ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উখিয়ার ৫ইউনিয়নের শপথ অনুষ্ঠান শনিবার

sssশফিক আজাদ, উখিয়া :

উখিয়ার উপজেলার ৬ষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত ৫ইউনিয়নের মধ্যে ৩নং হলদিয়াপালং ও ২নং রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুরি, ব্যালট ছিনতাই, প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারা, কেন্দ্র দখল করে ভোট প্রয়োগ, অতিরিক্ত ব্যালট ঢুকানো সহ নানান অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা পৃথক দু’টি রিট আবেদন করেছে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোট বিভাগে। ৩হলদিয়া পালং ইউনিয়নের বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের এসএম শামসুল হক বাবুল এবং ২নং রত্নাপালং ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নুরুল হুদা, বিএনপি’র মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নুরুল কবির চৌধুরী এবং আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্বাস উদ্দিন কন্ট্রাক্টার গত ১৫জুন এ রিট ২টি করেন। হলদিয়াপালং এর রিট পিটিশন নং-৭৬৬০/১৬এর আদেশে বলা হয় যে, ১৫/০৬/২০১৬ইং তারিখ হতে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে উভয়পক্ষকের উপস্থিতিতে সৃষ্ট ফলাফল জটিলতা নিরসন করে হাইকোর্টে নিকট প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। একই ভাবে রত্নাপালং রিট পিটিশন নং-৭৫৮৫/১৬ এর আদেশে বলা হয়, ১৫/০৬/২০১৬ইং তারিখ হতে ১৫কর্ম দিবসের মধ্যে সৃষ্ট নির্বাচনী জটিলতা নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে। বিজ্ঞ বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম, জাফর আহমদ এর দ্বৈত ব্যাঞ্চ থেকে এ পৃথক আদেশ গুলো দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হাইকোর্টের এ আদেশকে অমান্য করে ওই দিন তড়িগড়ি করে গেজেট প্রকাশ করে দিনে দিনে ওই গেজেট কক্সবাজার জেলা প্রশাসক থেকে শুরু বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেন। এবং উক্ত গেজেটের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন সরকারী বন্ধের দিন শনিবার শপথ অনুষ্ঠানের সম্পূর্ণ আয়োজন সম্পন্ন করেন। সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের জারিকৃত আদেশ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গত ১৬জুন দাখিল করা হলেও শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত করেনি।
অথচ খরব নিয়ে দেখা গেছে, দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ ধাপের নির্বাচনের শপথতো দুরের কথা ৪র্থ ও ৫ম ধাপের অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের অধিকাংশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের শপথ অনুষ্ঠিত এখনো সম্পন্ন করতে পারেনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাহলে এতো তাড়াহুড়া করে উখিয়ার হলদিয়াপালং ও রত্নাপালং ইউনিয়নের গেজেট প্রকাশ পরবর্তী বন্ধের দিন শপথ অনুষ্ঠানের কারণ কি এটি এখন উখিয়ার প্রতিটি মানুষের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে অনেকে মন্তব্য করে বলতে দেখা গেছে ‘ঠেলার নাম বাবাজি’। মন্ত্রী পরিষদ সচিবের হস্তক্ষেপে এসব হচ্ছে বলে জনমূখে শোনা যাচ্ছে। হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ধানের প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল বলেন, মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলমের হস্তক্ষেপে দায়িত্বরত প্রশাসন আমার ফলাফল পাল্টিয়ে জনবিচ্ছিন্ন তার ভাই শাহ আলমকে বিজয়ী ঘোষনা করেছে। তিনি বলেন, এটি কখনো হলদিয়াবাসি মেনে নেবে না। মন্ত্রী পরিষদ সচিবের লাল মোবাইল ফোনে হাইকোর্টে আদেশ অমান্য করে গেজেট প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এ ঘোষনাকে ঠেকানো হবে। একই ভাবে রত্নাপালং ইউনিয়নের ধানের শীষ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী বলেন, স্থানীয় এমপি এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে ৩ নাম্বারের প্রার্থী খাইরুল আলমকে বিজয় ঘোষনা করেছে।
এদিকে দায়েরকৃত অভিযোগে সুত্রে জানা গেছে, ৪জুন ভোট গণনা শেষে প্রিজাইডিং অফিসারের সরবরাহ করা ফলাফল বিবরণী অনুযায়ী হলদিয়াপালং ইউনিয়নে মোট ৯টি ভোট কেন্দ্রে বিএনপির মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল ৭৮৪৯ ভোট এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহা আলম ৭২১৯ ভোট পান। ৬২৯ ভোট বেশী পেয়ে বিএনপির প্রার্থী এসএম শামসুল হক বাবুল বিজয়ী হওয়ার কথা। কিন্তু জনরায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শাহ আলমকে বিজয়ী ঘোষণা দেয় প্রশাসন। ভোটের ফলাফল তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবকটি কেন্দ্রের ফলাফল ঠিক থাকলেও হলদিয়া পালং পাতাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ৩৬১ এর স্থলে ১০৬৩ দেখানো হয়। এতে ৭৩ ভোটে নৌকার প্রার্থীকে বেশি দেখিয়ে চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে রত্নাপালং ইউনিয়নের থিমছড়ি সরকারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভালুকিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রত্নাপালং উচ্চ বিদ্যালয় এবং পশ্চিম রত্নাপালং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে অতিরিক্ত ভোট পাওয়ার সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে প্রতিদ্বন্ধি ৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হাইকোর্টে রিট করেন।

 

পাঠকের মতামত: