ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে হিটস্ট্রোকে নিহত-৩

nihotনিউজ ডেস্ক  ::

রেকর্ড একটানা তাপপ্রবাহ! এক মাসের বেশি সময় ধরে বয়ে যাচ্ছে। গত সাত বছরে এমন টানা তাপপ্রবাহ বয়ে যায়নি। প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জেলাবাসীর। আগুন ঝরা তাপমাত্রায় রীতিমত তেঁতে উঠেছে কক্সবাজার। সূর্যের তীব্র দাপদাহে নগরবাসীর প্রাণ এখন ওষ্ঠাগত। দিনভর সূর্যের তীর্যক রশ্মী আর লু হাওয়া, রাতে গুমট গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে সবার। যেন জৈষ্ঠ্যের খররৌদ্রে পুড়ে যাচ্ছে কক্সবাজার।

জৈষ্ঠ্যের তীব্র তাপদাহে কক্সবাজারের  হিটস্ট্রোকে মহিলাসহ তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

জেলা সদরের ইসলামাবাদে ভ্যাপসা গরমে হিটস্ট্রোকে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে ।২৩ মে সকালে পশ্চিম টেকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মনোজা বেগম (৪৮) মৃত ছুরত আলমের স্ত্রী। তীব্র গরমে ডায়রিয়া আক্রান্ত এ মহিলার অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ঈদগাঁও আনার পথে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মারা যান।

তার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে তার প্রতিবেশী ও ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজের অধ্যাপক নাজেমুল ইসলাম হোছাইনী জানান, একই দিন হিটস্ট্রোকে নিহত এ মহিলাকে জানাযার পর স্থানীয় দরগাহ মুরা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে, রামুতে অতিরিক্ত গরমে এক বৃদ্ধা মহিলা মৃত্যুবরন করেছেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে রামু বাইপাস মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, মঙ্গলবার লামা মেয়ের শ্বশুর বাড়ি থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি চাকঢালা নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য গাড়ীর অপেক্ষায় ছিলেন। অপেক্ষারত অবস্থায় প্রচন্ড তাপে তিনি প্রথমে বুমি এবং পরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাকে বাইপাসে উপস্থিত জনতা দ্রুত রামু হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকান কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

অন্যদিকে, মহেশখালীতে হিটস্ট্রোকে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গরমের তীব্রতায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এক নারীসহ আরও দুজন। মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ও কালারমারছড়া ইউনিয়নে পৃথক স্থানে ঘটনা দুটি ঘটে।হিটস্ট্রোকে মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম ব্রজেন্দ্র সুশীল (৬০)। তিনি হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনা গ্রামের মৃত প্রাণ হরি শীলের ছেলে।

এলাকাবাসী জানায়, হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনা গ্রামের ব্রজেন্দ্র সুশীল (৬০) সোমবার সকাল ১০টায় পান বরজে কাজ করতে যান। বেলা ১২টার দিকে তীব্র গরমে ছটফট করতে করতে তিনি বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ ঢলে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিথর হয়ে যান।

গরমের তীব্রতায় বেড়েছে শিশুদের ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার পার্দুভাব। শহরের হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে র্ভতি হয়েছে আসন শয্যার অতিরিক্ত রোগী। গতকাল সরেজমিনে সদর হাসপাতালের শিশু ওর্য়াড ও ডায়রিয়া ওর্য়াড পরির্দশন করে দেখা গেছে শিশু ওয়ার্ডে ৪০ টি আসনের বীপরিতে রোগী রয়েছে প্রায় ৮০ জন রোগী।  যার দুই তৃতীয়াংশই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

শুধু শিশুরাই নয় গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে র্ভতি হচ্ছে বড়রাও। শিশুদের পাশাপাশি ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে বড়রাও।

হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাঃ আখতারুল ইসলাম বলেন “শুধু শিশুরাই নয় মাত্রতিরিক্ত গরমে কলেরা, ডায়রিয়া ,শ্বাসকস্ট ,পানিবাহিত বিধিন্ন রোগ ও বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা নিয়ে র্ভতি হচ্ছে মেডিসিন ওয়ার্ডে। গরমের সাথে সাথে যেন বাড়ছে রোগীর সংখ্যাও।” সদর হাসপাতাল ছাড়া শহরের অন্যান্য হাসপাতালের খোঁজ নিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে।

জেলার আবহাওয়াবিদরাও কোন ধরনের সুখবর এখনই দিতে পারেনি। মুলত সর্বোচ্চ ও সর্বোনিম্ন  তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে গরমটা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে কক্সবাজারে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি পড়ছে। গরমের এ তীব্রতা আরো কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস সূত্র।

পাঠকের মতামত: