ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পিএমখালীতে কিশোরকে অপহরণ করে মুক্তিপন আদায়, নেপথ্যে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা

শাহীন মাহমুদ রাসেল, কক্সবাজার :  কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে জাহেদ হোসেন (১৫) নামের এক কিশোরকে অপহরণ ও জিম্মি করে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও ওই কিশোরকে মারধরও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সে পূর্ব খরুলিয়া ডেইঙ্গাপাড়া এলাকার মনির আহাম্মদের পুত্র।

অপহৃত কিশোর জাহেদ জানায়, গত (৬ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খরুলিয়া নিজ বাড়ীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সে সাড়ে ৫টার দিকে লিংকরোড হতে টমটম (ইজিবাইক) যোগে রওয়ানা দেন। বাংলাবাজারে ঢুকার আগেই ছমুদা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় পিএমখালী ইউনিয়নের বহিষ্কৃত নেতা নুরুল আবছারের ভাই খালেদ মোশারফ ছোটন তাকে কৌশলে তার বাড়ির দিকে নিয়ে যায়।

পরে তাকে পিএমখালী ইউনিয়নের বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আবছার ও তার কয়েকজন সহযোগী নানা কৌশলে ইজিবাইক যোগে ডিকপাড়া গ্রামের কোন এক পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে যায়। এসময় ডিকপাড়া এলাকার সোহেল বাবু ও শফিকসহ ৮ জন একটি দল তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। পরে তার পায়ে রড দিয়ে আঘাত করে। এতে জাহেদের বাম পায়ের গুড়ালির হাড় ভেঙে যায়। পরে তারা জাহেদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে নেয়।

পরবর্তীতে জাহেদের হাত-পা এবং চোখ-মুখ বেঁধে ডিকপাড়াস্থ একটি পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে নিয়ে যায়। ওখানে নিয়ে গিয়ে তাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে তার বাড়িতে ফোন দিতে বলে এবং জাহেদকে কিছু অনৈতিক কথাবার্তা শিখিয়ে ও বলিয়ে সেগুলো ভিডিও রেকর্ডিং করে নুরুল আবছার, খালেদ মোশারফ ছোটন ও তাদের সহযোগীরা।

জাহেদের ভাই সাদ্দাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ০১৮২৯৬৩২৮৩৬ নাম্বার থেকে তার মোবাইলে ফোন করে তাকে জানায় তার ভাইকে জীবিত পেতে হলে এক ঘন্টার মধ্যে ০১৯২৩৩০১৩৯৩ এই বিকাশ নাম্বারে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। তাদের কথামত ভাইকে জীবিত ফেরত পেতে তার ভাই ১০ হাজার টাকা ওই নাম্বারে প্রেরণ করেন। কিছুক্ষণ পর আবার ওই নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে আরোও ৫০ হাজার টাকা পলিথিনে ঢুকিয়ে লাল কাপড় বেঁধে ফেলে দিতে বলে। তাদের কথামতো টাকা জোগাড় করে ফেলে দিলে তার ভাইকে একটি সিএনজিতে উঠিয়ে দেয়। পরে আহত জাহেদ কোনো মতে নিজের বাসায় আসেন এবং পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসা করান। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা।

উল্লেখ্য যে, আসামিরা পূর্বেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনকে অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে কারাভোগ করেছেন। তারা বিভিন্ন সময় একাধিক ব্যক্তিকে চাঁদার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়েছে বলে জানা গেছে।  উপরোক্ত আসামীগণের বিরুদ্ধে সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় ইয়াবা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলাও রয়েছে বলে জানা গেছে।

 এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাজাহান কবির বলেন, অপহরণ এবং ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় মর্মে আমাদের কাছে এজাহার নিয়ে আসছিলো, আমি ঘটনাস্থলে আমার এক অফিসারকে পাঠিয়েছি। তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

পাঠকের মতামত: