টেকনাফ থানা পুলিশের অভিযানে অবৈধ মানব পাচার কাজে জড়িত দুই দালালসহ ১৭ জন মিয়ানমার নাগরিক আটক। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ৯ মে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই সমস্ত অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদেরকে আটক করে। আটককৃতরা হচ্ছে, সদর ইউনিয়নে হাতিয়ারঘোনা মানব পাচারকারী দালাল খলিল প্রকাশ ইসমাইল (৩৬), মহিলা দালাল বুলবুলি (৩৫), আর আটককৃত ভিকটিমরা হচ্ছে সবাই মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকার নাগরিক। যথাক্রমে- মো: জামাল (২২), মো: জুবাইর (১৯), মোঃ ইলিয়াছ (১৯), মোঃ রফিক (১৯), মোঃ ইদ্রিস (১৯), নুরুল ইসলাম (১৯), মোঃ সেলিম (১৯), মোঃ আয়ুব (২০), ইউনুছ (৪০), রফিক (২০), জোবাইর ইসলাম (১৯), জাহেদ হোসন (১৯) আবদুল হক (৪০), আছিয়া বেগম (১৯), ছমিরা আক্তার (১৯), রফিকা বেগম (২৫) আজিদা বেগম (১৯) তার পাশাপাশি ১৭ মালয়েশিয়াগামী মিয়ানমার নাগরিকদের সাথে দুইটি শিশুও রয়েছে। সুত্রে আরো জানা যায়, মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজে জড়িত থাকার অপরাধে দুই দালালসহ আরো দুই জনকে পলাতক আসামী করে মানব পাচার আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
এই অভিযানে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাঈন উদ্দীন খাঁন। তিনি আরো জানান, টেকনাফ উপজেলার সীমান্তে মানব পাচার এখন শূন্যের কোটায় রয়েছে। অথচ মানব পাচারকারী দালালরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অবৈধ কর্মকান্ডে আবার জড়িত হওয়ার চেষ্টা করছে। মানব পাচারকারী দালালরা যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন আমরা এই সীমান্ত এলাকা থেকে তাদেরকে কিছুতেই মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজ করতে দেব না।
এদিকে বিগত ২ বছর আগে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের সদস্যদের কঠোর অভিযানে সীমান্ত এই জনপদ থেকে অবৈধ ভাবে সাগর পথ দিয়ে মালয়েশিয়া মানব পাচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আটক করা হয়েছিল শত শত চিহ্নিত মানব পাচারকারী দালালদেরকে। বিজিবি-পুলিশ সদস্যদের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছিল বেশ কয়েকজন শীর্ষ মানব পাচারকারী। এই সমস্ত সাড়াঁশি অভিযানে দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকা থেকে মানবপাচার শূণ্য কোটায় চলে আসছিল। অথচ হঠাৎ করে মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজে আবার দালালরা সক্রিয় হওয়ায় জনমনে নানা রকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে গতকাল ৯ মে মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজে জড়িত থাকার অপরাধে যারা আটক হয়েছে তারা মানব পাচার কাজে জড়িত নয় বলে দাবি করেছে একটি মহল। আবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ বলছে, এরা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে বসতি করার জন্য অনুপ্রবেশ করেছে। আবার অনেকেই বলছে, এরা ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং ইয়াবার একটি বড় চালান খালাস করার জন্য টেকনাফ সীমান্ত উপকুলে অনুপ্রবেশ করেছে। এব্যাপারে টেকনাফের বেশ কয়েকজন সচেতন মহলের ব্যক্তিরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে মালয়েশিয়া মানব পাচার বন্ধ হওয়ার পর মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজ শুন্যের কোটায় ছিল। অথচ হঠাৎ করে মানব পাচারের মত ঘৃন্য কাজে আবারও দালালরা সক্রিয় হওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সেই দীর্ঘ দিনের পুরোনো বদনাম আবার মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা। দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, তাই আমাদের দাবি আসলে কি এরা মালয়েশিয়াগামী নাকি অন্য অপরাধের সাথে জড়িত। এই সমস্ত বিষয় গুলো আরো ক্ষতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করি।
পাঠকের মতামত: