ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে মারা গেল ‘বাঘ’!

ডুলাহাজারা প্রতিনিধি, চকরিয়া :
চকরিয়াস্থ ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে একটি বাঘের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
হাতি মৃত্যুর চার মাসের মাথায় গত রোববার রাতে মারা গেল একটি বাঘ। বাঘ মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখে ঘটনার ধামাচাপা দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সাফারি পার্ক কর্মকর্তারা।
এদিকে বাঘ মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আগেই মৃতদেহটি মাটি কুঁড়ে পুতে ফেলা হয়েছে বলে গোপন সুত্রে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানায় ইতিপূর্বে সাফারি পার্কে চারটি বাঘ ছিল।
গত কয়েকদিন আগে একটি বাঘ খাঁচা থেকে বের হওয়ার খবর চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়লে আতংকে ছিল পর্যটক ও স্থানীয় লোকজন। পরে বাঘটি আটক করে পুনঃরায় খাঁচাবদ্ধ করা হয়েছিল বলে পার্কসুত্রে জানান। তবে কেন বাঘটি পালিয়েছিল সংবাদিকদের এব্যাপারে কোন তথ্য দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পার্ক কর্মচারী জানিয়েছেন, রোববার রাতে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের খাঁচায় বন্দী একটি বাঘ খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে। ওইসময় সাফারি পার্কের আবাসিক চিকিৎসক বাঘটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত মারা গেলেন পর্যটক দৃষ্টিনন্দন প্রাণী সাফারি পার্কের এই বাঘ। একই রাতে সংগোপনে গড়িমসি করে বাঘের মৃতদেহটি মাটিতে ফুঁতে ফেলা হয়েছে।
বাঘ মৃত্যুর খবর পেয়ে পরদিন সরেজমিন গিয়ে খাঁচায় তিনটি বাঘই লক্ষ্য করা গেছে। তবে একটি খালি খাঁচা পানি দিয়ে পরিষ্কার করায় ভেজা পাওয়া যায়। মূলত পার্ক কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও খামখেয়ালীপনার কারণে পরপর প্রাণীগুলো মারা যাচ্ছে বলে অভ্যন্তরীণ সুত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের পশু হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সহকারী ভেটিরেনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সাফারি পার্কের তত্ববাধায়ক রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মোর্শেদ আলমকে বাঘ মৃত্যুর পরদিন সোমবারে ফোন করে তার দুটি নাম্বারই বন্ধ পাওয়া যায়।
সাফারি পার্কের বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানান ‘আমি ছুটিতে আছি এব্যাপার কিছুই জানি না’। এব্যপারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষক (ডিপো) গোলাম মওলাকে ফোন করা হলে কক্সবাজার চকরিয়া থেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি মিটিং-এ আছে বলে জানান। সাফারী পার্কে ইতিপূর্বে বাঘের শাবক, হাতি, এবার বাঘ -এভাবে একেরপর এক জীবজন্তু ও পশুপাখী মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উৎঘাটন হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পার্ক কর্তৃপক্ষের অনিয়ম-অবহেলায় প্রাণী মৃত্যু বিষয়ে কোন প্রকার তদারকি নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। অনিয়ম অবহেলার সত্যতা উৎঘাটন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।

পাঠকের মতামত: