ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

নাছির-মহিউদ্দিনের পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি

nasir__111356-300x181মহানগরে পৃথক জনসভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী একে অপরের দিকে আঙ্গুল তুলে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, আপনাকে নগরপিতা বানিয়েছি আমরা; হুমকি-ধামকি দেওয়ার জন্য নয়। ভালো হয়ে যান, নয়তো করপোরেশনের সব কাউন্সিলর একত্রিত হয়ে আপনার অপসারণ চাইবে।

আরেক সমাবেশে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেছেন, দলাদলি করবেন না, যারা রাতে এক কথা এবং দিনে আরেক কথা বলে তাদের কথা শুনবেন না। তাদের পিছনে হাটবেন না।

রবিবার বিকালে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম লালদীঘির ময়দানে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিকলীগ আয়োজিত সমাবেশে চরম উত্তেজনাময় বক্তব্যে হুঁশিয়ারি দেন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

অপরদিকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই জাতীয় শ্রমিকলীগের সভা শেষে সন্ধ্যার দিকে আকস্মিক চট্টগ্রাম মহানগর শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ করে চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিকলীগ। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন মহিউদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে বক্তব্য রাখেন।

এতে দুই নেতার অনুসারীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী নেতাকর্মীরা আ জ ম নাছির উদ্দিনের সমাবেশকে পাল্টা সমাবেশ হিসেবে আঙ্গুল তুলছে। তবে জাতীয় শ্রমিক লীগ প্রতিবছর শ্রমিক দিবসে চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে সমাবেশের আয়োজন করে।

এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মানুষের মনে অনেক কষ্ট। পহেলা মে দিবস শ্রমিকদের ঈদের দিন, ঈদের দিনে শ্রমিকরা লালদিঘীর ময়দানে একত্র হয়, আজ তার ব্যতিক্রম হয়েছে।

তিনি বলেন,মেয়র আপনি কাউন্সিলরসহ চসিকের কর্মচারী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন জনকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন- যাতে তারা লালদিঘীর ময়দানের সমাবেশে না আসে। কিন্তু আপনি জানেন না, হুমকিকে চট্টগ্রামের মানুষ ভয় পায় না। এই হুংকার বন্ধ করুন, কমিশনার থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে কথা বলবেন না।

মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন,চট্টগ্রামে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছেন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তির পরিবেশকে খুন করে অশান্তি সৃষ্টি করেছেন। একমাস পার হয়ে গেলেও সোহেলের খুনিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলে উপরের নির্দেশ আছে, কে এই নির্দেশদাতা আমরা সবাই জানি।

এছাড়া আ জ ম নাছির উদ্দিনের দিকে বন্দরে কোকেন প্রবেশের জন্যও আঙ্গুল তোলেন তিনি।

এদিকে শহীদ মিনারের সমাবেশে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, দলাদলি করবেন না, যারা রাতে এক কথা এবং দিনে আরেক কথা বলে তাদের পিছনে হাটবেন না। এখন সতর্ক করছি। পরে সতর্ক করব না। ইজ্জত হারালে তখন বুঝতে পারবেন।

এ সময় তিনি নগরীতে হকারদের জন্য আলাদা মার্কেট করার ঘোষণা দিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, রাস্তায় বসে থেকে তাদেরকে আর সারাদিন কষ্ট করতে হবে না।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল সমাবেশে দুই নেতার বক্তব্যকে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত উল্লেখ করে বলেন, ব্যক্তিভেদে দুই নেতার মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও তা কোনো সময় এ রকম প্রকাশ্যে রূপ নেয়নি। এ সমাবেশে দুই নেতাই পরস্পরের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। যা মোটেও কাম্য নয়।

উল্লেখ্য, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী টানা চতুর্থবারের মতো চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। আর মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

পাঠকের মতামত: