পেকুয়া প্রতিনিধি :::
পেকুয়ায় বিএনপি’র ওয়ার্ড় সভাপতি ও একই ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্যকে লাঞ্চিত করলেন বিক্ষোব্ধ জনতা। সরকারের কর্মসৃজন কর্মসুচিতে শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছিলেন ওই ইউপি সদস্য। এ সময় উত্তোলিত ঘুষের টাকাসহ তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। এ সময় টানা হেচড়া করে লাঞ্চিত করে ঘুষখোর বিএনপির এ নেতাকে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজারে। ওই ইউপি সদস্যের নাম মনজুর আলম। তিনি রাজাখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড়ের সদস্য ও একই ওয়ার্ড় বিএনপি’র সভাপতি। প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মসুচির শ্রমিকরা জানিয়েছেন সরকারের কর্মসুচি কর্মসৃজন প্রকল্পে রাজাখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড়ের সদস্য মনজুর আলম প্রকল্প সভাপতি। বৃহষ্পতিবার শ্রমিকরা কৃষি ব্যাংক পেকুয়া শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করছিলেন। এ সময় ওই ইউপি সদস্য তার প্রকল্পের শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। প্রত্যেকজন শ্রমিকের কাছ থেকে ৩শ টাকা করে আদায় করছিলেন ওই ইউপি সদস্য। এসব টাকা ইউপি সদস্য অনৈতিকভাবে মাসোহারা নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে শ্রমিকদের সাথে তার বাকবিতন্ডা হয়। কিছু শ্রমিক টাকা না দিতে চাইলে ইউপি সদস্য মনজুর আলম তাদের লাঞ্চিত করার চেষ্টা করে। এক প্রকার প্রতিবাদি কয়েকজন শ্রমিককে চড়-তাপ্পর দেয় ইউপি সদস্য। এর সুত্র ধরে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা এক জোট হয়ে পেকুয়া বাজারে তাকে লাঞ্চিত করে। বকশিয়াঘোনা এলাকার সানাউল্লাহ, ছফুরা বেগম ও বামুলার পাড়া এলাকার সাইফুল, লালজান পাড়ার আইচ্ছা মিয়া, রব্বত আলী পাড়ার নুর আয়েশা বেগম, আবু ছালেকের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম, বামুলার পাড়ার নুরুল আলমের স্ত্রী রাশেদা বেগমসহ আরো অনেক শ্রমিকরা জানিয়েছেন, আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এ রমযানে প্রচন্ড গরমের মধ্যে মাটি কাটার কাজ করছি। কিন্তু মেম্বার মনজুর ব্যাংকে এসে আমাদের কাছ থেকে কমিশন নিচ্ছেন। তিন দফায় টাকা নিয়েছে ব্যাংক থেকে তোলার সময়। প্রতিবার টাকা তোলার জনপ্রতি ৬শ, ৫শ এভাবে টাকা নিয়ে নেয়। একইভাবে এবারও টাকা তোলার সময় আমাদের কাছ থেকে ৩-৪শ করে টাকা নিয়েছে। শ্রমিক ছুফুরা বেগম জানায় ব্যাংক থেকে ১৫শ টাকা তুলেছি। মনজুর মেম্বার সব টাকা কেড়ে নিয়ে ফেলে। গতবার টাকা উত্তোলনের সময় ব্যাংক থেকে টাকা কেটে নিয়েছে। কথা ছিল এবার টাকা তোলার সময় মেম্বার টাকা নেবেনা। কিন্তু সেটি ভঙ্গ করে মনজুর মেম্বার এবারও টাকা কেড়ে নেয়। এদিকে কর্মসৃজন কর্মসুচিতে রাজাখালীর তিনটি ওয়ার্ড়ের শ্রমিকদের বিপুল অর্থ ওই ইউপি সদস্যের পকেটে ঢুকেছে। শ্রমিকরা জানায় বিভিন্ন অফিসার ও সোর্সকে দেয়ার কথা বলে শ্রমিকদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় এ ইউপি সদস্য। ওয়ার্ড় বিএনপি’র সভাপতি। কিন্তু সরকারের দারিদ্র বিমোচন ও সামাজিক ঝুঁকি হ্রাসকরন প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমের টাকা নিজের পকেট ভারি করছেন বলে রাজাখালীর সচেতন মহল এমন মন্তব্য করেছেন। এ ব্যাপারে রাজাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম আজাদ জানায় মনজুর মেম্বার বিএনপির ওয়ার্ড় সভাপতি। সে একজন দুর্নীতিবাজ। শ্রমিকরা আমাকেও অনেক নালিশ করেছেন। আসলে সরকারের এ সফল কর্মসুচি জনগনের দৌরগোড়ায় না পৌঁছতে এটি গভীর চক্রান্ত। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সৌভ্রাত দাশ এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
পাঠকের মতামত: