ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

শহরের বড় বাজারে বেপরোয়া মাদক সম্রাজ্ঞী ‘বিয়ানী’

এম.এ আজিজ রাসেল :: করোনায় বদলে গেছে মানুষের নানাবিধ কর্মকাণ্ড। নিজের জীবন রক্ষা নিয়েই ব্যস্ত প্রায় সবাই। তবে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেও থেমে নেই মাদক চক্র। পর্যটন শহরের বড় বাজারে এই চরম বিপর্যয়কে কাজে লাগিয়ে অনেকটা বেপরোয়াভাবে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে মাদক সম্রাজ্ঞী খ্যাত আবু জাফরের স্ত্রী রোকসানা আক্তার ওরফে বিয়ানী। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সে দিন-রাত বিক্রি করে যাচ্ছে ইয়াবা, গাঁজা, মদ ও হেরোইন। ফলে ধংসের পথে ধাবিত হচ্ছে এলাকার যুবসমাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বড় বাজারের মাছ বাজারের পাশেই ভাড়া বাসায় মাদকের নিরাপদ আস্তানা গড়ে তুলেছে ‘বিয়ানী’ নামক এক শীর্ষ নারী মাদক কারবারী। ওই বাড়ির মালিক টাকার লোভে বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে আছে। তার স্বামী আবু জাফর ও মেয়ের জামাতা ইয়াছিনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সে প্রতিনিয়ত বিস্তৃত করছে মাদকের নেটওয়ার্ক। প্রতিদিন তার বাড়িতে ইয়াবা, গাঁজা, মদ ও হেরোইনের আসর বসে। মাদকসেবীরা মাদকের টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে নানা অপকর্মে। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। অভিযোগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় অসাধু কর্তাকে ম্যানেজ করে সে নির্ভিঘ্নে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা কেউ মুখ খোলার সাহস পাননা। আর মুখ খুললেও দেয়া হয় হামলা-মামলাসহ নানা হুমকী-ধমকী।

সম্প্রতি এই মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে পেশকার পাড়া সমাজ কমিটির নেতৃবৃন্দ। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবাদ সমাবেশে মাদক কারবারী বিয়ানীকে গ্রেফতার করে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেছেন পেশকার পাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি আবদুল খালেক

ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভুট্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

পেশকার পাড়া সমাজ কমিটির নির্বাহী সদস্য যুবনেতা নুরুল ইসলাম বাদশা বলেন, তার কারণে বিনষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। বিপদগামী হচ্ছে উঠতি বয়সের তরুণেরা। তার লাগাম টানতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

সচেতন মহল মনে করছেন তার বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। যা সমাজের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এছাড়া এই কুখ্যাত নারী মাদক ব্যবসায়ী বিয়ানীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় সামাজিক অবক্ষয়ের পাশাপাশি বাড়বে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ। এলাকাবাসী তার খুঁটির জোর কোথায় তা উন্মোচন করতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, মাদক ব্যবাসায়ীরাও করোনার মাঝেই নানা কৌশলে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোন মাদক ব্যবসায়ী ছাড় পাবে না। মাদকের বিরুদ্ধে সবসময় জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মাদক নির্মূলে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যুবসমাজকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না আমরা। মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযান চলবে। বড় বাজারের ওই নারী মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

পাঠকের মতামত: