নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া ::
কক্সবাজার জেলার শীর্ষস্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চকরিয়া উপজেলাস্থ খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে চলছে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি। অভিযোগ রয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির তার অদৃশ্য খুঁটির জোরে চালিয়ে যাচ্ছে যথেচ্ছা চারিত কর্মকান্ড। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল বর্তমানে অসহায়ত্বের শিকার।
অভিযোগে জানা যায় বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মতে, সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন বিদ্যালয়ের বিগত ২০১৫-১৬ ইং অর্থ বছর এবং চলতি ২০১৬-১৭ ইং অর্থ বছরের হিসাব দাখিলের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বেশ কয়েকবার তাগিদ দেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমিটির নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মনগড়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৭০০ জন। প্রতিজনের ভর্তি ফি ১০০০ টাকা, মাসিক ফি ২শ টাকা, পরিক্ষার ফি ২শ টাকা, এস.এস.সি’র প্রশংসাপত্র বিক্রি ফি বাবদ ৩শ টাকা হারে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে পিইসি, জেএসসি, এসএসসি মার্কশীট ও সার্টিফিকেট বিক্রির ফি।
বিদ্যালয়ের উপার্জিত অর্থের খাত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় শুধু শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ভর্তি ফি ১,৭০০,০০০ টাকা, মাসিক ফি ২,৩৮০,০০০ টাকা (জানুয়ারী থেকে জুলাই পর্যন্ত), দুটি পরীক্ষার ফি ও এসএসসি’র প্রশংসাপত্র বিক্রি বাবত ৬৮০,০০০ ও ৭১,১০০ টাকা (পিইসি ও জেএসসি ব্যতীত) যার মোট হিসেব দাঁড়ায় ৪,৮৩১,১০০ টাকা। এখানে পিইসি, জেএসসি, এসএসসি’র মার্কশীট ও সার্টিফিকেট বিক্রির ফি ধরা হয়নি। এই মোটা অংকের অর্থ আয় হওয়া সত্ত্বেও তিনি উপার্জিত অর্থ ব্যাংক লেনদেন না করে ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। অপর অভিযোগে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে এনটিআরসিএ কতৃক সুপারিশকৃত গত ১৫/১১/২০১৬ ইং তারিখে ৫ জন শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরধারী এবং ইংরেজীতে ২ জনের মধ্যে ১ম স্থান অর্জনকারী ওবাইদুল হক নামক শিক্ষক। কিন্তু ঘুষ না দেওয়ায় গত ১৫ মে ২০১৭ ইং তারিখে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তার এমপিও ভূক্তির আবেদন অগ্রায়ন করেননি বলে অভিযোগে জানা যায়।
কিন্তু এনটিআরসিএ ও মাউশি’র বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নম্বরধারী নিয়োগ ও এমপিও ভূক্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারযোগ্য যা ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ইং তারিখের এনটিআরসিএ’র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে। ওবাইদুল হক এর নিয়োগ ও যোগদান অন্য ৪ জন শিক্ষকের পূর্বেই সম্পাদিত হয় এবং সে অনুসারে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় তার নাম অন্যদের আগে তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া নিয়োগদান ও যোগদান সংক্রান্ত দুটি রেজ্যুলেশনে ওবাইদুল হক এর নাম প্রথমে উল্লেখিত।
এছাড়াও বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক নুরুল আফছার অনেক আগে মৃত্যুবরণ করা সত্ত্বেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনাকে অমান্য করে এমপিও’র কপি উনার নাম কর্তন না করে তিনি পদ শূন্য নেই অজুহাত দেন। তাছাডা সাবেক শিক্ষক নুরুল আফছারের নাম কর্তন না হওয়ার কারণে কারো এম,পি,ও স্থগিত রাখতে হলে উনার স্থলে যিনি স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নিয়ম অনুসারে উনার এম,পি,ও স্থগিত রাখা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে উক্ত শিক্ষকের আবেদন অগ্রায়ন করে মে মাসের এম,পি,ও তে অন্তভূক্ত করেন।এ বিষয়ে ভূক্তভোগী শিক্ষক ওবাইদুল হক বলেন ‘বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এবং এনটিআরসিএ’র নীতিমালাকে অমান্য করে স্বেচ্ছাচারমূলকভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমার জীবনকে অনিশ্চয়তায় পর্যবসিত করেছেন।
এনটিআরসিএ এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৮ টি বিদ্যালয়ে (জাতীয়, বিভাগীয় ও উপজেলা মেধা তালিকায় যথাক্রমে-১টি, ৪টি ও ৩টি) নির্বাচিত হয়ে আমার নিজ উপজেলাস্থ কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে সর্বোচ্চ নম্বরধারী হিসেবে যোগদান করি। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমার এমপিও’র আবেদন অগ্রায়ন না করে মাত্র মাসিক ৮৫০ টাকা প্রাতিষ্ঠানিক বেতন নির্ধারণ করে আমার জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছেন। এমনকি উক্ত ৮৫০ টাকা বেতনও তিনি ৪ মাস প্রদান করে অদ্যাবধি বাকি বেতন প্রদান করেননি।’ এ বিষয়ে আমি যথাযথ কতৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও হস্তক্ষেপ কামনা করি।’ তাছাডা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বিগত ৪ মাসের প্রাতিষ্ঠানিক বেতন-ভাতা না পাওয়ায় ও ২০১৩ বিদ্যালয়ের ভাল ফলাফলের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত এক লক্ষ টাকা প্রণোদনামূলক ভাতা বন্টন বন্টন না হওয়ায় অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর উত্তীর্ণ হবে ফলে নতুন কমিটি নির্বাচনের প্রক্রিয়ার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো এ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। এদিকে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবী করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির।
এব্যপারে পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন বলেন, প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির নিজেই সমস্যা। তিনি নির্বাচন আয়োজনের কথা বললে বেঁকে বসেন। ১২ জুনের সভায় নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর জন্য রেজ্যুলেশন পাশ হলেও এখনো কোনপ্রকার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের। তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমি নিজেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে অবহিত করেছি। কমিটির কিছু সদস্যের সঙ্গে আঁতাত করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্বাচন দিচ্ছেননা বলে ধারনা করছি। কমিটির সভাপতি বিদ্যালয়ের হিসাব নিরীক্ষা, সঠিক কার্যাবলী পরিদর্শন ও তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রকাশ:
২০১৭-০৮-১২ ১৫:৫০:৪৭
আপডেট:২০১৭-০৮-১৬ ১৩:২৯:৩৯
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- মাতামুহুরী নদীতে ১২ বসতঘর, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণে জেলা প্রশাসক
- নাইক্ষংছড়িতে টানা ৩দিন বৃষ্টির পানিতে ১৪ গ্রাম প্লাবিত
- চকরিয়ায় দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত, ভয়াবহ বন্যার আশঙ্খা
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
পাঠকের মতামত: