ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার ৪ ইউনিয়নের ১০ হাজার গ্রাহক দুইদিন ধরে অন্ধকারে, ২ দিনেও লাইনের ত্রুটি খুঁজে পায়নি পল্লী বিদ্যুতের কারিগরি দল

indexছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া ::

বিদ্যুত দেওয়া দুরে থাক, ২দিনেও বিদ্যুৎ লাইনের ত্রুটি খুঁজে বের করতে পারেনি পল্লী বিদ্যুতের কারিগরি দল। এই কারণে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চার ইউনিয়নের ১০ হাজার পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক অন্ধকারে রয়েছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় ঝড়ো বাতাসের পর থেকে এই এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুতের দেখা পাননি। কবে নাগাদ বিদ্যুত চালু হবে তার কোন নিশ্চয়তাও নেই।

বিদ্যুতের ভোগান্তি নিয়ে চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক জসিম উদ্দিন ছিদ্দিকী জানান, সোমবার সন্ধ্যায় ঝড়ো বাতাসের সময় বিদ্যুৎ চলে গেলেও গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ বিদ্যুতের আর দেখা মিলেনি। দুপুরে পাঁচ মিনিট এক ঝলক দেখা গেলেও আর আসেনি। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল চার্জ পর্যন্ত দিতে না পারায় আমরা প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছি।

আরেক গ্রাহক বড়ইতলীর বাসিন্দা আবদুল মজিদ ছিদ্দিকী মুরাদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ না দিতে পল্লী বিদ্যুতের অভিযোগের শেষ নেই। গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ সংকটের অজুহাত, শীতে ট্রন্সফরমার নষ্ট হওয়া, বর্ষায় তাঁর ছিড়ে যাওয়া, ঝড়ো বাতাসে লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার অজুহাত শুনতে শুনতে আমরা ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে পড়েছি। সামান্য ঝড়ো বাতাসে দুদিন ধরে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছি আমরা।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুতের চকরিয়া জোনাল অফিসের সহকারী মহা ব্যবস্থাপক হামিদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের চার নম্বর ফিডার লাইনে (কাকারা, হারবাং, বড়ইতলী ও কৈয়ারবিল ইউনিয়ন) ১০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। ঝড়ো বাতাসে একাধিক স্থানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে লাইন মেরামতের কাজে নেমে পড়ি। সবগুলো লাইন চালু সম্ভব হলেও চার নম্বর লাইনটির ত্রুটি এখনো আমরা খুঁজে বের করতে পারিনি। তবে কারিগরি টিম চেষ্টা চালাচ্ছে।’

অভিযোগ রয়েছে, বিগত দুইমাস ধরে চকরিয়া পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা ২৪ ঘন্টায় মাত্র পাঁচ ঘন্টা বিদ্যুত পাচ্ছেন। সেই কাঙ্খিত বিদ্যুতের দেখা মিলে শুধু ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত। বাকি সময়টা কখনো পাঁচ মিনিট কখনো ৩০ মিনিট। বিদ্যুত এসে সেটি এক ঝলক পর আবার চলে যাচ্ছে। এতে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত না পাওয়ায় সেই বিদ্যুত গ্রাহকের কোন কাজে আসছে না। এ নিয়ে এলাকার জনগণ মোমবাতি ও চেরাগ নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি দিলেও কোন সুফল মিলেনি।

এলাকার বাসিন্দা ছাত্র নেতা এইচ এম আইয়ুব দাবি করেন সারাদিনে যদি ৬ ঘন্টা বিদ্যুত দেয়া হয় সেটি সময় মেনে দেয়া হোক। বাকি সময় আমরা আমাদের মতো করে প্রস্তুত থাকবো। আর একেবারে দেওয়া না গেলে মাস দুয়েক পল্লী বিদ্যুত বন্ধ রাখা হোক। আমরা আগের যুগে ফিরে যাবো।

এদিকে পল্লী বিদ্যুতের এই কঠিন অবস্থার মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুত নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা অন্ধকারে থাকছে। গ্রাহকদের বিদ্যুত না পাওয়ার এটিও একটি বড় কারণ বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত: