ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

শপথের আগেই ইউপি ভবনে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানের কার্যক্রম!

রামু প্রতিনিধি ::
শপথ গ্রহনের আগেই দলবল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন দখল করে কার্যক্রম চালালেন রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক। গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এখনো নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হয়নি। হয়নি শপথ গ্রহন ও দায়িত্ব হস্তান্তরও। পরিষদে এখনো দায়িত্বরত আছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সমর্থকদের নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে গিয়ে একটি বেসরকারি সংস্থার অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক। আইন অনুযায়ি তিনি পরিষদে গিয়ে এমন কার্যক্রম চালাতে পারেন না। তাই এনিয়ে জনমনে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মুফিজুর রহমান জানিয়েছেন- হেলভেটাস নামক একটি বেসরকারি সংস্থা ১৭৫ জন শ্রমিকের মাঝে ৮ হাজার টাকা করে অনুদানের অর্থ বিতরণ করার কথা ছিলো বুধবার দুপুর ২ টায়। নিয়ম অনুযায়ি তিনিই (সচিব) এ অর্থ বিতরণ করার কথা। কিন্তু বিতরণের আগে মোবাইলে কথা বলে পরিষদ ভবনে আসেন নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক। এক পর্যায়ে তিনিই (আবদুল হক) এসব অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন। তিনি (সচিব) আরো জানান- বেসরকারি সংস্থা হেলভেটাস এর দায়িত্ব নিয়োজিতরাই নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানকে এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যা তিনি জানতেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানিয়েছেন- আবদুল হক নির্বাচনে জয়ী হলেও এখনো তিনি শপথ নেননি, দায়িত্বও হস্তান্তর হয়নি। তাই পরিষদে গিয়ে কার্যক্রম চালানো তাঁর উচিত হয়নি। এছাড়াও তিনি হেলভেটাস এর দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের পরিষদ চেয়ারম্যান না থাকায় অর্থ বিতরণ আপাতত না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। করলেও পরিষদের সচিবকে দিয়ে করার কথা ছিলো। কিন্তু তারা কেন এমনটা করলো জানিনা। এ ঘটনায় হেলভেটাস এর সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হক জানিয়েছেন- ‘পরিষদ ভবন দখল করে কার্যক্রম চালানোর বিষয়টি সত্য নয়। একটি বেসরকারি সংস্থার আমন্ত্রণে আমি অনুদানের অর্থ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করার জন্য গিয়েছিলাম। আমি সেখানে কিছু কথা বলে চলে আসি। পরিষদ তো সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানে যেতে তো কারো বাধা নেই। কয়েকদিন পরেই তো আমাকে এখানে স্বসম্মানে দায়িত্ব দিয়ে চেয়ারে বসানো হবে। তাহলে দখল করার তো প্রশ্নই আসে না’।
বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ জানিয়েছেন- এখনো তিনি পরিষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। কিন্তু ১১ নভেম্বর বিতর্কিত ফলাফলের মাধ্যমে আবদুল হক চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী ঘোষনা দেয়া হয়। কিন্তু এখনো এনিয়ো গেজেট প্রকাশ, শপথ গ্রহন ও দায়িত্ব হস্তান্তর না হওয়ার পরও আবদুল হক বুধবার দুপুরে লোকজন নিয়ে পরিষদ ভবনে প্রবেশ করেন এবং সেখানে তার কার্যালয় দখল করে পরিষদের কার্যক্রম চালাতে শুরু করেন। এসময় তিনি পরিষদের আওতাধিন একটি বেসরকারি সংস্থার ভাতা বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন এবং বক্তব্য রাখেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এসময় তিনি আমার (মাবুদ) সমর্থক হওয়ায় ভাতা নিতে আসা আবদুল কাদের, সখিনা বেগম সহ কয়েকজনকে মারধর করেন। দায়িত্ব না পাওয়ার আগেই যিনি এভাবে মারমুখি ও সন্ত্রাসী আচরণ শুরু করেছেন, তিনি দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে দেবেন, তা নিয়ে খুনিয়াপালংবাসী এখন শংকিত হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের আইনানুগ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে জানার জন্য হেলভেটাস এর প্রকল্প পরিচালক সেলিম উদ্দিন এর সাথে বুধবার রাতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে কোন কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।

পাঠকের মতামত: