ঢাকা,বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় এনজিও আজাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

oniyom durnitiপেকুয়া প্রতিনিধি :::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নে ভিজিডি কর্মসূচী সুষ্টু বাস্তবায়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের সাথে চুক্তিবদ্ধ এনজিও সংস্থা এসোসিয়েশন অব জোনাল এ্যাপ্রোস ডেভেলপম্যান্ট (আজাদ) এর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম-দূর্নীতির গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণেই সরকারের একটি জনকল্যাণমূখী উদ্যোগ পেকুয়ায় ভেস্তে যেতে বসেছে। আর মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের কোন ধরনের তদারকী না থাকায় দায়সারাভাবে ওই ভিজিডি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে এনজিও আজাদ।

 জানা গেছে, সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক পেকুয়ায় ভিজিডি কর্মসূচী সুষ্টু বাস্তবায়ন ও ভিজিডির উপকাভোগীদের জীবন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন কক্সবাজারের খুরস্কুলের এনজিও আজাদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিনের ভিজিডি কর্মসূচীর আওতায় থাকা উপকারভোগীদের বিভিন্ন জীবন দক্ষতা কর্মসূচী বাস্তবায়ণ, ভিজিডির উপকার ভোগীদের কাছ থেকে মাসিক কিস্তি উত্তোলনের জন্যই মূলত মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, ঢাকা ওই এনজিওর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।

 অভিযোগ রয়েছে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক নির্দেশিত ম্যানুয়েল অনুসারে পেকুয়া উপজেলায় এনজিও আজাদ ভিজিডির কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেনি। নির্দিষ্ট সময়ে এনজিও আজাদ পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের ভিজিডি উপকারভোগীদের কাছ থেকে কিস্তিও উত্তোলন করতে পারেনি। দুই বছরের জন্য তারা এ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করলেও দৃশ্যত কোন জীবন দক্ষতার প্রশিক্ষন পাননি উপজেলার সাত ইউনিয়নের ভিজিডির উপকারভোগীরা। আগামী ডিসিম্বের মাসে ভিজিডি কর্মসূচীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এছাড়াও ২০১৪-১৫ অর্থ বছরেও এনজিও আজাদ পেকুয়া উপজেলায় অনুরূপভাবে ভিজিডি কর্মসূচী বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিল। তখনকার সময়ে পেকুয়ায় কর্মরত উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ওই এনজিওর কর্মকর্তারা ম্যানেজ করে দায়সারাভাবে কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছেন।

 জানা গেছে, ভিজিডি কর্মসূচীর আওতায় থাকা উপকারভোগীদের মাসে অন্তত ৪টি জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের নিয়ম রয়েছে। এসব কর্মশালার জন্য মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে অর্থ বরাদ্দও রয়েছে।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের ভিজিডির উপকারভোগীদের কাছ থেকে সাদা কাগজে একাধিক স্বাক্ষর নিয়ে কর্মসূচী আয়োজন করেছে মর্মে ভূঁয়া বিল ভাউচার তৈরী করে ওই এনজিও আজাদ অনিয়ম ও দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।

পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন ইউপি সচিব অভিযোগ করেছেন, এনজিও আজাদ পেকুয়া উপজেলায় ভিজিডি কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছ থেকে দায়িত্ব নিলেও এখানে তাদের কোন কার্যালয় নেই। সাত ইউনিয়নের সাতজন মাঠকর্মী নিয়োগ করে কাজ বাস্তবায়নের নিয়ম থাকলেও তাও মানা হয়নি।

 মগনামা ইউনিয়নের কয়েকজন ভিজিডির উপকারভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছ থেকে যথাসময়ে কিস্তিও উত্তোলন করেনি এনজিও আজাদের মাঠকর্মীরা। তাদের কোন ধরনের জীবন দক্ষতার উপর প্রশিক্ষণ ও দেয়নি।

 তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক মাস পূর্বে পেকুয়ার সাত ইউনিনের এনজিও আজাদ ভিজিডির উপকারভোগীদের নিয়ে শুধুমাত্র একটি করে কর্মশালার আয়োজন করেছিল। এ কর্মশালাগুলো বেশ লোকদেখানো ছিল। গত দুই বছরের প্রতিটি ইউনিয়নে মাত্র একটি করে কর্মশালা করে করা হয়েছে।

 এ ব্যাপারে জানার জন্য এনজিও আজাদ এর চেয়ারম্যান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি বর্তমানে তার এক আত্মীয়কে নিয়ে চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, পেকুয়ায় ভিজিডির কর্মসূচীর তাদের উপর অর্পিত কাজ গুলো তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দেখভাল করেন। হয়তো তারা কোন অনিয়ম করলে সেটা তিনি সরেজমিন পেকুয়ায় এসে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে দেখবেন। তবে তিনি এ প্রতিবেদককে এ বিষয়ে কোন রিপোর্ট না করতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমি কক্সবাজার অথবা পেকুয়ায় এসে আপনার সাথে যোগাযোগ করব।

 এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য পেকুয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা চকরিয়ার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত: