উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ লঙ্ঘন করে আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ননের (৭২৬) কার্যকরি কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরে সংগঠনটির কার্যালয়ে অনুষ্টিত হয়েছে কমিটির এ নির্বাচন। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে শ্রমিক ইউনিয়নটির নির্বাচন অনুষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগে উচ্চ আদালতে (চট্টগ্রাম ১নম্বর শ্রম আদালত) একটি আপীল মামলা দায়ের করেছেন কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের (২১২৯) সভাপতি শেফায়েতুল আলম বাবু। মামলায় বিবাদি করা হয়েছে আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ননের সম্পাদক মোহাম্মদ মুছাকে।
শ্রম আদালতের বিচারপতি মো.আবদুল হাই মামলার শুনানী শেষে গত ৭ মে বিবাদি আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ননের সভাপতি ও সম্পাদক এবং নির্বাচন কমিশনকে (নির্বাচন পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক) আগামী ২৩ মে আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে এব্যাপারে জবাব দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতে কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেফায়েতুল আলম বাবুর পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবি একেএম মোহসেন উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
গতকাল বিকালে চকরিয়া প্রেসক্লাবে মামলার বাদি শেফায়েতুল আলম বাবু দাবি করেন, শ্রম আইনের ২০০৬ এর ১৮৩(৪) ধারার অনুবলে ২০০৮ সালের ১০ জুন বাংলাদেশ সরকার গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে পরিবহন সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের নিয়ম প্রচার করেন। গেজেটে বলা হয়েছে বাস, ট্টাক, মিনিবাস প্রভৃতি ট্রেড ইউনিয়ন জেলা ভিত্তিক সংগঠনের আওতায় পরিচালিত হবে। আইনের সেই ধারা মোতাবেক কক্সবাজার জেলার শ্রমিকরা অন্য জেলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে অর্ন্তভুক্ত হওয়ার বিধান নেই। কিন্তু আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নটি চট্টগ্রামের সংগঠন হলেও তাঁরা অন্য জেলার শ্রমিকদেরকে সেখানে অর্ন্তভুক্ত আছে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা শ্রমিক আইনের পরিপন্থি। এভাবে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বেআইনীভাবে সংগঠন পরিচালনা করে লাখ লাখ টাকা কামাই করছে।
কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, তাদের সংগঠনটি কক্সবাজার অঞ্চলে সরকারিভাবে নিবন্ধনভুক্ত বৈধ। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে নিববন্ধন নিয়ে আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সংশ্লিষ্টরা অনেকবছর ধরে কক্সবাজার অঞ্চলে অবৈধভাবে সংগঠন পরিচালনা করে আসছে। এ অবস্থায় গত ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ওই সংগঠনটির অবৈধ নির্বাচন বন্ধের আবেদন জানিয়ে উচ্চ আদালতে (শ্রম আদালতে) একটি রিট মামলা করেন কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেফায়েতুল আলম বাবু। তিনি বলেন, রিট মামলার প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের বিচারপতি মো.আবদুল হাই ও মো.গোলাম রব্বানী সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বৈঞ্চ মামলার শুনানী শেষ না হওয়া পর্যন্ত আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে গত ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামেও সংগঠনটির নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। যা আদালতের আদেশ অবমাননার সামিল।
মামলার বাদি পক্ষের কৌশলী (চট্টগ্রাম শ্রম আদালতের সিনিয়র আইনজীবি) একেএম মোহসেন উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে শ্রমিক ইউনিয়নটির নির্বাচন অনুষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে উচ্চ আদালতে (চট্টগ্রাম ১নম্বর শ্রম আদালত) ফের একটি আপীল মামলা (নং ০৩/১৭) দায়ের করেন কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেফায়েতুল আলম বাবু। মামলায় বিবাদি করা হয় আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ননের সম্পাদক মোহাম্মদ মুছাকে।
আদালতের বিচারক মামলার শুনানী শেষে গত ৭ মে বিবাদি আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ননের সভাপতি ও সম্পাদক এবং নির্বাচন কমিশনকে (নির্বাচন পরিচালনা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক) আগামী ২৩ মে আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে এব্যাপারে জবাব দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: