ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

সরবরাহ পর্যাপ্ত তবুও বেড়েছে গ্যাসের দাম

মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার :: 
মাঠ পর্যায়ে সরবরাহ আছে পর্যাপ্ত তবুও বাড়ছে গ্যাসের দাম। কয়েক মাসের মধ্যে সিলিন্ডার প্রতি ২০০ টাকার বেশি বেড়েছে এলপি গ্যাসের দাম। এতে বাসাবাড়িসহ সর্বত্র ব্যবহারের গ্যাস নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। এতে গ্রাহক পর্যায়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এদিকে গ্যাসের দাম বাড়ার সাথে সাথে দোকান পর্যায়ে বাড়িয়ে দিয়েছে আনুষাঙ্গিক খরচ। এতে চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষও।
কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলী বলেন, দেড় মাস আগে গ্যাস নিয়েছিলাম ৯০০ টাকা দিয়ে এখন গ্যাস আনতে গিয়ে দেখি ১১৮০ টাকা চাইছে। পরে বাধ্য হয়ে তাদের নির্ধারিত রেইটেই গ্যাস আনতে হয়েছে। এ সময় দোকানদারকে দাম বাড়ার কারন জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি।
একই এলাকার গৃহীনি শারমিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী বিদেশ থাকে,বাসায় টাকা পাঠায় হিসাব করে এর মধ্যে ছেলে মেয়ের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সব কিছুর খরচ সামাল দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তার উপর বর্তমান চাল থেকে শুরু করে তরিতরকারি সব কিছুর দাম আকাশ চুম্বি,এর মধ্যে গ্যাসের দাম বেড়েছে সিলিন্ডার প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এছাড়া যে গ্যাস আনে তাকেও দিতে হয়ে সব মিলিয়ে ১২০০ টাকার মত খরচ হচ্ছে। আসলে আমাদেরতো বাড়তি কোন আয় নেই,সব খরচ দেখেশুনে করতে হয়। এর মধ্যে গ্যাসের দাম বাড়া দুঃখ জনক।
বাহারছড়া এলকার গৃহিনী পারুল আক্তার বলেন, গ্যাসের বোতলে ১২ কেজি থাকার কথা থাকলেও প্রকৃত পক্ষে থাকে অনেক কম। আমরা মাঝে মধ্যে মেপে দেখলে ১১ কেজি থাকে। কিন্তু দোকানদারকে অভিযোগ করলে তারা বলে আমাদের কিছুই করার নেই আমরা পাইকারী দোকান থেকে আনি তারা যেভাবে দিয়েছে আমরা সেভাবেই আপনাদের দিচ্ছি।
এদিকে বাহাড়রছড়া এলাকার গ্যাস ব্যবসায়ী কাজল দাশ বলেন, আমরা খুচরা ব্যবসায়ি দৈনিক পাইকারী দোকান থেকে গ্যাস এনে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করি বর্তমানে গ্যাসের দাম ১১৫০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি করতে হয়, এতে সিলিন্ডার প্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত থাকে। তাই গ্যাসের দাম বাড়ার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই এটা নির্ভর করে সম্পূর্ন পাইকারী ব্যবসায়িদের উপর। তবে গ্যাসের দাম বাড়ায় অনেক গ্রাহক অসন্তুষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে।
কালুর দোকান এলাকার গ্যাস ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, কয়েক মাস আগে গ্যাসের দাম ছিল ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। কিন্তু সেটা এখন বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ১২০০ টাকা। এর আগে দাম আরো বেড়েছিল চলতি মাসে কিছুটা কমেছে তবে চলতি বছরে এটা সর্বোচ্চ দাম বলে মনে করেন তিনি।তার দাবী সরবরাহ আছে প্রচুর তবুও কেন দাম বাড়ছে সেটা পাইকারী ব্যবসায়িরাই বলতে পারবে। তবে আমি মনে করি বেশি লাভের জন্য সিন্ডিকেটের কারনে গ্যাসের দাম বাড়ছে।
এদিকে রামু সরকারি কলেজের অধ্যাপক জহির উদ্দিন বলেন, দোকানে গেলে গ্যাসের সিলিন্ডারের কোন অভাব নেই, এছাড়া জাতীয় ভাবেও কোথাও গ্যাসের সংকটের কথা শুনা যায় নি। সবচেয়ে বড় কথা এলপি গ্যাস পেট্্েরাল পাম্প গুলোতে বিক্রি হচ্ছে অনেক কম দামে সে হিসাবে বোতলজাত এলপি গ্যাসের দাম আরো কম হওয়ার কথা। সে হিসাবে সারা দেশে এলপি গ্যাসের দাম কেন বাড়তি দামে গ্রাহক পর্যায়ে সেটা উপর মহল থেকে একটি তদন্ত হওয়া দরকার।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা প্রশাসনের কর্মচারী বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য গ্যাসের দাম ১২০০ টাকা হলেও সরকারি অফিসে এবং সরকারি বড় বড় কর্মকর্তাদের জন্য ৬০০ টাকার মধ্যে। সে জন্য প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না। কারন তারা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সঠিক দামটিই নেয়। সাধারণ মানুষ থেকে বাড়িয়ে নিলেও তাদের কেউ কিছু করেনা।
এদিকে শহরের লিংকরোড়ের ফয়েজ ফিলিং ষ্টেশনের সত্বাধিকারী আনোয়ার বলেন, এলপি গ্যাস হলেও বোতলজাত গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারও উঠানামা করে কিন্তু ফিলিং ষ্টেশনে যে গ্যাস বিক্রি হয় সেটা নির্ধারিত তাই আমাদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই।

পাঠকের মতামত: