ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

সুন্দরী স্মার্ট নারীরা ইয়াবা বানিজ্যে

FB_IMG_1489234577821উখিয়া প্রতিনিধি :::

দেখতে সুন্দরী স্মার্ট,হাতে দামী ঘড়ি,ছোখে কালো চমশা,পড়নে ঝলমলে পোশাক। এরকম বেশে প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দু শতাধিক নারী। পর্যটক বেশে এসব নারী প্রতিনিয়ন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোখ ফাঁকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা বানিজ্য। তাদের চালচলন দেখে বুঝার উপায় নেই যে তারা ইয়াবা পাচার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। নামীদামী পর্যটক মনে করে অনেক সময় এসব প্রাইভেট গাড়ী তল্লাসী করতে গিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।
সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ইয়াবা পাচার রোধে আইনশৃংখলা বাহিনীর হার্ডলাইন অবস্থানের কারনে ইয়াবা গড়ফাদার সিন্ডিকেট বিভিন্ন কৌশলে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সিন্ডিকেট সম্প্রতি ঢাকা চট্রগ্রামের হাইফাই সোসাইটির মেয়েদের কন্টাকের মাধ্যমে ইয়াবা পাচারে নিয়োগ করেছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। গত ১০ মে ঢাকায় স্পেশাল এ্যাকশন গ্রুপের হাতে ১ লাখ পিস ইয়াবা নিয়ে আটক কক্সবাজার জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি নেজাম উদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার পর ঢাকার অভিজাত পাড়ার শীতল নামের এক নারীর নাম আলোচনায় চলে এসেছে। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,শীতল নামের সুন্দরী এ নারীটি নেজাম উদ্দিনের ইয়াবা সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। ঐ নারীকে নিয়ে প্রায় সময় প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে ইয়াবা পাচার করতো নেজাম উদ্দিন। মুলত শীতলের মাধ্যমেই ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে ইয়াবা ডেলিভারি দিতো নেজাম উদ্দিন সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট উখিয়া ও টেকনাফ থেকে ইয়াবা কিনে নিয়ে ঢাকায় সরবরাহ করতো। এদিকে গত ১১ মার্চ টেকনাফ নয়াপাড়া এলাকায় বিজিবি সদস্যরা টহলরত অবস্থায় সন্দেহজনক ভাবে কক্সবাজার মুখী একটি সিএনজি তল্লাসী চালিয়ে ভ্যানেটি ব্যাগে কৌশলে লুকিয়ে ১০ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা সহ ইসমত আরা (১৯) নামের এক সুন্দরী মহিলাকে আটক করেছে। আটক ইসমত আরা টেকনাফ নয়াপাড়া এলাকার মোঃ আবদুল্লার স্ত্রী। বিজিবি জানিয়েছে,আটক মহিলা টেকনাফে থেকে ইয়াবা নিয়ে চট্রগ্রাম,ঢাকা সহ বিভিন্ন পাইকারী মাদক ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করতো। শুধু, শীতল বা ইসমত নয়, এরকম প্রায় ২ শতাধিক নারী কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত রয়েছে। ঢাকা চট্রগামের হাইফাই সোসাইটির নারীরা ছাড়াও এলাকার সুন্দরী স্মার্ট মেয়েদের ইয়াবা পাচার কাজে নিয়োজিত করেছে সিন্ডিকেটগুলো। বিশেষ করে পর্যটক বেসে প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে সিন্ডিকেটের হয়ে পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এসব নারীরা। চেকপোষ্ট গুলোতে পর্যটক মনে করে প্রাইভেট গাড়ীগুলো অনেক সময় তল্লাসীর বাইরে রাখা হয়। তাছাড়া প্রাইভেট গাড়ীতে থাকা সুন্দরী নারীদের তল্লাসী চালাতেও অনেক সময় আইনশৃংখলা বাহিনী বিব্রতবোধ করে। যে কারনে সিন্ডিকেট সদস্যরা হাইফাই সোসাইটির নারীদের নিরাপদ মনে করে ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত করেছে। এসব সুন্দরী নারী উখিয়ার বেশকিছু সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে। যাদের মধ্যে রয়েছে বালুখালীর এনামুল হক ও জাহাঙ্গীর নেতৃত্ব বালুখালী সিন্ডিকেট, বিডিআর দোভাসী সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘুমধুম সিন্ডিকেট, ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে জলপাইতলী সিন্ডিকেট, মাহমুদুল হকের নেতৃত্বে হাজীর পাড়া সিন্ডিকেট, নুরুল আলম পুতিয়া, আবদুর রহমান ও আবদুর রহিমের নেতৃত্বে বালুখালী ঘোনারপাড়া সিন্ডিকেট, উত্তম ও ইসলামের নেতৃত্বে ঘিলাতলী সিন্ডিকেট, আতা উল্লা,মির আহামদ ও জালালের নেতৃত্বে সদর সিন্ডিকেট, বাবুলের নেতৃত্বে হিজলিয়া সিন্ডিকেট, আলী আহামদ, জাহাঙ্গীর আলম ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে ভালুকিয়া সিন্ডিকেট, আকতারের নেতৃত্বে সিকদার বিল সিন্ডিকেট, আবদুল্লা,হারুন, রহমান ও লালুর নেতৃত্বে ডিগিলিয়া সিন্ডিকেট অন্যতম । এর বাইরেও সোনারপাড়া, থাইংখালী, জাদিমুরা, হলদিয়া পাতাবাড়ি,কুতুপালং সহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করছে সুন্দরী নারীরা। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উখিয়া টেকনাফের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছাইলাউ মারমা বলেন, শুধু নারী নয়, পুলিশ সমসময় তৎপর রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে। কিন্ত সুনিদ্ধিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা আটক করা কঠিন। এতে নিরপরাধ জনগনের হনরানির আশংকা। তবুও পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পাঠকের মতামত: