স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার :::
কক্সবাজার রক্ষায় শহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি অবশেষে পূরণ হতে যাচ্ছে। শহর রক্ষায় বাঁধের দাবি থাকলেও তবে তা হচ্ছে না। বাঁধের পরিবর্তে হবে সড়ক। এই সড়কই রক্ষা করবে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার শহরকে। সড়ক নির্মাণে এরই মধ্যে কর্মপ্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। জেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, কক্সবাজার শহররক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু পর্যটন করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের আপত্তির কারণে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি আর বাস্তবায়ন করা যায়নি। তাই শহররক্ষা বাঁধের পরিবর্তে শহরের কলাতলী থেকে সমিতিপাড়া পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে বিকল্প মেরিন ড্রাইভ রোড বা শহররক্ষা সড়ক। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, সমুদ্রতীরে ৮/১০ ফুট উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা হলে সৈকতের সৌন্দর্য্য নষ্ট হবে। এতে সৈকতের প্রতি আর্কষণ হারাবে পর্যটকরা। তাছাড়া পৃথিবীর কোথাও সমুদ্রতীরে এমন বাঁধের নজির নাই। এ কারণে শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। এর পরিবর্তে সৈকত থেকে অন্তত ৩ ফুট উঁচু করে কলাতলী থেকে সমিতিপাড়া পর্যন্ত শহররক্ষা সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবনা হাতে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কয়েক দফা সভাও হয়েছে। বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে গৃহীত প্রস্তাবনাটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি দ্রুত আলোর মুখ দেখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সূত্র মতে, ২০০৮ সালে ‘শহররক্ষা বাঁধ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পাউবো। শহরের কলাতলী বেইলি হ্যাচারি থেকে সাগরের পাড় বরাবর পুরনো মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে সুগন্ধা পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট, ডায়াবেটিকস হাসপাতাল পয়েন্ট হয়ে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেষ্টনী করে মহেশখালী চ্যানেলের পাড়ঘেঁষে নুনিয়ারছড়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে এ প্রকল্প পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ২০১১ সালের ৩রা এপ্রিল কক্সবাজার সফরকালে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।
এদিকে কক্সবাজার পর্যটন জোন বাঁচাতে কলাতলী থেকে সমিতিপাড়া পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের একটি প্রস্তাবনা হাতে নেয়া হয়েছে। এরই মাধ্যমে কক্সবাজারে কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘কক্সবাজারকে উপস্থাপন করে সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। অথচ কক্সবাজার শহরকে বাঁচাতে শহররক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করা হচ্ছে না। এতে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে কক্সবাজারের কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ও পর্যটন জোন।’
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, সৈকতের ভাঙন রোধে পাউবো’র পক্ষ থেকে শহররক্ষা বাঁধ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পর্যটন করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের আপত্তির কারণে এবং পর্যটক আকর্ষণের কথা ভেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
পাঠকের মতামত: