ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

করোনার দুর্দিনে চকরিয়া থানার ওসির মানবিক সহায়তায় খুশি আবুশমা: পেলেন বেতনের টাকা

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: ভালো কাজের জন্য যেমন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর নামে গুনকীর্তন আছে, তেমনি নৈতিবাচক কাজের জন্য আছে নানাধরণের সমালোচনা। অপরাধ প্রবণতার বটবৃক্ষ উৎপাটন কিংবা অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমন করতে যেমন পুলিশের আছে সাহসী ভুমিকা। আবার ক্ষেত্র-বিশেষে প্রেক্ষাপটের আলোকে অনৈতিক ঘটনার জন্ম দিয়ে সমালোচিত হবার আশঙ্কাও আছে পুলিশের। এসব কর্মযঞ্জের মধ্যেও হঠাৎ একটি ভালো কাজের জন্য পুলিশ বাহিনী হয়ে উঠে জনগনের আশা ভরসার আশ্রয়স্থল। তেমনি একটি ঘটনার আলোকে মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলাবাসির কাছে আস্থাঅর্জন করেছেন থানার ওসি মো.হাবিবুর রহমান।

ঘটনা প্রবাহ: দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরের সুবজবাগ এলাকায় এক প্রবাসির বহুতল ভবনে পাহারাদার হিসেবে কাজ করতেন সত্তরোর্ধ্ব আবু শামা। প্রতিমাসে ছয় হাজার টাকা বেতনে তিনি কাজ করলেও নিয়মিত পাওনা পরিশোধ করছিলেন না বাড়ির মালিক প্রবাসী আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার।

এরই মধ্যে চলতি ২০২০ সালের মার্চ মাসে শুরু হয় দেশে করোনা পরিস্থিতি। এই সুযোগে বাড়ির মালিক প্রবাসী ওই বৃদ্ধকে বিভিন্ন অজুহাতে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু সাত মাসের বকেয়া থাকা বেতনের ৪২ হাজার টাকা পরিশোধ করেননি ওই প্রবাসী। উল্টো মিথ্যা অপবাদ এবং ধমক দিয়ে চলে যেতে বাধ্য করেন বৃদ্ধকে।

চাকুরী হারিয়েছেন, পাননি বকেয়া বেতনের ৪২ হাজার টাকা। বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অর্থসংকটে পড়ে যান করোনার এই সময়ে। বুধবার রাতে বিষয়টি থানায় উপস্থিত হয়ে সত্তরোর্ধ্ব আবু শামা জানান চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমানকে। তিনি তাৎক্ষণিক থানার কমিউনিটি পুলিশ কর্মকর্তাকে (এসআই আবদুল্লাহ আল মাসুদ) পাঠিয়ে পৌরসভার সবুজবাগস্থ প্রবাসী আনোয়ারুল ইসলাম সিকদারকে থানায় ডেকে নিয়ে বিষয়টি জানতে চান।

এ সময় ওসির কক্ষে বসা ছিলেন পাহারাদার বৃদ্ধ আবু শামা। তখন প্রবাসী স্বীকার করেন, ওই বৃদ্ধের সাত মাসের বেতন বাবদ তাঁর কাছে ৪২ হাজার টাকা পাওনা রয়েছেন। সেই টাকা কিছুক্ষণের মধ্যে ওসির কাছে হস্তান্তর করেন প্রবাসী আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার। পরে সেই টাকা বৃদ্ধ আবু শামার হাতে তুলে দেন ওসি।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বাবার বয়সী এমন একজন বৃদ্ধের সাথে প্রবাসী যে আচরণ করেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক প্রবাসীকে হাজির করে বকেয়া থাকা বেতনের টাকা উদ্ধার করে দিই। এরপর পুলিশের গাড়িতে করে নিজ বাড়ি ডুলাহাজারায় পৌঁছে দিয়ে আসি।

বেতনের বকেয়া টাকা হাতে খুশি বৃদ্ধ আবু শামা। তিনি বলেন, চকরিয়া থানার ওসি না হলে আমি এই টাকা পেতাম না। আর এই টাকা না পেলে আমার পরিবারের বড় ধরণের ক্ষতি হতো। পাশাপাশি মিথ্যা অপবাদ নিয়ে আমাকে এলাকায় চলাফেরা করতে হতো। মানবতাবাদী পুলিশ আছে বলেই আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। #

পাঠকের মতামত: