ঢাকা,বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন ২ নারীসহ ৪০ সাঁতারু

# ৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিটে ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলেন রাসেল
# শেষ করতে পারলেন না ৩ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ ::
কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্র সৈকত থেকে সেন্টমার্টিনদ্বীপের উত্তর সৈকত পর্যন্ত স্রোত ধারার নাম-“বাংলা চ্যানেল ‘। ১৬ দশমিক ১কিলোমিটার দূরত্বের এই বাংলা চ্যানেলটি ৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিটে পাড়ি দিয়ে ১৮ তম আসরের প্রথম হয়েছে সাঁতারু সাইফুল ইসলাম রাসেল।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা ৩২ মিনিটে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্র সৈকত থেকে এই সাঁতার শুরু করা হয়। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন ৪৩ জন সাঁতারু। এর মধ্যে দুইজন নারী ও ৪১ জন পুরুষ রয়েছেন। দুই নারীর মধ্যে এক ভারতীয়, ওই নারী সাঁতারুর নাম-রচনা শর্মা ও বাংলাদেশি নারী সাঁতারুর নাম-এম এস টি শোহাগী আক্তার। শেষ পর্যন্ত ৩ জন তাদের সাঁতার শেষ করতে না পারলেও অপর ৪০ জন শেষ করেছেন।

এরমধ্যে দুই নারী ভারতের রচনা শর্মা ৫ ঘন্টা এবং শোহাগী আক্তার ৪ ঘন্টা ২৬ মিনিটে চ্যানেলটি পাড়ি দিয়েছেন।

এবারের সাঁতারের আয়োজন করেছে ‘ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার’ ও ‘এক্সট্রিম বাংলা। ১৮ তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২৩’ এর প্রধান সমন্বয়ক ও ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, অংশ গ্রহণকারির মধ্যে ফজলুল কবির সিনা, আব্দুল্লাহ আল সাবিত, মাহমুদুর রহমান বনি এই ৩ জন সাঁতার শেষ করতে পারেননি। অন্যান্যদের মধ্যে যথাক্রমে সাইফুল ইসলাম রাসেল ৩ ঘন্টা ৩৫ মিনিট, এমডি ইলিয়াস হোসেন ৪ ঘন্টা ৪ মিনিট, সুমন বালা ৪ ঘন্টা ১১ মিনিট, মো মনিরুজ্জামান ৪ ঘন্টা ১৩ মিনিট, মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরাফাত ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট, সালাহ উদ্দিন ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট, আবাদুল ইসলাম ৪ ঘন্টা ১৭ মিনিট, এম এস টি শোহাগী আক্তার ৪ ঘন্টা ২৬ মিনিট, মো. কামাল হোসেন ৪ ঘন্টা ২৭ মিনিট, এমডি আব্দুল মতিন ৪ ঘন্টা ২৭ মিনিট, মাহাদী হাসান সায়েম ৪ ঘন্টা ৩৪ মিনিট, এমডি মইজ উদ্দিন মেরাজ ৪ ঘন্টা ৩৫ মিনিট, এমডি মাহমুদুল হাসান ৪ ঘন্টা ৩৮ মিনিট, এমডি ফারুক হোসেন ৪ ঘন্টা ৩৯ মিনিট,এমডি নাসির উদ্দিন ৪ ঘন্টা ৪০ মিনিট, শেখ মাহবুব উর রহমান ৪ ঘন্টা ৪৩ মিনিট, এমডি জামিল হোসেন ৪ ঘন্টা ৪৩ মিনিট, এমডি নাদিম মাহমুদ ৪ ঘন্টা ৫০ মিনিট, আতিকুল ইসলাম ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিট, জয়তু দাস ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিট, উজ্জাল চৌধুরী ৪ ঘন্টা ৫৯ মিনিট, রচনা শর্মা (ভারতীয়) ৫ ঘন্টা, শরভ শমাদ্দার ৫ ঘন্টা ২ মিনিট, এমডি গোলাম হাফিজ ৫ ঘন্টা ৫ মিনিট, আল্লামা দিদার ৫ ঘন্টা ৭ মিনিট, হুমায়েদ ইছাহাক মুন ৫ ঘন্টা ৭ মিনিট, জাফর সাদাক ৫ ঘন্টা ৭ মিনিট, এমডি জিহাদ হুসেন ৫ ঘন্টা ১৫ মিনিট, মো নাজমুজ সাকিব শিমুম ৫ ঘন্টা ২৩ মিনিট, হাসান ইমাম ৫ ঘন্টা ২৪ মিনিট, লিপটন সরকার ৫ ঘন্টা ২৬ মিনিট, মুরাদ হোসেন ৫ ঘন্টা ২৬ মিনিট, এমডি আবুল্লাহ আল রোমান ৫ ঘন্টা ৩০ মিনিট, সবুজ কুমার বর্মন ৫ ঘন্টা ৩৭ মিনিট, এস এম শারিয়ার মাহমুদ ৫ ঘন্টা ৫৩ মিনিট, ফরিদ আহমেদ খান ৫ ঘন্টা ৫৬ মিনিট, এমডি মুশা আহমেদ ৫ ঘন্টা ৫৭ মিনিট, আব্দুল ইলা ৬ ঘন্টা ১০ মিনিট, মোহাম্মদ তামিম পারভেজ ৬ ঘন্টা ১০ মিনিট এবং এমডি ফজলে রাব্বি চৌধুরী ৬ ঘন্টা ৩৫ মিনিটের সময় চ্যানেলটি পাড়ি দেন।

এ সাঁতার উদ্ধোধন করেছেন টেকনাফ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নিবার্হী ম্যাজিষ্টেট্র মো এরফানুল হক চৌধুরী।

ভারতীয় সাঁতারু রচনা ভাটিয়া শর্মা বলেন, ভারতের TRICLUB GURGAON-এর একজন সাঁতার ও ট্রায়াথলন কোচ। তিনি এই বছর ফিনল্যান্ডে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সহ চার বারের আয়রনম্যান ৭০, ৩ ফিনিশার। তিনি তার ৫০তম জন্মদিনে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার কাটতে প্রস্তুত হচ্ছেন। কয়েক বছর আগে যখন থেকে তিনি বাংলা চ্যানেল সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন, তখন থেকে তিনি এটি সাঁতার কাটানোর জন্য অপেক্ষা করছেন কিন্তু কোভিড এটি ঘটতে বাধা দেয়। তিনি এখানে এসে রোমাঞ্চিত এবং তাদের সমর্থনের জন্য আয়োজক ও শোরোজ অ্যাডভেঞ্চারদের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তিনি আরও আশা করেন ভবিষ্যতে ভারত থেকে সাঁতারুরা অংশগ্রহণ করবে।

টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ এরফানুল হক চৌধুরী  বলেন, আসলে এই সাঁতার প্রতিযোগিতা প্রশংসার দাবিদার। ইংলিশ চ্যানেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলা চ্যানেল ও বিশ্বের দরবারে পরিচিতি লাভ করছে। প্রতিবছর কোন না কোন বিদেশী এই চ্যানেল পাড়ি দিচ্ছেন। আগামীতে উপজেলা প্রশাসনের সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে এই চ্যানেল সাঁতারে।

বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতারের উপযোগী ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়। সে বার সাঁতারে অংশ নিয়েছিলেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির সিনা ও সালমান সাইদ।

পাঠকের মতামত: