সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :::
ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে কক্সবাজার সদরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ। পুরো বাজার জুড়ে অবৈধ দখলদারদের দখলে রয়েছে ৫ কানি মত সরকারী ভূমি সম্পদ। বিভিন্ন সড়কে পাকা দালান ও কাঁচাঘরসহ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। ভূমি অফিসের জায়গা হলেও এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোন উদ্যোগ নেয়নি। সম্প্রতি ৯২জন দখলদারদের একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরণ করেছে ইউনিয়ন ভূমি অফিস। তবে কয়েকজন দখলদারদের নাম তালিকায় উঠে আসেনি বলে জানান বাজার ব্যবসায়ীরা। যার ফলে প্রতিযোগিতামূলকভাবে চলছে এ দখল বাণিজ্য। এসব অবৈধ স্থাপনাগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করে সরকারী ভূমি দখলমুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন সচেতন ঈদগাঁওবাসী।
প্রাপ্ত তথ্যে ও বাজার ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, সদরের ঈদগাঁও বাজারে জালালাবাদ ও ঈদগাঁও মৌজার প্রায় ১ একর ৯৩ শতক খাস জমি রয়েছে। যার বর্তমান বাজারমূল্য ৪০ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা। এ জমিগুলোতে বিভিন্ন সড়ক-উপসড়কে দালান ঘর, দোকান ঘর, আড়ৎ (গোডাউন), সেমি পাকা, কাঁচা দোকান ও ঘরবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থাপনা অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া আরো বেশ কিছু পাকা স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব স্থাপনা মোটা অংকের টাকায় বেচাবিক্রিসহ ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে দখলদাররা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রাক্তন তোহা বাজার, তরকারি বাজার, হাসপাতাল সড়ক, মরিচ বাজার, কাঁচ বাজার সড়ক, হাসপাতাল রোডসহ আরো কয়েকটি স্থানে স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের মধ্যে সেমি ও পাকা দোকান নির্মাণ করেছে জনকল্যাণ পরিষদ ও পাঠাগারের পক্ষে সভাপতির দখলে ৪ শতক, ইসলামাবাদের মৃনাল কান্তি আচার্যের দখলে ০২৭৭, ঈদগাঁও ইউনিয়নের শাহজালালের দখলে ১ শতক, রশিদ আহমদের দখলে ১ শতক, জালালাবাদের নুরুল আজিম গং এর দখলে ৩ শতক, ইসলামাবাদের মানিক দে’র দখলে ১ শতক, ঈদগাঁও ইউনিয়নের আয়াত উল্লাহর দখলে ২ শতক, ইসলামাবাদের রবি ধরের দখলে ০০৫০, জাফর আহমদের দখলে ০০৫০ শতক, আবদুল জলিলের দখলে ০০৫০, আবদুল কাদেরের দখলে ০০৫০, মনির আহমদের দখলে ০২০০, আবদুর রশিদের দখলে ২ শতক, ছলিম উল্লাহর দখলে ১ শতক, সিরাজুল হকের দখলে ১, আমান উল্লাহর দখলে ১, হাজী ফজল করিমের দখলে ৪, আমিনুর রশিদের দখলে ১, জাহেদুল ইসলামের দখলে ১, আজিজুল হকের দখলে ১, চান্দিনা ভিটায় পাকা দোকান নির্মাণ করেছে মোঃ ইব্রাহিমের দখলে ১, জিল্লুল এহেছান ভুলুর দখলে ২, রেজাউল করিম গংয়ের দখলে ১, জয়নাল আবেদীনের ১, কামাল উদ্দীনের দখলে ১, মনজুর হকের ১, মুজিবুর রহমানের ১, মাষ্টার বদিউল আলমের ১, মৌলানা মনজুর মোর্শেদের দখলে ২, আহমদ উল্লাহর দখলে (আদালতে বিচারাধীন) ১, নুরুল হকের দখলে ১, নুরুল আলমের দখলে ১, মৌলানা ওবাইদুল হকের দখলে ২, তাজর মুল্লুকের দখলে ২, মৌলানা কামরুল হকের দখলে ৩, নুরুল ইসলামের দখলে ৩, নুরুল কবিরের দখলে ৩, সিরাজুল মোস্তফার দখলে ২, হাবিব উল্লাহর দখলে ৩, নুর এ রহিমের দখলে ২, সিরাজুল ইসলামের দখলে ৩, ছরওয়ার কামালের দখলে ২, মোহাম্মদ হাসানের দখলে ২, ইলিয়াছের দখলে ২, মৌলভী মমতাজ আহমদের দখলে ২, আবুল কালামের দখলে ২, ফজল করিমের দখলে ৫, নুরুল মোস্তফার দখলে ১, মৃদুল কান্তি দের দখলে (আদালতে বিচারাধীন) ১, আবু ছৈয়দের দখলে ১, নুরুল আবছারের দখলে ১, রফিকুল ইসলামের দখলে ০০৫০, সাইফুল ইসলামের দখলে ০০৫০, আমিনুর রশিদের দখলে ২, মোহাম্মদ সোলেমানের দখলে ১ (আদালতে বিচারাধীন),আবু সালেহর দখলে ০২০০, নুরুল আবছারের দখলে ১, আমিনুর রশিদের দখলে ১, সাহাব উদ্দীনের দখলে ১, আমিনুর রশিদের দখলে ১, সিরাজুল হকের দখলে ১, আলী আহমদের দখলে ১, আবুল কালামের দখলে ১, মোহাম্মদ আয়ুবের দখলে ১ (আদালতে বিচারাধীন), লুৎফুর কবিরের দখলে ১, আবদুল কুদ্দুছ গং’র দখলে ৪, নুরুল ইসলামের দখলে ২, লুৎফুল কবিরের দখলে ৩, রশিদ আহমদ বাবুলের দখলে ৩, মিজানুর রহমানের দখলে ৪, আবদুল হকের দখলে ৪, আবুল কালামের দখলে ২, সাদাত হোসেনের দখলে ২, উত্তম রায় পুলকের দখলে ৫, আবদু ছালাম বাবুলের দখলে ৬, জসিম উল্লাহ মিয়াজীর দখলে ৩, মোহাম্মদ শফির দখলে ৪, সিরাজুল হকের দখলে ৬, খুরশিদ আলমের দখলে ১, রাখাল ভট্টাচার্য্যরে দখলে ১৬ (আদালতে বিচারাধীন), মোহাম্মদ রশিদের দখলে ৩, ফরিদুল আলমের দখলে ৩, নুর ছিদ্দিকের দখলে ২, জাহাঙ্গীর আলমের দখলে ১, মোহাম্মদ শাহিনের দখলে ২, জাফর আলমের দখলে ২, আবদু শুক্কুরের দখলে ১, শফিকুল ইসলামের দখলে ২, নুরুল আমিনের দখলে ৩, ছৈয়দুল করিমের দখলে ২, ফখরুদ্দীন কাজলের দখলে ৩, সর্বমোট ১ একর ৯৩ শতক।
তালিকাভূক্ত অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে বাজার দখলমুক্ত করার দাবী জানান। তা না হলে সরকারী জমি দিন দিন বেহাত হয়ে যাবে এবং স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের হার আরো বৃদ্ধি পাবে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তালিকায় যাদের নাম এসেছে যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ পূর্বক সরকারী খাস জমি উদ্ধার করা হবে। তাছাড়া যারা অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে ফেলেছে তাদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: