সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁহ :: কোন রোগ নই, ধানি জমিতে বিষাক্ত বিষ (আগাছারোধ) প্রয়োগ করে নেয়া হয়েছে চরম প্রতিশোধ। গত শনিবার রাতের কোন এক সময়ে এমনতর জঘন্যতম ঘটনাটি ঘটেছে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ি গ্রামের রাবারড্যাম সংলগ্ন এলাকায়।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগি বর্ণিত ইউনিয়নের রাবারড্যাম এলাকার শাহ আলমের পুত্র বর্গা চাষী নাছির উদ্দীন জানায়, চলতি মৌসুমে একই এলাকার মোহাম্মদ কালুর পুত্র অবঃ সার্জেন্ট রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় এক সনের জন্য রাবার ড্যামের পাশে ১৫০ কড়া জমি লাগিয়ত নিই। জমিতে প্রায় ১৬ হাজার টাকা খরচ করে ধান চাষ করা হয়। অনেক টাকা খরচাপাতি করায় ফলনও ভাল হয়।
সম্প্রতি সময়ে ধানের শীষ বের হলে ঐ জমির প্রতিপক্ষের লোকজন রাতের অন্ধকারে ঘাস মারার বিষ ছিটিয়ে প্রায় দেড়শ কড়া জমির ধান নষ্ট করে জালিয়ে দেয়। জমির প্রায় অংশে বিষাক্ত কীঠনাশক প্রয়োগ করায় সমস্থ ধান পুড়ে গেছে। একই এলাকার আবদুল গনির পুত্র আলা উদ্দীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে চাষী নাছির আরো জানায়, জমিতে চাষ করার সময় আলা উদ্দীন তাকে চাষ করতে নিষেধ করে। একপর্যায়ে হুমকি দিয়ে বলে চাষ করতে পারবি কিন্তুু ধান কাটতে পারবি না। কেন জানতে চাইলে সে চুপ করে থাকে। তার এমনতর আচরনের পর নাছির রাতদিন ধান পাহারা দিয়ে আসছিল।
নাছিরের অভিযোগ, আলা উদ্দীনের নেতৃত্বে বেশ ক’জন মিলে ধানে বিষাক্ত কীঠনাশক প্রয়োগ করে সমস্থ ধান পুড়িয়ে ফেলেছে। তারা আমার পরিবারের রিজিক নষ্ট করে আমাকে পথে বসিয়েছে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। জমির মালিক অবঃ সার্জেন্ট রফিক জানায়, মুলত নাছিরকে এক সনের জন্য জমিটি লাগিয়ত করা হয়। জমির বিরোধ থাকতে পারে তবে এমন জঘন্য কাজ করায় তিনি নিন্দা জানিয়ে বলেন, মৃত সিরাজ মাষ্টারের পরিবারের সাথে জমির বিরোধ রয়েছে। হয়ত তারাই এলাকার মাদকসেবি আলা উদ্দীন ও জাহেদকে দিয়ে রাতের অন্ধকারে ঘাস মারার বিষ দিয়ে জমির সমস্থ ধান নষ্ট করে প্রতিশোধ নেয়া হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
এ ঘটনায় তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও কথা জানান। সিরাজ মাষ্টার গং এমনতর জঘন্য কাজ করতে একই এলাকার আলা উদ্দীন ও জাহেদকে ব্যবহার করছে। তারা দুজন এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা ও নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা ফুসে উঠেছে। স্থানীয়রা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্থক্ষেপ কামনা করেন। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল হক বলেন, জমির মালিকের পক্ষ থেকে বিষয়টি অবগত হয়েছি।
খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। খুটাখালীর দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোছাইন বলেন, ঘাস মারার বিষ দিয়ে ধান নষ্ট করার বিষয়টি আমাকে ঐ চাষী জানানোর পর সরজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। কোন রোগ বা পোকার আক্রমন নই, আগাছা রোধের কীঠনাশক দিয়ে ধান জালিয়ে দেয়া হয়েছে। বিষের পরিমান বেশি হওয়ায় প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না বলে জানান তিনি। জানতে চাইলে খুটাখালীর ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি ভুক্তভোগিদের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: