ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

মহেশখালীতে জেটি স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি

004হারুনর রশিদ, মহেশখালী :::

মহেশখাল জেটিঘাটের নাজুক পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং কক্সবাজারের মূল ভুখন্ডের সাথে সংযোগ স্থাপনের দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি।মহেশখালীর জনগনের যাতায়তের একমাত্র জেটিটির সম্প্রসারন না হওয়া অথবা খালটি ড্রেজিং না করায় প্রতিদিন ভাড়ার সময় মহেশখালীÑকক্সবাজার ফেরিপারাপারে যাত্রীদের চরম দূভোর্গের সম্মূখীন হতে হচ্ছে। প্রতি বছর এ জেটি থেকে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও জেটি সম্প্রসারন বা খালটির ড্রেজিং করার ব্যাপারে কারো মাথা ব্যথা নেই। প্রতিদিন ভাটায় যাত্রীরা পারা পারের সময় দূর্ঘটনার কবলে পড়ে অসংখ্য নারী পরুষ শিশু আহত হয় । এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জহির উদ্দীনের নেতৃত্বে শতাধিকের একটি প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম ও সহকারী কমিশনার(ভুমি) নোমান হোসেনের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করে গত ১৩ এপ্রলি দুপুরে।
জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটার পূর্ব পাশে ১৯৮৮ সালে ৫০০মিটার দৈর্ঘ্য ও ২০০০ সালে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে জেটি ১০০ মিটার সম্প্রসারন করা হলেও জেটিটি এলাকা দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভাটার সময় যাত্রীদের চরম দূর্ভোগ শিকার হতে হচ্ছে।বিশেষ করে ভাটার সময় যাত্রীদের জেটি থেকে নৌকায় ৫টাকা ভাড়া দিয়ে বোটে উঠতে হয় । এসময় অনেকেই দূর্ঘটনার কবলে পড়ে। কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে যাত্রীরা ভাটার সময় যাতায়ত করছে। মহেশখালী জেটির পাশাপাশি কক্সবাজার জেটিঘাটের অবস্থা আরো করুণ। কোন বিকল্প পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে মহেশখালীর সাড়ে ৪ লক্ষাধিক জনগন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কক্সবাজার পারা পার করছে। এমনকি নারী পুরুষ, শিশু বৃদ্ধারা ভাটার সময়ে কাদা মাটি ও হাটু পানি পাড়ি দিয়ে কাপড় ভিজিয়ে জেটিঘাটে আসতে হয়।
005মহেশখালী পৌরসভার পৌর সিটিজেন ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর পারভেজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এই জেটি থেকে প্রতি বছর কোটি টাকার সরকার রাজস্ব আদায় করলেও জেটিটি সম্প্রসারন না করা, টয়লেট না থাকায় যাত্রী পারা-পারের করুন পরিনতি। তাই জেটি সংস্কার করার পাশাপাশি সম্প্রসারন করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন ।
স্মারকলিপি সুত্রে ও উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান জহির উদ্দীন জানান, মহেশখালীর উৎপাদিত লবন, পান, চিংড়ী জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আপনার সরকার মহেশখালী অবকাঠামো উন্নয়ন, লবন আমদানী বন্ধকরণ, শিক্ষাদীক্ষার প্রসার, তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সহ দু’টি বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ছয়টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ইত্যাদি ঘোষিত উন্নয়ন কর্মসূচী দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। জেলা সদরে নৌ পথে জেটিঘাট দিয়ে মহেশখালীর চার লক্ষ জনগণ বিভিন্ন কাজে কক্সবাজার সদরে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু কিছু সংখ্যক লুঠেরা, মুনাফাখোরদের প্রবল অত্যচার ও নির্যাতনের কারনে মহেশখালীবাসী জেলা সদরের সাথে দৈনন্দিন যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশাল বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। সামুদ্রিক জোয়ারের সময় কোন মতে যাতায়ত করতে পারলে ও ভাটার সময় যাতায়াত করা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। এমনকি নারী পুরুষ যাত্রী সাধরণকে ভাটার সময় এক কিলোমিটার পথ পানি ও কাঁদা মাটির মধ্যে হেটে জরাজীর্ন কাটের বোট কিংবা ষ্পীড বোটে উঠে কক্সবাজার শহরে যেতে হয়। কিন্তু বিধিবাম, কক্সবাজার শহরের ৬নং জেটিঘাটের ও একই অবস্থা সেখানে কাঁদা মাটি ও পানির মধ্যে হেটে যাত্রী সাধারনকে শহরে পৌঁছতে হয়। তার উপর অবৈধ ও অনৈতিক ভাবে যাত্রী সাধারণ ও হাতে থাকা মালামালের উপর জোর পূর্বক টোল আদায়ের প্রতিযোগিতা চলে।
দেশের স্বাধীনতার স্থপতির কন্যা হিসেবে সাধারণ জনগণের আকুন্ঠ সমর্থনের প্রতি একটু দৃষ্টি দিয়ে জেটিঘাটে অবৈধভাবে অদায়কৃত টোল সমূহ বন্ধ ও উভয় জেটিঘাটের সমস্যা সমাধান করে নাগরিক জীবনে স্বস্তি আনায়নে আপনি কার্যকর ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় নির্দেশ, মহেশখালীবাসীকে রাহু দশা থেকে মুক্তি প্রত্যাশা করেন। স্মারকলিপি প্রদান উপস্থিত ছিলেন, সাবেক পৌর কমিশনার নরুল ইসলাম, প্রভাষক সাহেদ খান, সাবেক মেম্বার রাহমত উল্লাহ, বাদশা মিয়া, মওঃ মাহাবুব আলম, মওঃ আবদুর রহিম, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন,এস এম তারেক, আবুল কাসেম প্রমুখ।এ ব্যপারে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল কালাম জেটি ঘাটের জনদূর্ভোগের বিষয়ে স্বারকলিপি পাওয়ার পর , সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন – জনগণের দূর্ভোগের বিষয়টি আসলে খুবই মর্ম্মহত; স্মারকলিপিটি যথাযত নিয়মে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: