ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

চকরিয়ায় অবৈধ বালি উত্তোলনে গৃহহীন হওয়ার আতংকে মানুষ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া : কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার দিগরপানখালী এলাকায় মাতামুহুরী নদীঘেষে গড়ে উঠা বেশ কিছূ অবৈধ বালু পয়েন্ট। এসব অবৈধ বালুর পয়েন্ট থেকে বালি উত্তোলন অব্যহত থাকলেও কোন ধরণের অভিযান না থাকায় স্থানীয় মানুষের মাঝে চরম আতংক দেখা দিয়েছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে ওই এলাকায় লোকজন নদী ভাঙ্গন আতংকে বিরাজ করেছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে অধশত বালির পয়েন্টে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কতৃক কোনধরণের ব্যবস্থা না নেয়ায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হওয়ার পাশপাশি সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার নদী.ছড়াখাল ঘিরে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক বালির মহল। এসব বালির মহলে কয়েকটি অনুমতি থাকলেও বেশীর ভাগ চলছে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের ভাগ-ভাটোরায়। লোভ দেখানো অভিযান চালিয়ে ওইসব অবৈধ বালু পয়েন্ট গুলোর সাথে জড়িতদের দ্বিগুন উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় পুকুরে রূপ নিলেও ব্যবস্থা নিচ্ছেনা রহস্য জনক কারণে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন সচেতন মহল জানায়, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সাথে প্রশাসনের সখ্যতা থাকার কারণে পরিবেশের বারটা বাজানো বালু দস্যুদের বিরুদ্ধে জোরালো কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা। বিশেষ করে ডুলাহাজারা,হারবাং. বদরখালী, সাহারবিল ও পৌরসভার দিগরপানখালী এলাকার কয়েটি অবৈধ বালির পয়েন্ট যেন মরণ ডেকে আনছে। সম্প্রতি এসব বালির পয়েন্ট এলাকায় গোসল করতে নেমে বেশ কয়েকজন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও এখনো পযন্ত এসব অবৈধ বালির পয়েন্ট গুলো রহস্য জনক কারণে বন্ধ হয়নি। এসব বালির পয়েন্ট গুলো দ্রুত বন্ধের দাবী জানান স্থানীয় জনসাধারন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ডুলাহাজারা ছড়া ও পাগলিরবীল ছড়া খালের ইজারার মেয়াদকাল শেষ হয়েছে। গেল কদিন আগে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারী নিয়মানুযায়ী নতুনভাবে ইজারা দেয়া হয়। কিন্তু আগের ইজারাদার তাদের দখল ছেড়ে না দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। বৃহস্পতিবার সকালের এ অভিযানে পাগলিরবীলে ৩টি ও রংমহলে একটি সেলু মেশিন গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে দু’টি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, নির্দেশ অমান্য করে ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পাগলিরবীল ও রংমহল ছড়াখাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিল পূর্বের ইজারাদাররা। এমনই খবরের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় ৪টি সেলু মেশিন গুড়িয়ে দেয়া হয় এবং অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে ২টি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী যেই হোক কখনো কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা বলেও তিনি জানান।

স্থানীয় লোকজন আরো জানায়, প্রশাসন আন্তরিক হলে এ উপজেলায় গড়ে উঠা অর্ধশত বালির পয়েন্ট গুলো গুড়িযে দিতে পারে। কিন্তু এসব বালু দুস্যদের বালি উত্তোণের কারণে পরিবেশের বারটা বাজলে ও এখনো ঘুম ভাঙ্গার কারণে দিন দিন বড় ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব স্থান থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের কারণে সরকার একদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে রাস্তা ঘাটের অবস্থা দিন দিন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে চকরিয়া পৌরসভার দিগরপানখালী, উপজেলার ডুলাহাজারা রং মহল, হারবাং এলাকায় অবৈধ বালির পয়েন্ট গুলো গুড়িয়ে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

পাঠকের মতামত: