ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

তানভির হত্যার প্রতিবাদে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের ১০ দিনের কর্মসূচী ঘোষণা

ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার :  কক্সবাজারে সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে নিহত মেধাবী ছাত্র এএইচএম তানভীর আহমেদের নামাজে জানাজা শনিবার (৩০ জুন) বাদে জুহর কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম রহিমুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভা মেয়র পদপ্রার্থী মুজিবুর রহমান, সরওয়ার কামাল, রফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন সিকদার, এডভোকেট আবু ছিদ্দিক ওসমানী, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ, কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: রাসেদুল হক রাসেল, নিহতের ভাই মোহাম্মদ মহসিন, আহসান উল্লাহ বাচ্চু, মামা এডভোকেট মোস্তাক আহমদ।
বক্তব্যকালে মেয়রপ্রার্থী রুহুল আমিন সিকদার বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তর্কবিতর্কে যদি মেধাবী ছাত্রের প্রাণচলে যায়, তাহলে এ নির্বাচন করার দরকার নাই। রুমালিয়ারছড়া একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী এলাকা। এই এলাকায় অভিলম্বে পুলিশ ফাঁড়ী স্থাপন করা হউক। তিনি বলেন, নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো। সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে মাঠে নামবো।
অপর মেয়রপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিনা দোষে তানভীরকে খুন করা হয়েছে। ক্ষমতার মোহে একটি ফুটন্ত গোলাপকে নিভিয়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি খুবই ঘৃণিত ও ক্ষমার অযোগ্য। যারা ঘটনায় জড়িত, ইন্দন যুগিয়েছে তাদের দ্রুত বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, নির্বাচনের আগে এই খুনের ঘটনার জন্ম দিয়ে সন্ত্রাসীরা কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে? তা সবার জানা হয়ে গেছে। যারা নির্বাচনের সুষ্টু প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে, তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ করা হবে।
তিনি বলেন, কক্সবাজার পর্যটনবান্ধন ও রাজনৈতিক বন্ধনসমৃদ্ধ এলাকা। সামান্য ক্ষমতার জন্য কোন মায়ের বুক খালি হতে দেয়া যায়না। একজনকে চেয়ার পাইয়ে দিতে হাজারো স্বজনের বুকফাটা আর্তনাদ শুনতে চাইনা। আমরা নিরীহ জনগণ শান্তি চাই।
মেয়র প্রার্থী মুজিবুর রহমান শপথ করে বলেন, তানভীর হত্যার সুষ্ঠু বিচার করবই। হত্যাকা-ে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কারো পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
নির্বাচনের ব্যাপারে জনগণকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের জনপদ রুমালিয়ারছড়ায় পুলিশ ফাঁড়ী স্থাপনের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাব। কোনভাবেই আগামি পৌরসভা নির্বাচনে গ-গোল করতে দেয়া হবেনা। আমি চাই একটি সুষ্টু নির্বাচন। সেই লক্ষে নেতাকর্মিদের বলে দিয়েছি।
জননেতা লুৎফুর রহমান কাজল ও জিএম রহিমুল্লাহ তানভীরের খুনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে বক্তব্য রাখেন। সেই সাথে তারা শোকাহত স্বজনের প্রতি সমবেদনা জানান। নামাজে যানাজা শেষে রুমালিয়ারছড়া কবরস্থানে মেধাবী ছাত্র তানভীরকে দাফন করা হয়।
২৯ জুন জুমার নামাজের পর এইচএম তানভীর আহমেদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। এ সময় তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদের পক্ষে কথা বলছিলেন। সে দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া আশুঘোনা এলাকার মোহাম্মদ সোলাইমানের ছেলে।
তানভীর কক্সবাজার সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী, কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসার দাখিল ৯ ব্যাচ এবং আলিম ১০-১১ ব্যাচের মেধাবী ছাত্র।
বর্তমানে কক্সবাজার আইডিয়াল মাদরাসার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও প্রতিভা কোচিং সেন্টারের পরিচালক। আগামী ১০ জুলাই নৌবাহিনীর অফিসার পদে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল তানভীরের। ঘটনার ১ দিন পার হলেও কোন সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চিহ্নিত অপরাধী বলে পরিচিত আশুঘোনার আবুল বশরের ছেলে নেজাম, মিজান, আতিক, জসিম, জাহাঙ্গীর, রায়হান, আবুল কালাম, ইসমাঈল, কায়সার, সালাহ উদ্দিনসহ একদল সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

পাঠকের মতামত: