ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

‘বিতর্ক জ্ঞানের ভান্ডারকে করে সম্মৃদ্ধ’

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের এরিয়া কমান্ডার (জিওসি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান বলেছেন, আধুনিক বিশ্বে বিতর্ক এখন একটি শিল্প। বিতর্ক যুক্তিবাদী চেতনার বিকাশ ঘটায়। বিতর্ক জ্ঞানের ভান্ডারকেও সম্মৃদ্ধ করে।

গতকাল শনিবার দুপুরে কক্সবাজার বায়তুশশরফ জব্বারিয়া একাডেমী মাঠে আয়োজিত প্রথম আলো বন্ধুসভার দুইদিন ব্যাপী বিতর্ক উৎসবের ফাইনাল পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

যুক্তিতে মুক্তি-এ শ্লোগানে বিতর্ক উৎসবের আয়োজক প্রথম আলো বন্ধুসভা। সহযোগিতায় ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’।

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিতর্ক চর্চার বিকল্প নেই। বিতর্ক যুক্তির মাধ্যমে সত্যের ভিতকে প্রতিষ্টিত করে।

প্রথম আলো কক্সবাজার আঞ্চলিক অফিস প্রধান আব্দুল কুদ্দুস রানার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ, বায়তুশশরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক এম এম সিরাজুল ইসলাম।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বিতর্ক কোনো অনুষ্টান নয়, এটি চর্চার বিষয়। এ চর্চা হতে হবে মেধা ও মননের। উপস্থাপনা, উচ্চারণ, তত্ব ও নির্ভুল তথ্য পরিবেশন-বিতর্ককে সম্মৃদ্ধ করে।

কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, বিতর্ক চর্চার মাধ্য শিক্ষার্থীরা যুক্তি অনুসন্ধান পরমসহিঞ্চুতা তথা অন্যের মতামতকে সম্মান প্রদর্শনের একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্টার লক্ষে প্রস্তুত হবে। বিতর্ক চর্চার এ উৎসবের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং আরও বৃহৎ পরিসরে আনার চেষ্টা চালানো হবে।

বায়তুশশরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক এম এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রাতিষ্টানিক শিক্ষায় শিক্ষিত লোকের অভাব নাই। কিন্তু স্পষ্ট করে আত্মবিশ্বাসের সাথে নিজের কথাগুলো প্রকাশ করতে পারা মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বিতর্ক নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভুমিকা রাখে।

সকাল ১০টায় বায়তুশশরফ জব্বারিয়া একাডেমীর শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিতর্কের ফাইনাল পর্ব। শুরুতে সনাতনী বিতর্কের উপর সংক্ষিপ্ত কর্মশালা পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক আহবায়ক মিঠুন চক্রবর্তী। এরপর প্রথমে ‘ রোহিঙ্গা সংকটই কক্সবাজারের জন্য বড় হুমকি’-এ বিষয়বস্তুর পক্ষে কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং বিপক্ষে কক্সবাজার মডেল হাইস্কুল অংশ নেয় । বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন, কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্লাহ ও প্রভাষক মিঠুন চক্রবর্তী, কউক নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফজলুল করিম ও ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজের প্রভাষক আপন চন্দ্র দে। চ্যাম্পিয়ন হয় কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যরা হলো, তাসমিয়া বিনতে জহির, তাছবিহু ইছমি ও সারাওয়াত মুনির ছাকিফা।

কলেজ পর্যায়ে ‘ অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণেই কক্সবাজার ইটপাথরের ঘিঞ্জি শহর ‘-এ বিষয়বস্তুর পক্ষে কক্সবাজার সরকারি কলেজ এবং বিপক্ষে কক্সবাজার সিটি কলেজ অংশ নেয়। বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন, কউক সদস্য ( প্রকৌশল) লে. কর্নেল আনোয়ার-উল-ইসলাম, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন, কক্সবাজার বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি শামীম আকতার ও বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুহিউদ্দিন। চ্যাম্পিয়ন হয় কক্সবাজার সরকারি কলেজ । চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্যরা হলো, সেফায়েত এ জান্নাত ইফাত, মেরাজ মুনতাহা ও তাসনিম সুলতানা।

স্কুল পর্যায়ে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হয় চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠের ছাত্র আফতাকিল হোসাইন ফাহিম এবং কলেজ পর্যায়ে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হয়েছে কক্সবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রী তাসনিম সুলতানা।

অনুষ্টান সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার সভাপতি ইব্রাহিম খলিল। প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী-শিক্ষক, অভিভাবক ফাইনাল পর্বের বিতর্ক উৎসব উপভোগ করেন।

শেষে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে সনদপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।

পাঠকের মতামত: