ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

দোকান খোলা ক্রেতা নেই মার্কেট গুলোতে

লাবণ্য রাণী পূজা, নিজস্ব প্রতিবেদক ::
আগের মত নেই মানুষের ভিড়, নেই বেচাকেনার ব্যস্ততা। একপ্রকার ঝিমিয়ে আছে মার্কেটের সবগুলো দোকান। ফুচকার দোকানে নেই ফুচকা প্রেমীরা। খালি পড়ে আছে প্রতিটি খাবারের দোকান। ক্রেতা নেই কাপড়ের দোকানে। ক্রেতাশূন্য কসমেটিক্সের দোকানও। এমন অলস সময় পার করছেন সব দোকানি। সারা দিন এক টাকাও বিক্রি হয়নি এমন দোকানের সংখ্যাই বেশি।

অথচ একটা সময় সকাল থেকে রাত অবধি ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখর থাকতো নগরীর ষোলশহর এলাকায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স। এখানে প্রতিদিনই বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ-তরুণীদের চলতো আড্ডা, বিয়ের বেচা-কেনাসহ সাধারণ ক্রেতাদের সমাগম। শুধু ঈদ, পূজা-পার্বণেই নয় ক্রেতার সমাগম ছিল সারা বছরই। অথচ মলটির সেই চির চেনা দৃশ্য আজ বড় অচেনা। পুরো মলটি ঘুরে হাতে গোনা কয়েকজন নারী ক্রেতার উপস্থিতি দেখা যায়। তারাও আবার এসেছেন অতি প্রয়োজনে। কিনেছেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস।

বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে যায় ছোট-বড় সবগুলো শপিংমল। এরমধ্যে চলে যায় রমজানের ঈদ। অথচ ব্যবসায়ীরা রমজানের একটি মাসের জন্য অপেক্ষা করেন সারাবছর। করোনার ফলে প্রচুর লোকসান গুনতে হয় তাদের। অন্যদিকে বেচাকেনা না থাকলেও মাস শেষে ব্যবসায়ীদের গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের দোকানভাড়া। দিতে হচ্ছে কর্মচারীদের বেতনও।

কথা হয় চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স দোকান কর্মচারী ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদ মঞ্জুর সাথে। তিনি বলেন, আমরা সাধারণ ব্যবসায়ী, দোকানের মালিক নই। আমরা ভাড়ায় দোকান নিয়ে সেখানে ব্যবসা করি। এ দুর্দিনে আমরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি পরিবার-পরিজন নিয়ে, দোকানের কর্মচারীদের বেতন ও মাসশেষে মোটা অংকের দোকান ভাড়া নিয়ে।

অথচ সারাদিন এক টাকার বিক্রিও নেই আমাদের। এছাড়া করোনর কারণে ২৫ মার্চ থেকে টানা দুই মাস ১০ দিন মার্কেটটি বন্ধ ছিল। এ সময়ও আমাদের দোকানের ভাড়া দিতে হচ্ছে মালিকদের। দিতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও। চিটাগং শপিং কমপ্লেক্স মালিক সমিতি সংগঠনের কাছে আমরা অনেক আগে থেকে লিখিতভাবে অনুরোধ করি যাতে আমাদের কয়েক মাসের ভাড়া মওকুফ করে।

কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। আমাদের বেচাকেনা না হলেও কিন্তু মাস শেষে আমাদের একজন ব্যবসায়ীর কম হলেও প্রায় এক লাখ টাকা খরচ আছে। এই যেমন কর্মচারীদের বেতন, প্রতিদিনের নাস্তা, যাতায়াত খরচ, সমিতির খরচ ইত্যাদি।

চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স দোকান কর্মচারী ইউনিটের সভাপতি আফাজ উদ্দিন আফসার বলেন, শহরের প্রায় অনেক শপিংমলে দুই মাসের ভাড়া মওকুফ করেছে মার্কেট মালিক সমিতি। এ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা এরকম কোনো সুযোগ এখনো পায়নি। এখন আমাদের কথা তাদের ভাবা উচিত। না হয় আগামীতে আমরা মানববন্ধন করবো এবং ভাড়া কমানোর জন্য দাবী জানাব।

এ বিষয়ে চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা চকরিয়া নিউজকে বলেন, আমরা দোকান ভাড়ার বিষয় নিয়ে ভাবছি। তারা যেমন সমস্যায় পড়েছে আমরাও একই সমস্যায় আছি। আমাদেরও এসব কাটিয়ে উঠতে সময় দেয়া দরকার।

পাঠকের মতামত: