ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঈদের ছুটিতে জমবে পর্যটন

নিজস্ব প্রতিবেদক :: পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের মিষ্টি হাওয়া গায়ে মেখে প্রিয়জনের হাত ধরে হাঁটতে কিংবা দেশের সবচেয়ে উঁচু সবুজ পাহাড় চিরে এঁকেবেঁকে চলা পথে প্রকৃতির সঙ্গে হারিয়ে যেতে কার না ইচ্ছা হয়! তবে কেবল ইচ্ছা বা সামর্থ্য নয়- এজন্য প্রয়োজন সময় এবং অনুকূল পরিবেশেরও।

ঈদের লম্বা ছুটি ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের সেই সুযোগ এনে দেয়। সাগর কিংবা পাহাড়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন অনেকে। তাই পর্যটন শিল্পে এখন চলছে ঈদের হাওয়া। সব মিলিয়ে এবার ঈদে কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং চট্টগ্রামের পর্যটন ব্যবসায় লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। ঈদের ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ হাজার পর্যটক আসবেন বলে আশা করছেন এখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা। পর্যটক টানতে হোটেল কক্ষের ভাড়াতেও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার ঈদে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

হ্রদ-পাহাড়ের শহর রাঙামাটিতে শহরেই ৪০টি হোটেল মোটেল রয়েছে। সেখানে দিনে প্রায় ২০ হাজার পর্যটকের আনাগোনা হবে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের। ব্যবসা হবে ২০ কোটি টাকার। ঈদে বেড়াতে আসার জন্য খাগড়াছড়ির ১০০ হোটেল-মোটেলে আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন পর্যটকরা। মায়াবী ঝর্ণার এই জেলায় ঈদে ব্যবসা হতে পারে ৫ কোটি টাকার।

তবে ভিন্ন চিত্র দেশের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের শহর বান্দরবানের। সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী তৎপরতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বান্দরবানের পর্যটন শিল্প। বেশ কিছু এলাকায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার ঈদে বান্দরবানে আশানুরূপ পর্যটক আসবে কিনা-তা নিয়ে শঙ্কিত এখানকার ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজারে ১২শ কোটি টাকা ব্যবসার আশা

কক্সবাজারে এখন ভিন্ন রূপ। পবিত্র রমজানের কারণে কোথাও নেই পর্যটক। তবে ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ হাজার পর্যটক আসবেন বলে আশা করছেন এখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা। পর্যটক টানতে হোটেল কক্ষের ভাড়াতেও ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার ঈদে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

পর্যটক বরণে কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেলে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। হোটেল রং, ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করা হয়েছে। এবার ঈদের ছুটি পাঁচদিন হলেও টানা সাতদিন কক্সবাজারে পর্যটকরা ভ্রমণে আসবেন বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতির পাশাপাশি কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনও।

কক্সবাজার হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ঈদের ছুটি পাঁচদিন হলেও টানা সাতদিন কক্সবাজারে পর্যটক আসবেন। অনেক পর্যটক ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছেন। এবার প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ হাজার পর্যটক কক্সবাজার আসবেন বলে আমরা আশা করছি। ফেডারেশনভুক্ত হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউসে ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আবুল কাসেম সিকদার আরও বলেন, কোনো আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ যদি পর্যটকদের ছাড় না দেন- আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা তার ব্যবস্থা করে দেব। এবার ঈদের টানা সাতদিনে কক্সবাজারে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হবে বলে আমরা আশা করছি।

কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার শেহরিন আলম। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় আবারও চিরচেনা রূপে ফিরবে সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা। নিরাপত্তা জোরদার করে পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা প্রস্তুত। এজন্য সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।

প্রকৃতির নির্জনতায় কাটুক ঈদ আনন্দ

সবুজের মাঝে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে ছুটি কাটাতে পছন্দ করেন না- এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এই ঈদের ছুটিতে জোনাকির মিটিমিটি আলোয় নিরিবিলি রাতযাপন অথবা ভোরে নাম না জানা শত শত পাখির কলতান শুনতে শহরের কাছেই রয়েছে কিছু বিনোদনকেন্দ্র। যেখানে পরিবার-পরিজন নিয়েও ঘুরে আসা যাবে সহজেই। শহুরে জীবনের যান্ত্রিকতাকে ভুলে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া যাবে নিমিষেই।

নিসর্গ পড হাউস:

লুসাই পাহাড় থেকে বয়ে আসা শীতল জলের কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে নিসর্গ পড হাউস। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় প্রবেশের আগে ওয়াগ্ধসঢ়;গা ইউনিয়নের শীলছড়ি এলাকায় পৌঁছালে সড়কের পাশে চোখে পড়বে এই পড হাউস। সম্পূর্ণ নতুন থিমের নিসর্গ পড হউসে মিলবে খর¯্রােতা কর্ণফুলী নদীর তীরে গ্ল্যাম্পিং করার ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা।

এখানে রয়েছে ৯টি পড হাউস। প্রতি রুমে সর্বোচ্চ তিনজন থাকা যাবে। ৩ জন থাকলে ভাড়া গুণতে হবে ৬ হাজার টাকা। আর ২ জনের জন্য গুণতে হবে ৫ হাজার টাকা। এই প্যাকেজে রুম ভাড়ার সঙ্গে থাকছে- দুপুরের খাবার, রাতের খাবার, সকালের নাস্তা এবং কর্ণফুলী নদীতে ৩০ মিনিট কায়াকিং। পড হাউসের বারান্দা থেকে উপভোগ করা যাবে কর্ণফুলী নদীর সৌন্দর্য।

বার্গি লেক ভ্যালি ক্যাম্পিং:

ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পিং করতে চলে যেতে পারেন বার্গি লেক ভ্যালি ক্যাম্পিং। রাঙামাটি লেকের সাথে মনোরম পরিবেশে ক্যাম্পিং করা যাবে এখানে। এটি মূলত ক্যাম্পিং সাইড। এখানে আপনি তাবুতে রাতযাপন করতে পারবেন। জনপ্রতি খরচ পড়বে ১ হাজার ৩০০ টাকা। প্যাকেজে থাকছে- তাবু, কম্বল, বালিশ, ম্যাট্রেসসহ সন্ধ্যার নাস্তা, রাতের খাবার, সকালের নাস্তা এবং লেকে ৩০ মিনিট কায়াকিং করার সুযোগ।

লুসাই বিচ ক্যাম্পিং:

সাগর পছন্দ করেন না- এমন মানুষ কমই আছে। তাদের জন্য আছে শহরের কাছেই আনোয়ারা পারকি বিচে অবস্থিত লুসাই বিচ ক্যাম্পিং। এটাও ক্যাম্পিং সাইড। যেখানে আপনি সাগর পাড়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন সুন্দর একটি তাবুবাস। এখানে জনপ্রতি খরচ পড়বে ১ হাজার ২০০ টাকা। এই টাকার মধ্যে মিলবে তাবু, কম্বল, বালিশ, ম্যাট্রেসসহ ৩ বেলা খাবার।

খাগড়াছড়ির ১শ হোটেল পর্যটক বরণে প্রস্তুত

ঈদের ছুটিতে এবার খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ঢল নামবে। ঈদে বেড়াতে আসার জন্য এখানকার ১০০ হোটেল-মোটেলে আগাম বুকিং দিয়ে রেখেছেন পর্যটকরা। করোনাকালীন ঈদগুলোতে খাগড়াছড়ির পর্যটন ব্যবসায় ভাটা পড়লেও এবারের ঈদে প্রতিদিন ১০ হাজার পর্যটক আগমনের আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে- ঈদকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো নতুন রূপে সেজেছে। আলুটিলা, রহস্যময় গুহা ও জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কসহ সব পর্যটনকেন্দ্র পর্যটক বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে। সব মিলিয়ে এবার ঈদে ১০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হওয়ার আশা করছেন এখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

জেলায় অনেকগুলো পর্যটনকেন্দ্র থাকলেও সবকিছুকে ছাপিয়ে পর্যটকদের অপার আকর্ষণ- বদলে যাওয়া আলুটিলা ও আলুটিলার ব্যতিক্রমী ব্রিজ। এছাড়াও রহস্যময় গুহা ও রিছাং ঝর্ণায় প্রাণ জুড়িয়ে যাবে পর্যটকদের। খাগড়াছড়ি হয়ে যেতে হয় বলে রাঙামাটির সাজেক উপত্যকার উদ্দেশ্যে আসা ভ্রমণ পিপাসুরাও ভিড় জমাবেন খাগড়াছড়িতেই। ফলে ঈদে খাগড়াছড়ি পর্যটকদের শহরে রূপ নেবে বলে আশা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এছাড়াও শহরের অদূরে পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালিত জেলা পরিষদ পার্ক, ঝুলন্ত সেতু, নয়নাভিরাম লেক পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। খাগড়াছড়িতে দেখার মতো রয়েছে- মায়াবিনী লেক, হাতি মাথা পাহাড়, দেবতার পুকুর, তৈদু ছড়া ঝর্ণা, পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও পানছড়ির অরণ্য কুঠির।

খাগড়াছড়ি ট্যুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, পর্যটকরা যাতে নিরাপদভাবে ঘুরতে পারেন সে ব্যবস্থা নিয়েছে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। হোটেল পর্যটন এর ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের বুকিং শেষ র্পযায়ে।

বান্দরবানের পর্যটনে নিষেধাজ্ঞার ‘খড়গ’

সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী তৎপরতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বান্দরবানের পর্যটন শিল্প। বেশ কিছু এলাকায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার ঈদে বান্দরবানে আশানুরূপ পর্যটক আসবে কিনা- তা নিয়ে শঙ্কিত এখানকার ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছর এই সময়ে বান্দরবানের সব হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং নেওয়া শেষ করলেও এবার ২০ শতাংশ বুকিংও হয়নি। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন এই এলাকার পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- দীর্ঘদিন থেকে সন্ত্রাসী কর্মকা- ও জঙ্গি অপতৎপরতার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চলছে। অন্যদিকে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বান্দরবানের পর্যটন এলাকাগুলো থেকে।

বান্দরবানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় অবস্থিত। পাহাড় ট্রেকিং প্রিয় পর্যটকরা বান্দরবানের এসব এলাকায় আসেন বেশি। তবে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় বিদেশি ও বাইরের পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এসব এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখন অনেকটাই বন্ধ। পর্যটকরা বান্দরবান ভ্রমণে আসলে শুধু মেঘলা, নীলাচল ও নীলগিরি যেতে পারবেন। অন্য সবগুলোই এখন বন্ধ রয়েছে।

জেলা পর্যটন হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, পর্যটকরা এখন শুধুমাত্র হাতেগোনা কিছু পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে পারছেন। বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রগুলো এখন নিষেধাজ্ঞার কারণে বন্ধ রয়েছে। অথচ পর্যটকরা দুর্গম এলাকার পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যেতে বেশি পছন্দ করেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায়ীরা মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়বেন।

জেলা শহরের কাছে হলিডে ইন রিসোর্ট এর মালিক জাকির হোসেন জানান, রিসোর্টগুলোতে হাতে গোনা কিছু পর্যটক থাকলেও অধিকাংশ হোটেল-মোটেল ফাঁকা থাকছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক পর্যটকই এখন বান্দরবান আসতে ভয় পাচ্ছেন।

পর্যটক গাইড শহিদুল ইসলাম জানান, বান্দরবান আসা পর্যটকরা দুর্গম এলাকায় ট্রেকিং করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু এসব এলাকায় এখন নিষেধাজ্ঞা চলছে। নিরাপত্তার কারণে সেখানে সবকিছু বন্ধ। ফলে ঈদের সময়ে যে পর্যটকরা আসতেন তারা এখন অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন।

রুম বুকিংয়ে অফারের ছড়াছড়ি রাঙামাটিতে

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত রাঙামাটির হোটেল-মোটেলগুলো। এরইমধ্যে রাঙামাটির হোটেলগুলোর প্রায় ৩৫ শতাংশ রুম অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আরও পর্যটক টানতে হোটেলের রুম বুকিংয়ে চলছে অফারের ছড়াছড়ি। ব্যবসায়ীদের আশা- করোনা মহামারীর পর এ বছরই সর্বোচ্চ ব্যবসা-বাণিজ্য হবে পর্যটনের নীলাভূমি রাঙামাটিতে। ঈদে ২০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হবে পর্যটকদের ঘিরে। রাঙামাটিতে পর্যটকদের বরণে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতির পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, হোটেল মালিক সমিতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিশেষ নজরও রাখা হচ্ছে এ বছর।

মালিক সমিতির নেতারা জানান, রাঙামাটি শহরেই ৪০টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। এসব হোটেল-মোটেলে প্রায় ৫ হাজার পর্যটকদের ধারণ ক্ষমতা আছে। যদিও দিনে সবমিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার পর্যটকের আনাগোনা হবে বলে ধারণা মালিকদের।

রাঙামাটি হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, আমাদের এখানে ৪০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। তাতে ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার। তবে অতীত দিনে প্রায় ২০ হাজার পর্যটক আনাগোনা হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। অতীতের চেয়ে আরও বেশি পর্যটক হবে বলে আমরা আশাবাদী। কেননা রাঙামাটির বেশিরভাগ পর্যটক দিনে দিনেই ঘুরে চলে যান।

তিনি বলেন, পর্যটকদের সুবিধার্থে এবার অন্য বছরের তুলনায় হোটেল-মোটেলগুলোতে বিশেষ ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিটি হোটেলেই ৩০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে হোটেলগুলোর প্রায় ৩৫ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে আরও কিছু বুকিং হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে এবং টুরিস্ট পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। পর্যটকরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারে সে জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার নিশ্চিত করা হবে।

পাঠকের মতামত: