ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিল পরিশোধ  না করায় হস্তান্তর করছে না কর্তৃপক্ষ

সৌদিতে মর্গে পড়ে আছে চকরিয়ার বাসিন্দা প্রবাসী শহীদুলের লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: সৌদি আরবের একটি হাসপাতালের মর্গে ১৮ দিন ধরে পড়ে আছে প্রবাসী শহীদুল ইসলামের লাশ। সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করতে না পারায় লাশটি হস্তান্তর করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে লাশটি দাফন করা যাচ্ছে না।

মর্মান্তিক এই ঘটনার শিকার শহীদুল ইসলামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ার কাকারা ইউনিয়নের প্রপার কাকারা গ্রামে। তাঁর বাড়িতে এখনো চলছে কান্নার রোল।

সৌদি আরব থেকে শহীদুলের বড় ভাই মোজাম্মেল হক চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন হাসপাতালে যোগাযোগ করে শহীদুলের পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে লাশটি ছাড় করার জন্য অনুরোধ করছি। কিন্তু বিল পরিশোধ না করলে তারা লাশ দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। আমাদের এমন আর্থিক অবস্থা নেই যে এত টাকা পরিশোধ করে লাশ নিয়ে আসব।’

শহীদুলের স্বজনরা চকরিয়া নিউজকে জানান, ২০০৪ সাল থেকে সৌদি আরবে বৈধ ভিসায় রাজ মিস্ত্রির কাজ করছিলেন শহীদুল। দেশে তাঁর স্ত্রী, তিন মেয়ে ও মা রয়েছেন। তিন মাস বাড়িতে থাকার পর সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তিনি সৌদিতে কর্মস্থলে চলে যান। কর্মরত অবস্থায় গত ২ আগস্ট হঠাৎ শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে বন্ধুরা তাঁকে স্থানীয় আসির এলাকার ‘সৌদি-জার্মান হাসপাতালে’ ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ আগস্ট মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সৌদিতে থাকা স্বজনরা শহীদুলকে সৌদিতেই দাফনের সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানান।

কিন্তু হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার বিল আসে ৮৭ হাজার ৯৫০ রিয়াল। এর মধ্যে ১৫ হাজার রিয়াল চিকিৎসার সময় জমা দেয় শহীদুলের পরিবার। বাকি ৭২ হাজার ৯৫০ রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা) দিতে না পারায় লাশটি ছাড়ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কাকারা ইউনিয়নে শহীদুলের বড় ভাই মোহাম্মদ সেলিম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কতটা দুর্ভাগ্য যে লাশটি এখনো দাফন করতে পারলাম না! তার (শহীদুল) ছোট্ট মেয়েটি মাত্র এক মাস বয়সী। বড় মেয়েটি ছয় বছরের। পরিবারের সদস্যদের কান্না কখনো থামবে কিনা জানি না।’

কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত ওসমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী শহীদুলের লাশ দাফন সৌদি আরবে সম্পন্ন করার জন্য আমি আবেদনে স্বাক্ষর করেছি। আমি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কাছে আবেদন জানাচ্ছি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সরকারি তহবিল থেকে টাকা দিয়ে যাতে দ্রুত লাশটি দাফন করা যায়।’

পাঠকের মতামত: