ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

স্বস্তির বৃষ্টি পেয়ে আমন ধানের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সদরের কৃষক

শাহীন মাহমুদ রাসেল :: আষাঢ়ের ২২ দিন পরে হলেও কক্সবাজারে দেখা মিলেছে না ভারি বৃষ্টিপাতের। কিছুদিন আগে হঠাৎ দুইদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে কিছু কিছু রাস্তাঘাট ও কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। এরপর থেকে আর তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। বর্ষার আগমনী বার্তা নিয়ে মাঝে মধ্যে হঠাৎ জেলার বিভিন্ন এলাকা জুড়ে দেখা দেয় স্বস্তির বৃষ্টি। এই বৃষ্টির পর থেকে উপজেলার মাঠ জুড়ে বর্ষা মৌসুমের রোপা আমন ধানের বীজতলা তৈরী ও বীজতলায় বীজ ধান রোপনে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন এই অঞ্চলের কৃষকরা।

জানা যায়, এই জেলায় বোরো ধানের চাষ তেমন হয় না। ধানের চেয়ে সবজী চাষ করেই অধিক লাভবান হয় কৃষক। শুধু প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন ধানের চাষ করে থাকে। কিন্তু চলতি মৌসুমে সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রোপা আমন ধান চাষে বিলম্ব হয়ে গেছে। ফলে অনেক চাষী হতাশ হয়েছেন।

সরেজমিনে গতকাল রবিবার (৫ জুলাই) সদরের খরুলিয়া, দরগাহ, বাংলা বাজার ও পিএমখালীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কৃষকরা রোপা আমন ধান চাষের জন্য পূর্ব প্রস্ততি হিসেবে বীজতলা তৈরী ও বীজতলায় ধান রোপন করছেন কেউ বা ধান চাষের জমি প্রস্তুত করছেন।

এসময় শত ব্যস্ততা দেখেও কথা বলতে চাইলে খরুলিয়ার ধান চাষী সামশুল আলম প্রতিবেদক কে বলেন, প্রতিবছর এই সময় আমাদের ধানের চারা তৈরী হয়ে যায় এবং শ্রাবণ মাসের শুরু থেকে মাঠে মাঠে রোপা আমন ধান রোপন শুরু হয়। কিন্তু এই বছর সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমরা ধানের চারা তৈরি করতে পারি নাই। দেরিতে হলেও গতকাল একটু বৃষ্টি হওয়ায় আজ বীজতলায় ধানের চারা দিচ্ছি।

উত্তর পাতলী গ্রামের ধান চাষী জামাল উদ্দিন বলেন, সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবছর ধানের চাষ পিছিয়ে গেছে। ধান চাষী মোঃ হাকিম বলেন, সেচ দিয়ে ধান চাষ অনেক খরচের বিষয়, আমাদের এই অঞ্চলের প্রায় কৃষকই সবজী চাষী এদের নিজের জমি নেই, এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষ করে থাকে। এমনিতেই যে টাকা খরচ করে ধানের চাষ করা হয় ধান বিক্রয় করে সে টাকা আয় হয় না। এছাড়াও প্রতিটি জমিতে পানি সেচের সুব্যবস্থা না থাকায় বেশি টাকা ব্যায় করে পানি সেচ দিয়ে চাষবাদ করার সামথ্য সবার নেই। তাই আমরা আষাঢ়ের বৃষ্টির পানিতেই বর্ষা মৌসুমের রোপা আমন ধানের চাষ করে থাকি।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ গোলাম সরওয়ার তোষার বলেন, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলার ৮ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই উপজেলায় বোরো ধানের চাষ তেমন না হওয়ায় শুধু বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিতে এই অঞ্চলের চাষীরা রোপা আমন ধানের চাষ করে থাকেন। প্রতিটি এলাকাতেই কৃষকরা বীজ তলা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন। এবছর বৃষ্টিপাত একটু দেরিতে শুরু হলেও চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষমাত্র পুরণ হবে বলে তিনি মনে করছেন।

পাঠকের মতামত: