ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

চকরিয়ায় নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ১২ ইউপি নির্বাচন উৎসবের আমেজে ভোটাধিকার প্রয়োগে নারী-পুরুষ ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি

Chakaria Picture  23-04-2016এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
প্রশাসনের নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অপ্রীতিকর কোন ধরণের ঘটনা ছাড়াই গতকাল শনিবার (২৩এপ্রিল) কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে। সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্টানকে ঘিরে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে নানা ধরণের হামলা ও সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকলেও এদিন ভোট কেন্দ্র গুলোতে আতঙ্ক ও ভীতি কাটিয়ে উৎসবের আমেজে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন নারী-পুরুষ ভোটাররা।
উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ১১১টি কেন্দ্রের মধ্যে অধিকাংশ কেন্দ্র পরির্দশনে দেখা গেছে, প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার ফলে এদিন বেশির ভাগ কেন্দ্রে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভোটারদের দীর্ঘ লাইন পরিলক্ষিত হয়েছে। দুপুরের আগে বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কমতে শুরু করে। বিকাল আড়াই থেকে তিনটা নাগাদ কেন্দ্র গুলোতে ভোটারদের দেখা মেলেনি। তবে সকালের দিকে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যার আগে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের লোকজন ব্যালট ভর্তি ভোট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে এমন গুজবে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল হোছাইন ও জাতীয় পাটির (এরশাদ) সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আমিনের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ওইসময় দুই পক্ষের মধ্যে অন্তত ২০ থেকে ৩০ রাউন্ড গুলি বর্ষন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে এ ঘটনায় দুই পক্ষের বেশ কজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হলেও পুলিশের অভিযানের মুখে তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গোপনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ কারনে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার চিরিঙ্গা, বরইতলী, কৈয়ারবিল, ফাসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, বমুুবিলছড়ি, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, সাহারবিল, হারবাং ও খুটাখালীসহ ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আগেরদিন থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়। নির্বাচনী এলাকার কেন্দ্রসহ আশপাশ এলাকায় মোতায়েন করা হয় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। পাশাপাশি ১২টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত জনপদে বাড়ানো হয় ব্যাপক টহল তৎপরতা।
শনিবার অনুষ্টিত নির্বাচনে ১২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ১২জন, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ১১জন, জাতীয় পাটির (এরশাদ) প্রার্থী তিনজন, জাতীয় পাটির (জেপি) প্রার্থীর একজন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ২৩জন। এছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৩৪জন ও সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষ মেম্বার পদে ৪২৪জন প্রার্থী।
চকরিয়া উপজেলার ইউপি নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ১২টি ইউপিতে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্টানের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। একজন জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ও ৮জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের তত্তাবধানে ১১১টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী কাজে দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় তিন হাজার সদস্য। এছাড়াও ১৯০ সদস্যের ৬ প্লাটুন বিজিবি সদস্য ও ৪৫জনের চারটি র‌্যাব টিম, পুলিশের ১২টি স্টাইকিং ফোর্স ও ৩৬টি মোবাইল টিম এবং ৬জন সহকারি পুলিশ সুপারের তত্তাবধানে ছয়টি বিশেষ টিম। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ১২ইউপিতে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ১১১টি কেন্দ্রে এদিন ৬জন রির্টানিং কর্মকর্তার তত্তাবধানে ভোট গ্রহনের দায়িত্ব পালন কনের ১১০জন প্রিসাডিং কর্মকর্তা, ৪২৩জন সহকারি প্রিসাডিং কর্মকর্তা ও ৮৪৬জন পোলিং কর্মকর্তা। #

পাঠকের মতামত: