ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

উখিয়ার থাইংখালীতে তান্ডব: আহত-৩ ও ৫ জোয়াড়ী আটক

pic ukhiya  13.08.2016মাহমুদুল হক বাবুল, উখিয়া ॥

উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী এলাকায় ইয়াবা সন্ত্রাসী কালো টাকার দাপুটে ধরাকে সরাজ্ঞান করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রফিক উল্লাহর নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে নিজ চাচার বসতভিটা ও জমি দখলে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপন চাচা নুরুল ইসলাম হিরো। উক্ত হামলায় ৩ জন আহত হয়েছে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

অভিযোগে জানা গেছে, পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী গ্রামের নুরুল ইসলাম হিরো (৫৫) দীর্ঘদিন ধরে প্রবাস জীবন যাপন শেষে সম্প্রতি গ্রামে ফিরে আসে। তার বৈদেশিক উপার্জনের অর্থে অর্থবিত্তশালী হয়ে যৌথ পরিবারের সদস্য হিসাবে আপন ভাজিতা রফিক উল্লাহকে জায়গাজমিসহ সবকিছু দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়েছিল। সে সুবাদে রফিক উল্লাহ স্থানীয় ভাবে ইয়াবা পাচার ও মাদকাসক্ত হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে বৃহস্পতিবার দুপুরে শত শত লোকজনের সামনে দেশীয় ভারী অস্ত্র সজ্জিত হয়ে তার ভগ্নিপতি পালংখালী নলবনিয়া এলাকার মোঃ সেলিম প্রকাশ কালু ডাকাত, জাকির হোসেন প্রকাশ বার্মাইয়া জাকের সহ ১৮/২০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী অর্তকিত ভাবে বিদেশ ফেরত বয়স্ক চাচা নুরুল ইসলাম হিরোর বসতভিটা ও সংলগ্ন জমি জবর দখল করতে গিয়ে এলোপাতাড়ি হামলার ঘটনা ঘটায়। এঘটনায় উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রফিক উল্লাহর চাচা নুরুল ইসলাম হিরো (৫৫), মোঃ ইসলাম (৬০) ও দেলোয়ার হোসেন (৩০) আহত হয়। স্থানীয় শত শত লোকজন সন্ত্রাসী বাহিনীকে ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে গেলেও সন্ত্রাসী মোঃ রুবেল (২২), মামুন(১৯), ছৈয়দুল বশর (২১) ও মোঃ ইসমাঈল (২১ কে জনতা ধরে উখিয়া থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান ও অন্যান্য সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার না করায় জনমনে আতংক কাটছে না।

খবর নিয়ে জানা গেছে, উক্ত সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রফিক উল্লাহর আপন ভগ্নিপতি কালু ডাকাতের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় একাধিক হত্যা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে। অপর সন্ত্রাসী বার্মাইয়া জাকের রফিক উল্লাহর ইয়াবা সিন্ডিকেটের একজন ও নিষিদ্ধ ঘোষিত মিয়ানমারের আরএসও’র সদস্য হয়। সে ইতিমধ্যে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সম্প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্রও বানিয়ে নিয়েছে। উক্ত সন্ত্রাসী প্রধান রফিক উল্লাহ নিজেকে একজন বিশিষ্ট সেবক, স্থানীয় থাইংখালী দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি, কখনো দাতা কখনো প্রতিষ্ঠাতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রতারণা করে আসছে।

নুরুল ইসলাম হিরো জানিয়েছেন, মূলত উক্ত রফিক উল্লাহ একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী, ইয়াবা পাচারকারী, ভন্ড প্রতারক, লম্বট ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য। নুরুল ইসলাম হিরোর মেয়ে জামাতা আবুল বশর আবু জানিয়েছেন, তার শ্বাশুড় দীর্ঘকাল প্রবাস জীবন যাপন কালে যৌথ পরিবারের সদস্য ও বড় ছেলে হিসাবে ভাতিজা রফিক উল্লাহর মাধ্যমে যাবতীয় লেনদেন ও সব কিছু তদারকি করাতো। সে রফিক উল্লাহ চাচার টাকায় নিজেকে বেপরোয়া রূপে গড়ে তোলে এলাকায় সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করে। এমনকি গত বৃহস্পতিবার আমার শ্বাশুড়ের বসতভিটা ও জমি দখল করতে গিয়ে বেপরোয়া ভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র শস্ত্র উচিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায়। তার অত্যাচারে আমার শ্বাশুড়ি ও শ্বাশুড় সহ ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে বাধ্য হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রকাশ্যে যে ঘটনা ঘটেছে তা খুবই নিন্দা জনক ও আইন শৃঙ্খলার চরম পরিপন্থি। এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, সন্ত্রাসীর ঘটনায় জনতা হাতে নাতে ৪ জনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে এবং তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বসতভিটা সংক্রান্ত বিষয়টি স্থানীয় ভাবে আপোষ মিমাংশের পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।

####
উখিয়ায় পুলিশের অভিযানে ৫ জোয়াড়ী আটক

মাহমুদুল হক বাবুল, উখিয়া

কক্সবাজারের উখিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জোয়াড়ীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২ টার দিকে থানার ওসি মোঃ হাবিবুর রহমানের নির্দেশে উখিয়া থানা পুলিশের উপÑ পরিদর্শক মোঃ মাঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোটবাজারের বহুল আলোচিত পতিতালয় নামে খ্যাত হোটেল শুভ গেষ্ট হাউজে অভিযান চালিয়ে ৫ জোয়াড়ীকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরী পাড়া গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে আব্দুল আলম(২২), রতœাপালং ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের মৃত জাফর আলমের ছেলে শাহাব উদ্দিন(২৩), রুহুল্লার ডেবা নামক এলাকার নুর আহম্মদের ছেলে ফরিদ আলম(২৫), একই এলাকার আলী আহম্মদের ছেলে ওসমান(২৫), বড়বিল গ্রামের ফরিদ আলমের ছেলে মনির(২২)। পরে শনিবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন ৫ জোয়াড়ীকে ২৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে, থানার ওসি মোঃ হাবিবুর রহমান জোয়াড়ী আটকের সত্যতা স্বীকার করেন।

পাঠকের মতামত: