ঢাকা,সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় গাইড বিক্রির কমিশনের টাকা ফেরত দিলেন দু’মাদ্রাসা শিক্ষক

নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া ::gaid book

পেকুয়ায় গাইড বিক্রির কমিশনের টাকা অধ্যক্ষকে ফেরত দিলেন দু’মাদ্রাসা শিক্ষক। নোট বুকের কমিশন নিয়ে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের শাহ রশিদিয়া আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের সাথে কয়েকজন সহকারি শিক্ষকের দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে। এনিয়ে মাদ্রাসায় শিক্ষকদের মধ্যে দেখা চলছিল হট্টগোল। অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমদ নুর নিষেদ্ধ নোট বই শিক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহ দিতে দু’টি প্রকাশনীর সাথে আঁতাত করে। প্রকাশনী অধ্যক্ষকে ম্যানেজ করতে দিয়েছেন  দু’লক্ষ টাকা। এদিকে গত দু’মাস ধরে নোট বই বিক্রির কমিশন নিয়ে মগনামার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ওই আলিম মাদ্রাসায় অচলবস্থা তৈরি হয়েছে। অধ্যক্ষ মাহমদ নুর আল-আরাফা ও আল-বারাকা নামের দু’টি প্রকাশনী থেকে টাকা নিয়েছেন। এসব টাকা তার কিছু অনুগত শিক্ষকদের মাঝে বিলি করেছেন। অপরদিকে কিছু সিনিয়র শিক্ষক কমিশনের টাকা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বাকবিতন্ডা হয়। বঞ্চিত শিক্ষকরা নোট বই প্রকাশনীর টাকা নেওয়ার বিষয়টি ফাঁস করেন। এমনকি নোট বই সরবরাহের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবকরা জানান শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে। তারা একেক জন একক ধরনের বুক লিষ্ট শিক্ষার্থীদের মাঝে দিয়েছেন। অধ্যক্ষের পক্ষ দু’টি প্রকাশনীর গাইড কিনতে শিক্ষার্থীদের চাপ দিচ্ছেন। অপর একটি পক্ষ দু’টি প্রকাশনীর বাইরে গাইড নিতে চাপ প্রয়োগ করছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায় নোট কিনতে আমরা দু’প্রকাশনীর তালিকা পেয়েছি। কয়েকজন শিক্ষক আল-আরাফা গাইড কিনতে স্লিপ দিয়েছেন। আবার কয়েকজন শিক্ষক আল বারাকা প্রকাশনীর গাইড কিনতে চাপ প্রয়োগ করছেন। এখন আমরা চরম বেকায়দায় পড়েছি। স্থানীয়রা জানায় মগনামা শাহ রশিদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এসএমসি কমিটি গঠন নিয়েও লুকোচুরি চলছে। অধ্যক্ষ মাহমদ নুর এসএমসিতে তার অনুগত লোকজনকে গোপনে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছেন। এনিয়েও সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে অধ্যক্ষের বিরোধ প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানান ক্যাটাগরি ওয়ারি শিক্ষানুরাগী পুরুষ ও মহিলা দু’জন তার মনোনীত ব্যক্তিদের নিযুক্ত করার কাজ চালানো হচ্ছে। শিক্ষক প্রতিনিধি ও সাংসদের প্রতিনিধিও তার মত করে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তার অনুগত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম আযম, মোহাম্মদ হোসেন ও আব্দুল হাকিম যেভাবে ইঙ্গিত করছেন অধ্যক্ষ সেভাবে মাদ্রাসায় দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। দু’সিনিয়র শিক্ষক নোট বই বিক্রির কমিশনের টাকা নেয়নি। প্রায় দু’মাস পর এক রাজনৈতিক নেতার মধ্যস্থতায় বিশ হাজার টাকা রাতে একটি বাড়িতে অধ্যক্ষ এ দু’জন শিক্ষককে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা টাকাগুলি গ্রহন করেননি। তারা জানান নোট বই নিষিদ্ধ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এসব নোট বই জব্দ করা হচ্ছে। কিন্তু অধ্যক্ষ এসব অমান্য করে নোট বই প্রতিষ্টানে সরবরাহ করার সুযোগ দিয়েছেন। আমাদের মুখ বন্ধ করতে অধ্যক্ষ কমিশনের বিশ হাজার টাকা দিতে চেয়েছেন। কমিশনের দু’লক্ষ টাকা অধ্যক্ষের পকেটে ঢুকেছে। গত দু’মাস ধরে এ টাকা তার হাতে গচ্ছিত রয়েছে। শিক্ষকদের কয়েকজনকে বিলি করেছেন কিছু টাকা। আমরা এ অপরাধের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে যাব তার বিরুদ্ধে নালিশ করতে।

পাঠকের মতামত: