ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে ৭১টি ইউপি নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের হিড়িক

নিউজ ডেস্ক :: কক্সবাজারে ৭১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর হিড়িক পড়েছে। একজন আরেকজনকে কোনভাবেই ছাড় দেবেননা এমন মনোভাব নিয়েই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এতে দলের তৃণমুল পর্যায়ে বিভাজন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।

প্রতীক পেলেই নির্বাচিত হবেন এমন প্রত্যাশা নিয়ে জেলাব্যাপী প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর হিড়িক পড়েছে। নিজের জনপ্রিয়তা কতটুকু আছে তা যাচাই না করেই অনেকেই জোর তৎপরতা শুরু করেছেন। একটি ইউনিয়নে এক ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশীও রয়েছেন। কক্সবাজার সরকারি কলেজের একজন সহযোগী অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে দলের নেতাকর্মীদের মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে যেভাবে হিড়িক পড়েছে তা কোন ভাবেই কাম্য নয়। যারা মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তাঁরা মুলত কতটুকু জনপ্রিয় নিজেই উপলব্ধি করতে পারেন। জনপ্রিয়তা না থাকলে প্রতীক পেলেই যে নির্বাচিত হবেন এমন মানসিকতা পরিহার করতে হবে। তাই দলের মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তাকে অগ্রাধিকার দিলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতনা। মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাও অনেক কমে যেত। অনেকেই দলীয় মনোনয়ন পেলে কারো উপর নির্ভরশীল হয়ে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন। এটি গণতন্ত্রের চর্চার ঠিক বিপরীত। দলের মনোনয়ন ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা ও শিক্ষাগত যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। তখনই যোগ্য প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম চকরিয়া নিউজকে জানিয়েছেন, যেভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে এতে দলের তৃণমুল পর্যায়ে বিভাজন অনিবার্য হয়ে উঠবে। বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়নে যেভাবে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একজন আরেকজনকে ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে গনসংযোগ করে যাচ্ছেন এতে ইতোমধ্যেই বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে।

পরবর্তিতে এই বিভাজন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। তাই এখনই বিষয়টি শীর্ষ নেতাদের নজরে আনা প্রয়োজন। কক্সবাজার সোসাইটির সভাপতি কমরেড গিয়াস উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় রয়েছে। যার ফলে মনোনয়ন পেলে সহজেই বিজয়ী হবেন এমন প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। এদের নেতিবাচক প্রচারণার কারণে মানুষ ভোট বিমুখ হয়ে পড়েছে। নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে আসছে না। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমন অবস্থা মানুষ দেখেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে কম এসেছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গণসংযোগের নামে নেতিবাচক প্রচারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সুত্রে জানা যায় মহেশখালীর মাতারবাড়ি ইউনিয়নে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন ১১ জন। গত ইউপি নির্বাচনে কুতুবজুমে একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও এখন মনোনয়ন চান ৫ জন।  চকরিয়ার বদরখালীতে মনোনয়ন প্রত্যাশীর বেড়ে ১ জন থেকে হয়েছে ৬ জন। প্রতিটি ইউনিয়নেই রয়েছে এমন প্রতিযোগীতা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় আগামী ফেব্র‍ুয়ারী ও মার্চ মাসেই অনুষ্টিত হবে কক্সবাজারের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। জেলায় ৭১টি ইউনিয়ন থাকলেও ২টি আরো এক বছর পরে অনুষ্টিত হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন এর বিষয়ে কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা আসবে আমরা সেভাবেই কাজ করব। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মনোনয়ন চুড়ান্ত করবেন। তিনি যেভাবে নির্দেশনা দেবেন আমরা সেভাবে এগিয়ে যাব।

পাঠকের মতামত: