ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে দু’শিক্ষককে সাময়িক বহি:স্কার, তদন্ত কমিটি গঠিত

bohiskarফারুক আহমদ, উখিয়া॥

শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন কোন দল, গ্রুপিং, শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অবহেলা, আন্দোলন, শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রকাশ্য হাতাহাতি এবং মারধরের ঘটনায় কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে নানা অসন্তোষ এবং চরম উত্তেজনার কর পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. আবুল কাশেম, ঘটনার সত্যতা শিকার করে সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতি নিরসন করতে প্রভাষক আহসান উল্লাহ জাহিদ ও প্রভাষক খোরশেদ আলমকে সাময়িক বহি:স্কার করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। আগামী ১ সপ্তাহের জন্য ইউনিভার্সিটির ইংরেজী বিভাগের ক্লাসে পাঠদান ও কার্যক্রম আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, গত ১ মার্চ কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে চেয়াম্যারম্যান হিসেবে যোগ দেন আহসান উল্লাহ জাহিদ। যোগ দেয়ার দু’দিনের মাথায় ৩ মার্চ বিভাগের আলোচনা সভার সামান্য বিষয় নিয়ে আহসান উল্লাহ জাহিদ ও একই বিভাগে সিনিয়র প্রভাষক খোরশেদুল আলমের মধ্যে মতপার্থক্য হয়। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে খোরশেদুল আলমকে মারধর করেন সদ্য যোগ দেয়া চেয়াম্যারম্যান আহসান উল্লাহ জাহিদ। এই ঘটনায় খোরশেদুল আলম কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন।

ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত উখিয়ার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে জানান, এমনিতে সেমিষ্টার বাবদ অতিরিক্ত ফি: আদায় করা হয়। কিন্তু কোনদিন নিয়মিত ক্লাসে শিক্ষক আসে না। শিক্ষকরা দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকে। অনেক শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যর্থ করে বলেন, স্কুল থেকে শিক্ষক ধার করে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণী কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান খুবই দু:খজনক। বলতে গেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখা-পড়ার মান খুবই নাজুক।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে খোরশেদুল আলম বলেন, ‘বিভাগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা সভায় সদ্য যোগ দেয়া চেয়ারম্যান অন্যান্য শিক্ষকদের হেয় আচরণ করেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন ‘রাজার সামনে প্রজা যেভাবে বসে সে ভাবে বসেন’। এতে প্রতিবাদ করায় আমাকে চেয়ার নিয়ে মারতে উদ্যত হয়ে আমাকে কিল ঘুষি মারেন। তবে ঘটনার খবর শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এসে আমাকে অন্য কক্ষে নিয়ে গিয়ে রক্ষা করেন।

এদিকে উক্ত ঘটনায় জড়িত দু’শিক্ষক প্রভাষক আহাসান উল্লাহ জাহিদ ও প্রভাষক খোরশেদ আলম কে সাময়িক বহি:স্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। সেই থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ নানা ভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বাধ্য হয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শুক্রবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা ইংরেজি বিভাগের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। একই সাথে তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, অভিযুক্ত শিক্ষক আহসান উল্লাহ জাহিদকে বহিস্কারসহ শাস্তি দাবি এবং খোরশেদুল আলমকে পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়ে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইংরেজি বিভাগ এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সংঘটিত ঘটনা তদন্তের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিম করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. আবুল কাশেম জানান, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটি রির্পোট প্রদান করলে উক্ত রির্পোটের ভিত্তিতে দোষি শিক্ষককের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: