প্রেস বিজ্ঞপ্তি ::
বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, পীরে কামেল ও আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সভাপতি বাহারুল উলুম শাহ সূফী আল্লামা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (ম.জি.আ.) বলেছেন, মানব জীবনে উৎকর্ষ সাধনে ত্বরিকতের অনন্য ভূমিকা রয়েছে। দ্বীনে হক প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্যে যুগে যুগে নবী রাসূল প্রেরণ করেন আল্লাহ তায়ালা। সেই নবী ও রাসূলদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের চলতে হবে। ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তির জন্যে কোরআন ও সূন্নাহর পথের কোন বিকল্প নেই। শুক্রবার কক্সবাজার বায়তুশ শরফ প্রাঙ্গনে দু’দিন ব্যাপী মাহফিলে ইছালে ছওয়াবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আল্লামা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন এসব কথা বলেন।
প্রথম দিনের কার্যক্রম সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়। বাদ আছর শুরু হয় মূল আলোচনা। মাহফিলের প্রধান আকর্ষন আল্লামা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন আরও বলেছেন, বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) ছিলেন ইসলামী শরীয়া ও ত্বরিকতের ইমাম। তিনি দূর্দশাগ্রস্ত মুসলমানদেরকে ইসলামী শরীয়া ও ত্বরিকতের সমন্বয়ে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছিলেন। এই কারণে তিনি ‘মুহিউদ্দিন’ তথা দ্বীনের পুনরুজ্জীবনকারী হিসাবে উপাধি লাভ করেছিলেন। হযরত গউছে পাক শেখ মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) ছিলেন ত্বরিকায়ে কাদেরীয়ার ইমাম। এই ত্বরিকা চর্চার মাধ্যমে আল্লাহর বান্দারা তাঁদের জীবনের উৎকর্ষতা সাধন করতে পারেন। সঠিক পথের দিশা পাবে।
পীর সাহেব বায়তুশ শরফ বলেছেন, আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ বিশেষ করে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ প্রতি বছর গউছে পাকের ওফাত দিবসে ফাতেহা-এ ইয়াজ দহুম ইছালে ছওয়াব মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। মাহফিলে জিকির, খতমে বোখারী, আউলিয়া কেরামদের জীবনি আলোচনার মাধ্যমে আল্লাহর বান্দাদের মহান আল্লাহর সাথে সম্পর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। এ নূরানী, রূহানী ও ঈমানী মাহফিলে তাই দলে দলে আল্লাহর বান্দারা অংশ গ্রহণ করে থাকেন। তিনি দু’দিন ব্যাপী ইছালে ছওয়াব মাহফিলের সফলতা কামনা করেন।
বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের সাবেক খতিব প্রবীণ আলেমে দ্বীন আলহাজ¦ মাওলানা তাহেরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইছালে ছওয়াব মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন-ইসলামী আরবী বিশ^বিদ্যালয়ের ভি.সি প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ (আহসান সাইয়েদ), ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক-আলহাজ¦ আবুল হায়াত মুহাম্মদ তারেক, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড আলীয়া (মাস্টার্স) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হক, আল্লামা কাজী নাছির উদ্দিন, মাওলানা মীম ছিদ্দিক আহমদ ফারুকী, মাওলানা মামুনুর রশিদ নূরী, অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুল হক নিজামী, মাওলানা শাহে আলম, মাওলানা রিদওয়ানুল হক নিজামী, মাওলানা কাজী শিহাব উদ্দীন, মাওলানা কাজী নূরুল আলম ফারুকী, মাওলানা ফারুক হোছাইন, মাওলানা ফেরদাউস আহমদ জমিরী প্রমুখ। মাহফিলে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি.এম. রহিমুল্লাহসহ গণমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুকের পরিচালনায় মাহফিলে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক শিক্ষাবিদ এম.এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স এ অঞ্চলের বৃহত্তম ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক, শিক্ষা ও মানবসেবায় অনন্য প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এই কমপ্লেক্সে রয়েছে কক্সবাজারের অন্যতম বৃহত্তম জামে মসজিদ, এতিম শিক্ষা ও পুনর্বাসনকেন্দ্র, হেফজখানা (কুরআন চর্চা কেন্দ্র) কক্সবাজার বায়তুশ শরফ হাসপাতাল। জেলার বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীসহ ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা, এতিম পূনর্বাসন, কুরআন শিক্ষা ও বিভিন্নমূখী মানব কল্যাণমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এতদাঞ্চলের মানুষের কল্যাণে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে বায়তুশ শরফ। এ কারণে এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত।
তিনি বলেন, বায়তুশ শরফের ত্রিরতœ-বায়তুশ শরফের প্রতিষ্ঠাতা শাহ্ সুফি হযরত মাওলানা মীর মোহাম্মদ আখতর (রাহ.), প্রধান রূপকার শাহ্ সুফি হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার (রাহ.), বর্তমান সফল কান্ডারী শাহ সুফি হযরত মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (ম.জি.আ.) এর রূহানীয়তের কারণে বায়তুশ শরফের এ অবস্থান।
দু’দিন ব্যাপী এ মাহফিলে প্রথম দিনে খতমে বোখারী, জিকির মাহফিল ও আলোচনা শেষে দেশ, জাতি ও বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সসহ সকল মুসলমানের কল্যানে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। শনিবার বাদে ফজর আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এ মাহফিলের সমাপ্ত হবে।
পাঠকের মতামত: