ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

মহেশখালীর গোরাকঘাটা থেকে জনতাবাজার সড়কের বেহাল দশা!

সরওয়ার কামাল, মহেশখালী ::  মহেশখালী উপজেলা ৮টি ইউনিয়ন ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় প্রায় ৪ লক্ষ জনগনের বসবাস। উপজেলার প্রধান সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়ে পড়েছে। সড়কে মাঝে বড় বড় গর্ত আর কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যাওয়ার কারণে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে সড়ক দিয়ে চলাচল করছে সাধারন জনগণ। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় দুর্ভোগের মাত্রাটা আরো বেড়ে গিয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। বাংলাদেশ সরকারের বড় বড় ১৮টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া স্বপ্ন লালনে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল, নিরক্ষর ও দারিদ্র মুক্ত দেশ এগিয়ে গেলেও আজ সড়কগুলি নরক। মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা থেকে জনতা বাজার প্রধান সড়কের উপর ছোট-বড় গর্তের সমাহারে ধান চাষের উপযোগী হয়ে পড়েছে। মহেশখালীর (পশ্চিম) প্রধান সড়কটি উত্তর-দক্ষিণ জনতাবাজার টু গোরকঘাটা সড়ক ও জনপথ বিভাগের জরিপে ২৭.৩৩০ কিলোমিটার। তৎমধ্যে ৩.১০০ কিলোমিটার চিতাখোলা হয়ে মাতারবাড়ী দিকে বাঁকা হওয়ায় বাকী ২৪.২৩০ কিলোমিটার। ওই সড়কে ৮টি কালভার্ট, ইউ ড্রেন বক্সসহ ২টি বেইলি রয়েছে।
উক্ত থাকা প্রায় কালভার্টসহ অধিকাংশ ব্রিজের দু’পাশে মাটি নাই। এই জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়কটি বর্তমানে চলাচলের এতই অনুপোযোগী যে, ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় দু’শতের অধিক খানা খন্দকে গর্তে ভরা সিমাহীন ভোগান্তিতে উপজেলাবাসী। যা প্রতিটি পয়েন্ট সরেজমিনে ঘুরে উপলদ্ধি করে দেখা যায়। বিগত প্রায় একযুগ পূর্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় ১২ফুট প্রস্থস্ত কার্পটিং করা হলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত কোন ধরণের একটি কনক্রিটের কণাও রাস্তা দেয় নাই বলে অভিযোগ তুলেন সাধারন জনগন। অনেকেই বলেন, রাস্তার দু’পাশে প্রধান সড়কে গাইড়ওয়াল না থাকায় সামান্য গুটি বৃষ্টি হলে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বড় মহেশখালী নতুনবাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন জানান, ছোটবড় গর্তে ভরা ব্যস্ততম সড়কটি এমনি মমরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে, তেমনি একটু বৃষ্টি হলেই চাষবাদের জমিতে রূপ পাই।
হোয়ানক ইউনিয়নের ব্যবসায়ী রবি আলম জানান-টাইম বাজারসহ প্রধান সড়কে নাজুক গর্তে ভরপুর এবং অধিকাংশ বেইলী ব্রিজসহ বেশিরভাগ কালভার্টের উভয়পাশে মাটি না থাকায় যান চলাচল করতে খুবই বিপদ জনক। তিনি আরো জানান, একজন গর্ভবতী এবং মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নেয়া আরো কঠিনদশা অবস্থা হয়ে পড়ে। এমনকি অনেকের ডেলিভারি রাস্তায় হওয়া সম্ভাবনা হওয়া আশংকা হয়। এতে ভোগান্তিতি পড়ছে জনসাধারণ। কালারমারছড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা নজরুল ইসলাম জানান, বাজারের দক্ষিণ পার্শে মাঠ সংলগ্ন সড়ক ধান চাষের উপযোগি এবং বাজারের উত্তর পার্শে অর্থাৎ ফরেষ্ট বিট অফিসের প্রবেশপথে কালভার্টের পাশে মাঠি না থাকায় মরণ ফাঁদ সৃষ্টি হয়েছে।
এভাবে প্রত্যেক পয়েন্টে চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে উপজেলায় আগত ট্যুরিস্ট, দেশ-বিদেশী প্রকল্প পরিদর্শ ও জনসাধারণ। দ্বীপময় মহেশখালীতে বর্তমান সরকারের সু-নজর থাকায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিপুল উন্নয়নসহ বড় বড় দীর্ঘ মেয়াদী মেগা প্রকল্প স্থাপনের কাজ চলমান। সেই সুবাদে অনেকে সিঙ্গাপুর নামে অখ্যাতি দিলেও কিন্তু কাজের কাজ সড়কে অবস্থা বেহাল হওয়ায় নামমাত্র সিঙ্গাপুর বলে মনে করেন যান চালকেরা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের উপর জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পুকুরে পরিণত হয়। তারা আরো বলেন সড়কের দু’পাশে পানি চলাচলের জন্য ড্রেইনের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কের উপর দিয়ে চলে পানি। অতিদ্রুত সময়ে চলাচলের অনুপোযোগী রাস্তাঘাট মেরামত ও প্রশস্ত করতে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মহেশখালীবাসী। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা পিন্টু চাকমা জানান, উক্ত সড়কটি ১২ ফুট প্রস্হস্থ ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে সংস্কার করা হয়েছিল। সম্ভবত আগামী মাসে ১৮ ফুট প্রস্থস্ত সড়কটি সংস্কার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান প্রধান সড়কে বেইলী ব্রিজ গুলি সংস্কার করে ঝুঁকিপূর্ণ এড়াতে কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। মহেশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শরীফ বাদশা জানান, বিগত প্রত্যেক মিটিংয়ে মহেশখালীর প্রধান সড়কের কথা তুলে ধরা হয়। এখন তা বাস্তবায়নের পক্ষে তবে অতি শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃজামিরুল ইসলাম জানান, কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের কথামতে অতিদ্রুত ১৮ ফুট প্রস্থস্ত প্রধান সড়কের কাজ শুরু হবে।

পাঠকের মতামত: