ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

উখিয়ায় সামাজিক বনায়ন ধ্বংসের নেপথ্যে ২৫টি অবৈধ করাতকল

VVওমর ফারুক ইমরান, উখিয়া ::

বনভূমি সংরক্ষণ ও বন সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করলেও নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বনভূমি জবর দখল পূর্বক, অবৈধ স্থাপনা নিমার্ণসহ নানামুখি অপতৎপরতা কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিশেষ করে অবৈধ করাতকল বাণিজ্য বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগ আন্তরিক না হওয়ায় সামাজিক বনায়ন প্রকল্প আলোর মুখ দেখছে না। উখিয়ার ৫টি ইউনিয়নে অবৈধ ভাবে প্রতিষ্ঠিত ২৫টি করাত কলে সামাজিক বনায়ন ও বন সম্পদ চিরাই করে পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন হাটবাজারে। নিত্যপণ্যের মত খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ চোরাই কাঠ সামগ্রী। এঘটনা নিয়ে স্থানীয়রা কক্সবাজার বনবিভাগীয় কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ উখিয়া বন রেঞ্জের আওতায়ধীন উখিয়ার ঘাট বনরেঞ্জের আওতাধীন উখিয়ার ঘাট বালুখালী বনবিটে ২০০৫-০৬, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থ বছরে সৃজিত বনবাগানের প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের সামাজিক বনায়নের মূল্যবান কাঠ সামগ্রী কর্তন পূর্বক চেরাই করে টেকনাফে পাচার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, বনরক্ষা পাহারাদার সমিতির সভাপতি বালুখালী গ্রামের বাদশা মিয়া জানান, বালুখালী পান বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে একটি বসতভিটায় বসানো অবৈধ করাতকল নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় ৫জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের ছত্রছায়ায় এলাকার সামাজিক বনায়নের মূল্যবান বন সম্পদ লুটপাট করা হচ্ছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বালুখালী বনবিট কর্মকর্তা মোবারক আলী জানান, সামাজিক বনায়নের গাছ রক্ষা করতে গিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় ওই বনবিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি বন মামলা দায়ের করেছে।

উখিয়া বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, উখিয়ার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ২৫টি করাত কলে দিনরাত অবিরাম চোরাই কাঠ চিরাই করা হচ্ছে। এসব অবৈধ করাতকল গুলো উচ্ছেদের ব্যাপারে তৎকালীন বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহিম হোসেন উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় ২৫টি অবৈধ করাত কল উচ্ছেদের ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দাখিল করলেও উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সংঘবদ্ধ এসব করাতকল ব্যবসায়ী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিন দিন বাড়ছে অবৈধ করাত কলের সংখ্যা। সামাজিক বনায়নের অস্থিত্ব টিকিয়ে রেখে বন সম্পদ উন্নয়নে অবৈধ করাত কল উদ্ধারের ব্যাপারে উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, অবৈধ করাত কল উদ্ধারের ব্যাপারে তারা বার বার অভিযান চালাচ্ছে। স্থানীয় পরিবেশবাদী সচেতন মহলের অভিযোগ অবৈধ করাত কল থেকে স্থানীয় বন বিভাগ মাসিক মাসোহারা পেয়ে থাকেন। যে কারণে তারা করাত কল উদ্ধারে তত উৎসাহী নয়। সামাজিক বনায়নের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে, ওই বন রেঞ্জ কর্মকর্তা কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।

পাঠকের মতামত: