ঢাকা,সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

ভালাবাসা দিবসে চকরিয়ায় দুই শতাধিক বাগানে ৫০ লাখ টাকার গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুল বিক্রি

xsddssdsএম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস। বিশেষ এই দিনে ভালবাসাকে আরো সমুদুর করতে প্রেমিক যুগলদের কাছে প্রথম পছন্দ একটি লাল গোলাপ। এ কারনে দেশের প্রত্যন্ত জনপদে ফুলের ব্যাপক চাহিদা এখন তুঙ্গে। এরই জের ধরে ভালবাসা দিবসটিকে ঘিরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফুলের গ্রাম খ্যাত বরইতলী ও হারবাং জনপদে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। শনিবার উপজেলার দুটি ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক ফুলের বাগানে বেশ ভাল বিক্রি হয়েছে ভালবাসার অন্যতম নির্দশন গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুল। সরেজমিন বাগান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার একদিনে দুই শতাধিক বাগান থেকে কমপক্ষে ৫০লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। বেশির ভাগ ফুল সরবরাহ দেওয়া হয়েছে দেশের বৃহত্তম ফুলের বাজার চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ে। এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বরইতলী রাস্তার মাথা এলাকা থেকে গাড়িতে করে পাঠানো হয়েছে এসব ফুল। বাগান মালিকদের দাবি, বিশেষ দিবস গুলোতে এখানের ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি হাজার গোলাপ পাঁচশত টাকা ও গ্যাডিওলাস ফুল বিক্রি হয়েছে সাত শত টাকা দামে।

বরইতলী ফুল বাগান সমিতির নেতা মইনুল ইসলাম বলেন, আগের কয়েক বছর রাজনীতি নানা কারনে বিশেষ দিবস গুলোতে ফুলের তেমন কদর ছিলনা। তবে এবছর উপজেলার দুই শতাধিক বাগান থেকে আশানুরূপ ফুল বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, এখানে আগে অনেকে সখের বসে ফুলের বাগান করলেও এখন বেশির ভাগ চাষী ফুল চাষকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। বর্তমানে দুই শতাধিক বাগান থেকে প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হচ্ছে।

বরইতলী একতা বাজার এলাকার বাগান মালিক মোহাম্মদ হানিফ জানান, এবছর দুই একর জমিতে তিনি গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুলের চাষ করেছেন। এতে তার খরচ পড়েছে সাড়ে ৪লাখ টাকা। ইতোমধ্যে তিন লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। মৌসুম শেষ হতে আরো কয়েকমাস সময় রয়েছে। এরই মধ্যে তিনি আরো ৪লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবেন বলে মনে করেন। এতে তার লাভ হবে প্রায় আড়াই লাখ টাকা।

স্থানীয় অভিজাত রেস্তোরা হারবাং ইনানী রিসোর্টের জিএম রফিকুল আহসান বুলবুল বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনিতে ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে জাতীয় দিবস গুলোতে। তারমধ্যে ২১ফেব্রুয়ারী, পহেলা বৈশাখ, থার্টি ফাষ্ট নাইট অন্যতম। তিনি বলেন, বিশেষ এসব দিনগুলোতে বরইতলী ও হারবাং এলাকার বাগানের নানা জাতের ফুল সরবরাহ দেওয়া হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে। এলাকার চাষীরা ফুল বিক্রি করে এখন প্রায় স্বাবলম্বি হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বলেন, উপজেলার বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রায় ২০০ একর জমিতে গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুলের চাষ হচ্ছে। প্রথমে অনেকে শখের বসে ফুল চাষের উদ্ভাবন শুরু করেন। এখন দেখা দেখিতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বির্স্তীন জমিতে ফুল চাষে ঝুঁেক পড়েছেন চাষীরা।

জানতে চাইলে তামাকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত বেসরকারী সংস্থা উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণার (উবিনীগ) কক্সবাজারের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রফিকুল হক টিটো বলেন, এমনিতে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিবছর বেড়ে চলছে পরিবেশ বিধ্বংসী তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন। সেখানে বরইতলী ও হারবাং জনপদে শুরু হওয়া পরিবেশ বান্ধব ফুলের চাষ নি:সন্দেহে কৃষিব্যবস্থার জন্য একটি নতুন মাইলফলক। তিনি বলেন, তামাকের বদলে বিকল্প চাষ হিসেবে ফুল চাষকে আরো জনপ্রিয় করতে স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে চাষীদের মাঝে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। #

পাঠকের মতামত: