এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিরাপত্তায় নিয়োজিত দু’পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারে জন্য ১২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন হাসপাতালেরই ১০১ কর্মচারী। ২৬ জুন রবিবার বেলা ১২টায় ৫টি দাবী সম্বলিত লিখিত একটি অভিযোগ জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় বরাবর দেয়া হয়েছে। দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা না হলে কর্মচারীরা অনিদৃষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণাও দিয়েছেন। হাসপাতালে একজন কর্মচারীকে মারধর, অন্যায় ভাবে আটক করার ঘটনায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে রবিবার রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে সবঝোতা বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে নায়েক রেজাইল করিম ও কনষ্টেবল প্রকাশ দাশ। তারা হাসপাতালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকার কথা থাকলেও কর্মচারী অসহযোগীতাসহ অন্যরকম ধান্ধায় সার্বক্ষনিক ব্যস্থ থাকে তারা।
আরো জানা গেছে, গতকাল হাসপাতালের পোষাক পরে আইডিতে দায়িত্ব পালন করছিল তছলিম হোছেন নামের এক কর্মচারী। কয়েকজন বহিরাগত অহেতুক তাকে হাসপাতালের ভেতর থেকে বাহিরে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালায়। ঘটনার খবর পেয়ে কর্তব্যরত দুই পুলিশ সদস্য নায়েক রেজাউল করিম ও কনষ্টেবল প্রকাশ দাশ তাকে উদ্ধার করলেও হামলাকারীদের আটক করেনি। উল্টো পুলিশ সদস্যরা এসময় তছলিমকে ১২৭নং রুমে নিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে নির্যাতন ও আটক করে রাখে। পরে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে কক্সবাজার থানায় নিয়ে যান। এঘটনা হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়লে কর্মচারীদের মাঝে বিরাজ করে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা।
এঘটনার সুষ্টু তদন্ত ও বিচার দাবী করে হাসপাতালের ১১৫ জন কর্মচারীর মধ্যে ১০১জন কর্মচারীর গণস্বাক্ষরে ৫টি দাবী সম্বলিত একটি আবেদন ২৬ জুন দুপুর ১২টায় জেলা সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক বরাবর দেয়া হয়।
দাবীর মধ্যে ,কর্মচারী তছলিমের উপর নির্যাতনের সুবিচার, ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার, নতুন জন সৎ ও যোগ্য পুলিশ সদস্য পদায়ন, আগত রোগীদের মালামাল নিজ দায়িত্বে রাখার জন্য সর্তকীকরণ বিজ্ঞপ্তি টাঙ্গানো ও হাসপাতালে কর্মরত সকল কর্মচারীদের পরিচয়পত্র প্রদান করা। ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা না হলে হাসপাতালের সকল কর্মচারী অনিদৃষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন।
লিখিত এই আবেদনটি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, আরএমও, আরআই পুলিশ লাইনস, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডাঃ পুচনু জানান, হাসপাতাল কর্মচারীদের লিখিত একটি আবেদন পেয়েছি। এব্যাপারে যথাযত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, রবিবার রাত ১০টার দিকে জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও হাসপাতাল কর্মচারীদের মধ্যে একটি সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ওই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারে সিদ্ধান্ত হওয়ায় কর্মচারীরা তাদের কর্মবিরতির ঘোষণা থেকে সরে এসেছে বলে হাসপাতালের একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে
পাঠকের মতামত: