ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় গুরুত্ব পয়েন্টে সিসি ক্যামরা বসানোর সিদ্ধান্ত এক বছরও বাস্তবায়ন হয়নি

মিজবাউল হক, চকরিয়া :
চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গার বিভিন্ন গুরুত্ব পয়েন্টে সিসি ক্যামরা বসানোর সিন্দ্বান্ত এক বছরও বাস্তবায়ন হয়নি। বিশেষ করে রমজান মাসে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সাধারণ ক্রেতারা নির্ভয়ে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও চিরিঙ্গা ব্যবসায়ি সমিতি এ উদ্যোগ নিয়েছিলো। ফলে ঝুঁকির মধ্যে ঈদের কেনাকাটা করতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
আগামী ২৫ জুন মুসালমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এ ঈদুল ফিতরকে ঘিরে চলে নানা আয়োজন। আনন্দ ও উৎসবেরও কমতি নেই। ইতোমধ্যে ঈদ উৎসবের জন্য বিভিন্ন শফিংমল ও মার্কেট গুলোতে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা। ধীরে ধীরে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। আর ক’দিন পর উপচে ভীড় হবে মার্কেট গুলোতে। কিন্তু অর্ধশতাধিক মার্কেটে ক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য কোন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি মালিক পক্ষ বা ব্যবসায়ি সমিতি। কয়েকটি মার্কেটে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী থাকলেও ক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নয়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, একশ্রেণির বখাটে যুবক মার্কেট গুলোর সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েদের ইভটিজিং করে। নানাভাবে শব্দ করে। আত্মীয়স্বজনদের সামনেও ইভটিজিং করে বখাটে যুবকরা। প্রায় সময় বিব্রতবোধে পড়তে হয় স্বজনদের। নিরুপায় হয়ে কেনাকাটা করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অহররহ ঘটছে ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা। এব্যাপারে প্রশসানের কোন উদ্যোগ বা তৎপরতা নেই। এদিকে সবচেয়ে বড় অপরাধ হচ্ছে জিম্মী করে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া। দুর দুরান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের লক্ষ করে কিছু যুবক। কিছুক্ষণ পর ওই ক্রেতাকে ধরে মার্কেটের উপর বা নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছ থেকে টাকা পাবে বলে মোবাইল ও মূলবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। এভাবে প্রতিদিন ঘটছে চিরিঙ্গা শহরে। চকরিয়া মার্কেট গুলোতে ক্রেতাদের কোন ধরণের নিরাপত্তা থাকায় চরম উদ্ভিগ্ন হয়ে পড়েছে সচেতনমহল।
একাধিক ক্রেতাদের অভিযোগ, মার্কেট থেকে কেনাকাটার করার পর হরহামেশা ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে ক্রেতারা। প্রতিবাদ করলে উল্টো নানা অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দেন। কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না। ব্যবসায়িদের বাড়তি নিরাপত্তাকর্মী চোখে পড়ছে না। তবে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন থেকে ১০জন আনসার ও পৌরসভা থেকে প্রায় ২০জন নিরাপত্তাকর্মী মাঠে কাজ করছেন। তারা দল বেধে হেটে হেটে নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছেন। বিশাল এলাকায় অল্প সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে সন্তোষ নয় সাধারণ ক্রেতারা। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বেশি সংখ্যক পুলিশ ও সিসি ক্যামরা বসানোর জোর দাবী জানান।
চিরিঙ্গা ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি রেজাউল হক সওদাগর জানান, গত বছর চিরিঙ্গা শহরে ক্লোজসার্কিট ক্যামরা বসানোর সিন্দ্বান্ত নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু অনেক ব্যবসায়িদের অসহযোগিতার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি আরও বলেন, চিরিঙ্গাতে একহাজার ব্যবসায়ি থাকলেও মুলত সমিতির অর্ন্তভূক্ত সদস্য তিন’শ জন। এতো সদস্য থাকতে কেন তিন’শ সদস্য এতোবড় খরচের দায়িত্ব নেবে ? নতুন ব্যবসায়িরা সহযোগিতা করলে সিসি ক্যামরা বসানো যেতো। ফলে কিছুটা হলেও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা যেতো। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রশাসনের সাথে বৈঠক করা হবে। বৈঠকের পর কিভাবে ক্রেতাদের আরও বেশি নিরাপত্তা দেওয়া যায়, সেবিষয়ে আলোচনা হবে বলে তিনি জানান।
চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ ক্রেতারা নির্ভিগ্নে কেনাকাটা করতে সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হবে। কয়েক দিনের মধ্যে বাড়তি পুলিশ দেওয়া হবে। পাশাপাশি নারী পুরুষ দেওয়া হবে। মাকের্টের ভেতরে সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে বলে তিনি জানান।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাহেদুল ইসলাম জানান, সাধারণ ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য পৌরশহর থেকে অবৈধ হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। আরও অভিযান চলবে। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ব্যবসায়িদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। সিসি ক্যামরা বসানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। ব্যবসায়িদের অসযোগিতার কারণে তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: