত্ত মমতাজুল ইসলামের নেতৃত্বে খোরশেদুল আলম, রোকন উদ্দিন, জসিম উদ্দিনসহ ৮ থেকে ১০ জন কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাই এনায়েত উল্লাহকে বর্বরভাবে আক্রমণ করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাঁর ভাইকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, মগনামার চেয়ারম্যানের ভাইসহ ২ জনকে হামলা করে জখম করার ঘটনায় সম্পৃক্তদের ধরতে মহুরি পাড়ায় অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে মুহুরী পাড়া গ্রামের চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের এক এএসআই ও দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্লাটা ১০ রাউন্ড গুলি চালায়। একজনকে আটক করা হয়েছে।

ওসি আরো বলেন, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এ দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজাম্মান গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। এতে তিনি সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। এ ছাড়া তিনি আরো বলেন, হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এছাড়া মগনামা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আজ থেকে বিশেষ অভিযানে নামবে পুলিশ।

পাঠকের মতামত: