ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীর হামলায় আহত- ৩

hamla__1গিয়াস উদ্দিন ভুলু,  টেকনাফ ॥

টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হামলায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিন জন আহত হয়েছে। আহতরা হচ্ছে হ্নীলা মোছনী এলাকার সফি আলমের পুত্র জুহুর আলম (৪০), মুজিবুর রহমান (৩২) ও জকির আহমদের পুত্র আবুল বশর (২৫)। আহতদের টেকনাফ হাসপালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এতে মুজিবুর রহমানের অবস্থা গুরুতর হওয়ার কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক। ২৮ জুলাই শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিন টায় মোছনী ষ্টেশনে এঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান নাফ নদ হয়ে মোচনী এলাকা দিয়ে প্রবেশকালে বিজিবি টহলদল ধাওয়া করে। এসময় ইয়াবাসহ মিয়ানমারের দুই নাগরিককে আটক করতে সক্ষম হলেও অপর কয়েকজন পাচারকারী বেশ কিছু ইয়াবার পুটলা নিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী সুত্রে আরো জানা যায়, ইয়াবাগুলো মোচনী এলাকার জকির আহমদের পুত্র জামাল হোছনের কাছে নিয়ে আসে। কিন্তু ওরা জামালের বাড়ী না চিনে একই এলাকার সফি আলমের পুত্র ও হ্নীলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জুহুর আলমের বাড়ীর জানালা থেকে ইয়াবাগুলো ঢুকিয়ে দিয়ে পাচারকারীরা সটকে পড়ে। পরে খোঁজ খবর নিয়ে ইয়াবার মুল মালিক জামাল উদ্দিন নিশ্চিত হওয়ায় জুহুর আলম তৎক্ষনাৎ জামালকে হস্তান্তর করে। এর দুয়েকদিন পর ইয়াবাগুলো জামাল হোছন কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে বিক্রি করে এলাকায় ফিরে আসে।

এদিকে জুহুর আলম জানায়, জামাল হোছন চট্টগ্রাম থেকে ফিরে এসে ২১ জুলাই মোবাইলে আমাকে দেখা করতে বলে। এরপর বিকালে তার সাথে দেখা করলে ইয়াবা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জামাল হোছনের পিতা জকির আহমদকে জানালে তিনি সুরাহা করে দিবে বলে আশ্বস্থ করেন। কিন্তু জকির আহমদ আজ কাল বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। অবশেষে ২৮ জুলাই মোচনী স্টেশনের জাফরের চায়ের দোকানে সুরাহার জন্য বসলে এক পর্যায়ে আমাদের উপর হামলা করে এবং আগে থেকে উৎপেতে থাকা জামাল হোছনের ভাই আবুল বশর লোহার রড দিয়ে আমার ভাই মুজিবুর রহমানের মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে তিনি মারাত্মক ভাবে আহত হন। তাকে হামলা করায় অপরাপর সহোদররা মারামারিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে।

এঘটনায় উভয় পক্ষের হামলায় জুহুর আলম ও আবুল বশর আহত হলে স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক ভাবে মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের মধ্যে মুজিবুর রহমানের অবস্থা বেগতিক দেখে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করে।

এদিকে এঘটনা নিয়ে মোচনী এলাকায় তোলপাড় চলছে। যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে জহুর আলম বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অপরদিকে জামাল হোছনের পিতা জকির আহমদ জানান, উল্লেখিত ইয়াবার বিষয়ে বিন্দু পরিমান আমার জানা নেই এবং আমার পরিবারের কোন সদস্য ইয়াবা ব্যবসা ও পাচারের সাথে জড়িত নই। যে ঘটনাটি নিয়ে মারামারি হয়েছে তা একটি পারিবারিক সংঘঠিত ঘটনা। ইয়াবা সংক্রান্ত কোন বিষয় এখনো আমার জানা নেই। মুলত এলাকার কিছু কুচক্রীমহল তাদেরকে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সংঘঠিত ঘটনাটি এলাকার চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে মিমংসা করার প্রক্রিয়া চলছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাঈন উদ্দিন খাঁন জানান, এধরনের সংবাদ তিনি এখনো অবগত নন। কেউ অভিযোগ করলে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: