ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইসিএভূক্ত ইনানীতে বনকর্মী-ভিলেজার মিলে পাহাড় কেটে মাটি পাচারের অভিযোগ

কক্সবাজার প্রতিনিধি :: প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ইনানীতে পরিবেশের ব্যাপক ধংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী পাহাড়ী বনজঙ্গল, গাছপালা অনেক আগেই উজাড় হয়েছে। এবার বনকর্মী ও কথিত বন ভিলেজার মিলে পাহাড় কেটে মাটি পাচারের অভিযোগ স্থানীয়দের।

ইনানীর মোঃ শফিরবিল গ্রামের মোজাফফর আহমদের ছেলে সালামত উল্লাহর বিরুদ্ধে রক্ষিত বন ভূমির জায়গা দখল করে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিন মোঃ শফিরবিল সরকারী প্রাথমিক পাশে মেরিন ড্রাইভ রোড সংলগ্ন একটি আবাদী জমি ভরাট করতে দেখা যায়।

স্হানীয় লোকজন জানান, রাতের অন্ধকারে পার্শ্ববর্তী পাহাড় উজাড় করে পাহাড়ি মাটি দিয়ে এটি ভরাট করা হচ্ছে। পর্যটন শিল্পের প্রসারতার অজুহাতে ইনানীতে নির্বিচারে ধ্বংস করা হয়েছে কৃষিজমি, বৃক্ষরাজি ও পাহাড়। বঙ্গোপসাগরের দুর্যোগ দুর্বিপাক থেকে প্রকৃতি ও প্রাণীক‚লের সুরক্ষায় সাগরের তীরঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে এসব পাহাড়মালার সৃষ্টি। সাগরের অতিসন্নিকটে দণ্ডায়মান এখনও যে বিশাল পাহাড়গুলো রয়েছে তাও স্হানীয় প্রভাবশালীদের দখলে।

স্থানীয় হাসান আলী বলেন, এক সময় এই বনভূমিতে বিশালাকারের গর্জন গাছসহ প্রচুর প্রাকৃতিক গাছপালা বনলতা পাতা,গুল্ম ও বন্যপ্রাণীর অবয়ারণ্য ছিল। প্রভাবশালীরা বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকায় বহিরাগত উপজাতীয় লোকদের আশ্রয়ের কথা বলে বিশাল বনভূমি দখল করে রেখেছে। এখন আর বন পাহাড়ে এসব জীব বৈচিত্র্য দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে কিছু বুনো হাতি লোকালয়ে এসে মানুষজন মেরে খেত খামার, ফসলাদি নষ্ট করে চলে যায়।

স্হানীয়,মোহাম্মদ আলম, হাসান আলী, আব্দুস সালাম বলেন, ইনানী বন বিট অফিসের বনকর্মীরা দাঁড়িয়ে থেকে পাহাড় কেটে ট্রাকে করে মাটি নিয়ে যায়। প্রথমে তারা বাধা দিলেও নার্সারি সৃজনের জন্য মাটি নিচ্ছে বলায় তারা আর কিছু করে না বলে জানান তারা। কিন্তু এসব মাটি আসলে কোথায় নেয় তা তারা আর খবর নেয়নি।

এ ব্যাপারে নিজেকে ভিলেজার বা বন জায়গীরদার দাবী করে সালামত উল্লাহ পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির কথা অস্বীকার করেন। তবে ভিলেজার হিসেবে কয়েক একর বনভূমি তার দখলে রয়েছে স্বীকার করে বলেন, বন বিভাগের লোকজন নার্সারী করার কথা বলে এই পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে যায়। স্থানীয় এক যুবক ক্ষোভের সাথে বলেন, মূলত বনবিভাগ সংশ্লিষ্ট ও প্রভাবশালীরা পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে বনভূমি জবর দখল করছে।

উল্লেখ্য ইনানীসহ বিস্তৃত এলাকায় পাহাড় কাটা, মাটি কাটা,গাছপালা কেটে বন উজাড়সহ সবধরনের পরিবেশ বিধংসী কর্মকাণ্ডের ওপর সরকার ১৯৯৫ সনে এসব এলাকাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ বিষয়ে উখিয়ার ইনানী বনরেঞ্জ কর্মকর্তা তোসাদ্দেক বলেন, নার্সারীর জন্যে আমার লোকজন কেউই পাহাড় কেটে মাটি নেয়নি। এখানে বন বিভাগের কেউ জড়িত নেই। তদন্ত করে প্রকৃত পাহাড় খেঁকোদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: