ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চালের বাজার অস্থিতিশীল করলে আমদানি করা হবে মিলারদের প্রতি খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্ক :: দেশের মিলারদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি কেউ চালের মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করে তাহলে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

বুধবার ‘বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা’ শীর্ষক সভায় মন্ত্রীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ সব কথা বলেন।

সভার সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। উপস্থিত ছিলেন দেশের আট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির দু’জন করে প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

চালকল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন। সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী গুদামে চাল সরবরাহ করেন। যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায় না, গেলে মিলারদের লস হবে এবং যে সব কৃষক ধান ধরে রেখেছে তারাও লোকসান করবে। এ সময় যে সব মিল এগিয়ে আসবে তাদের এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করতে ইতিমধ্যে অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে সব মিলকে পরে সেভাবে মূল্যায়ন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী আরও বলেন, করোনাকালীন সবাই বিপদগ্রস্ত। এবার না হয় লাভ একটু কম করলেন। প্রত্যেকবার লাভ সমান হয় না। এবার মানুষকে সেবা করার সুযোগ রয়েছে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন।

২০১৭ সালের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিল মালিকদের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে হাওরে বন্যার সময় সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির ওপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল ফলে ৪০ লাখ টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। সে কারণে সেই বছর মিল মালিক এবং কৃষক উভয়ে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষক বাঁচলে ধান উৎপাদন হবে এবং আপনারা চালকল মালিকরা বেঁচে থাকবেন। কৃষক যাতে বিপাকে না পড়ে, বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক যেন ধানের ন্যায্যমূল্য পায় সে জন্য এবার আট লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মন্ত্রী মিলগেট থেকে কোন্ ধান কত দামে বিক্রি হচ্ছে তা যাচাই এবং মনিটরিংয়ের জন্য উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

সঠিক সময়ে চাল দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক একটা সিলিং করে নেন- কখন, কী পরিমাণ চাল সরকারি খাদ্যগুদামে সরবরাহ করবেন। সরকার সব ব্যবসায়ীকে প্রণোদনা দিচ্ছে। সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন বলে উপস্থিত মিল মালিকদের অবহিত করেন।

এ সময় সরকারিভাবে চালের মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই হবে না বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যেহেতু খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সঙ্গে আপনাদের ব্যবসা সব সময় করতে হবে, লাভ বেশি হলে চাল সরবরাহ করবেন, লাভ কম হলে চাল সরবরাহ করবেন না- এটা হতে পারে না।

সভায় উপস্থিত বরিশাল বিভাগ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, গত বোরো মৌসুমের শেষ দিকে কৃষক ধান বিক্রি করে মণপ্রতি ভালো লাভ করেছিল, এবারও বেশিরভাগ কৃষক যে যতটুকু পারে সেই পরিমাণ ধান নিজেদের কাছে ধরে রেখেছে। তাদের আশা এবারও শেষ দিকে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারবে।

পাঠকের মতামত: