ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ভাঙাচোরা সড়কে দুর্ভোগ বাড়ছে চরমে….

কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::  সম্প্রতি কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিত নেমে যাওয়ার পর কক্সবাজারের চকরিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো ও এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন বেশ কয়েকটি সড়কের ক্ষতচিহৃ ভেসে উঠেছে। এসব সড়ক ও গ্রামীণ অবকাঠামোর বিভিন্নস্থানে ধসে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বা জনগণের চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। করোনাকালে আষাঢ়ের প্রথম একটানা বর্ষণে এসব সড়ক ও গ্রামীণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার চকরিয়া নিউজকে জানান, এবারের আষাঢ়ের বর্ষার প্রথমেই কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে তার ইউনিয়ন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বেশি ক্ষতির সম্মুখিন হয় গ্রামীণ অবকাঠামোসহ বেশ কয়েকটি সড়কের। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক দ্রুত সংস্কার করা না হলে জনগণের চলাচলে দুর্ভোগ বাড়বে।

তিনি জানান, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন শান্তিবাজার থেকে বরইতলী হয়ে হারবাং পর্যন্ত কার্পেটিং সড়কের ৬০ ফুট, বরইতলী-ডেইঙ্গাকাটা সড়ক, একতা বাজার থেকে পোকখাইয়্যার ঝিরি সড়ক, নাশিরমুখঢাকা ছড়ার পূর্বকূল সড়ক, পহরচাঁদা-গোবিন্দপুর সড়ক।
স্থানীয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান জালাল আহমদ আরো জানান, এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন শান্তিবাজার থেকে বরইতলী হয়ে হারবাং পর্যন্ত কার্পেটিং সড়কের চাঁদের বাপের পাড়া অংশে জরুরি ভিত্তিতে একটি কালভার্ট প্রয়োজন । এই কালভার্ট না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে এবং বরইতলী ছড়ার পানিতে চাঁদের বাপের পাড়া, শান্তিবাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

কাকারা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত ওসমান চকরিয়া নিউজকে জানান, ইউনিয়নে এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন শাহওমরাদ টু দিঘিরপাড় সড়ক, দক্ষিণ কাকারা মুক্তিযোদ্ধা মেনিবাজার মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম ছিদ্দিকী সড়ক, প্রপার কাকারা প্রধান সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাতামুহুরী নদীতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির ধাক্কায়। এছাড়াও ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন, বিএমচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলমও জানিয়েছেন তাদের ইউনিয়নের গ্রামীণ অবকাঠামো তছনছ হয়ে যাওয়ার কথা। তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনপূর্বক অতিদ্রুত সড়কগুলোর সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা এবং সড়কগুলো পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করছি। যাতে জনগণের চলাচলের জন্য দ্রুত এসব সড়ক সংস্কার করা যায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘বর্ষার শুরুতে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামত করে চলাচল উপযোগী করে দিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমি নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছি প্রতিদিনই।’

চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী কমল কান্তি পাল চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে যেসব সড়ক অতিবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব সড়কের ক্ষতি নিরূপনপূর্বক ঊর্ধতন কর্র্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে বরাদ্দ দিয়ে এসব সড়ক মেরামতের মাধ্যমে চলাচল উপযোগী করে দেয়া হবে।’

পাঠকের মতামত: