ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় গুলি ও কুপিয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় মামলা, আটক ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া ::  কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামায় এলোপাতারি গুলি করে জয়নাল আবেদীন (৪০) নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল (৩ মে) নিহতের ছোট ভাই আমিরুজ্জামান বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-০২/২১।

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, “মগনামায় জয়নাল হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ছোট ভাই আমিরুজ্জামান বাদী হয়ে একটি এজাহার দিয়েছেন। তাতে ৩২ জনের নামসহ ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারটি (০৩ মে) মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। ইতিমধ্যে ৫ আসামিকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

তবে জানা গেছে, এ ঘটনায় ৫ সন্দেহভাজন আসামিকে আটক করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।

উল্লেখ্যঃ গত রবিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মগানামা ইউনিয়নের ফুলতলা স্টেশন এলাকায় ১০-১৫ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বোরকা পরে এসে প্রকাশ্যে চায়ের দোকানে এলোপাতারি গুলি চালিয়ে ও কিরিচ দিয়ে কোপালে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ ও জখম হন।

পরে চট্টগ্রাম মেড়িকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে জয়নাল আবেদীন (৪০) নামের এক যুবক নিহত হন। নিহত জয়নাল আবেদীন মগনামা ইউনিয়নের আফজলিয়া পাড়া এলাকার মৃত নুরুন্নবীর পুত্র এবং স্থানীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ঘটনার রাতে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার সময় উজানটিয়ার ভেলুয়ার পাড়া থেকে অভিযুক্ত প্রধান সন্দেহভাজন আবু ছৈয়দের ভাই আহমদ কবির লাদেক, ভাতিজা পারভেজ মোশারফ ও শ্যালক মাহমুদুল করিমকে আটক করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয় জনতা।

আটক তিনজনই নিহত জয়নালের একই গ্রামের বাসিন্দা। অপরদিকে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বাইম্যাখালী থেকে একই কায়দায় স্থানীয়রা আটক করেন রাসেল ও দেলোওয়ার নামের আরো দুই সন্দেহভাজনকে। পরে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়। নিহত জয়নালের স্বজনরা শুরু থেকেই ঘাতক হিসেবে মগনামার আফজলিয়া পাড়ার আবু ছৈয়দ ও লঞ্চঘাট এলাকার নেজাম উদ্দিন ছোটনকে দায়ী করে আসছিলেন।

মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম জানান, “হত্যাকান্ডের কয়েকদিন আগে নিহত জয়নালের ভাই শাহাবউদ্দিনের সাথে ঘাতক নেজাম উদ্দিন ছোটনের মধ্যে সামান্য ফ্যানের বাতাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে কয়েকদফা মারামারির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার জের ধরেই ছোটনও ছৈয়দের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন বোরকা পরা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে এলোপাতারি গুলি করে জয়নাল আবেদীনকে খুন করে।” এদিকে গতকাল নিহত জয়নালের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।

তার নামাজে জানাজায় কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম বিএ অনার্স এম এ উপস্থিত হয়ে ঘাতক সন্ত্রাসীদের দ্রুত আটক করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এদিকে পেকুয়ায় পরপর ৩ টি হত্যাকান্ডের ঘটনায় পেকুয়ার আইন-শৃংখলার মারাত্মক অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেকুয়া থানার ওসির প্রত্যাহার দাবি করেছেন অনেকেই।

 

পাঠকের মতামত: