ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপির মিছিলে গুলিতে মিজানের মৃত্যু 

চকরিয়ায় সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রসহ ১৭৮ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

১১ বছর আগে বিএনপির মিছিলে গুলিতে মিজানুর রহমান নামের এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজারের চকরিয়ায় আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি জাফর আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদি, পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, বর্তমান ও সাবেক  ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সহযোগী সংগঠনের ১২৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে নিহত মিজানুর রহমানের পিতা মোহাম্মদ শাহ আলম বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১২৮ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও আরও  ৪০-৫০জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে।
এছাড়া মামলায় উল্লেখ্যযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সুরাজপুর মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম, বিএমচর ইউপি চেয়ারম্যান এসএস জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক চেয়ারম্যান বদিউল আলম, ফাসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালি, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব বুলেট, লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম সেলিম, কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার, কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত ওসমান, সাবেক এমপি জাফর আলমের ভাতিজা জিয়াবুল হক, ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর, সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন, টৈইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন মোহাম্মদ আলমগীর, চকরিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রেজাউল করিম প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিকাল ৩টার দিকে  চকরিয়া পৌরশহরে বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলে যোগ দিতে উপজেলার কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনসাধারণ চকরিয়া পৌরশহরের দিকে রওয়ানা দেয়। উক্ত মিছিল কাকারা ইউনিয়নের পুলেরছড়া এলাকায় পৌঁছলে আসামীগণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাইফেল ও বন্দুক নিয়ে গুলি করতে থাকে।
এসময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা দ্বিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। এক পর্যায়ে ১ নম্বর আসামী হাতে থাকা রাইফেরল দিয়ে মিজানুর রহমানকে পিছনের দিকে গুলি করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় আরো ১৯জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া ২নম্বর আসামীর হাতে থাকা রাইফেল দ্বারা সোনা মিয়া নামের এক বিএনপি কর্মীর পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে একইসময়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হকের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে তারা। এতে তার বাড়ির দরজা জানালার কাঁচ ও দেওয়ালের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ মিজানুর রহমানসহ আহতদের নিয়ে গিয়ে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে মিজানুর রহমান মারা যায়। ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে পুলিশ মিজানুর রহমানের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্ত করে।
অপরদিকে ওইসময় ছেলে হত্যার ঘটনায় থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে বাদী এজাহারে দাবী করেন। মামলার এজাহারনামীয় আসামীগণ তৎকালীন সরকারের প্রভাব দেখিয়ে বাদীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও প্রাণ নাশের হুমকি  দেয়ায় এ মামলা দায়ের করতে বিলস্ব হয় বলে বাদী উল্লেখ করেছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মনজুর  কাদের ভুইয়া বলেন,  ২০১৩ সালে মিজানুর রহমান নামের এক কিশোর হত্যার ঘটনায় তার পিতা বাদী হয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এটি গতকাল শনিবার মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। ##

পাঠকের মতামত: