ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চালের বাজারে সরবরাহ কমিয়ে, দাম বাড়িয়েছেন মিল মালিকরা আড়তদার ও ভোক্তাদের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  আবারও ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম বস্তায় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত। গত মাসে বোরো ধান ঘরে উঠেছে। ধান-চালের সংকট না থাকা সত্ত্বেও একশ্রেণির মুনাফাখোর মিল মালিক কারসাজি করে এই দাম বৃদ্ধি করেছেন। সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যস্ত আর ব্যবসায়ীরা চালের দাম বৃদ্ধিতে ব্যস্ত রয়েছেন এমন অভিযোগ ভোক্তাদের।
কয়েকজন চালের আড়তদার জানান, হঠাৎ করে মিল মালিকরা বাজারে চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। সরকার তাদের কাছ থেকে চাল কেনার কারণে তারা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। যদিও সরকার কেবল মোটা চাল কিনছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চিকন চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে মিল মালিকরা একযোগে ধান কিনে মজুদ করার কারণে মণপ্রতি ধানের দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা। গত মাসেও কৃষকের ঘরে নতুন ধান উঠার জেরে দাম কমেছিল। সেই হিসেবে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নাজিরশাইল, জিরাশাইল (সিদ্ধ), মিনিকেট (সিদ্ধ), বাসমতি (সিদ্ধ), স্বর্ণা (সিদ্ধ), বেতি, পাইজাম (আতপ), মিনিকেট (আতপ), কাটারীভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ৩৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৫০ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ ৪০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ৩৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকা। এছাড়া স্বর্ণা সিদ্ধ ৩০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়। অপরদিকে মিনিকেট আতপ ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকা, মোটা সিদ্ধ ২০০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯৫০ টাকায়, নাজিরশাইল সিদ্ধ ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮৫০ টাকা, বেতি আতপ ২৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯৫০ টাকায়। অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে কাটারিভোগ আতপ ও চিনিগুড়া চালের দাম। চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকায় এবং কাটারিভোগ আতপ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, সরকার মিল মালিকদের কাছ থেকে কেজি ৩৬ টাকা দরে মোটা চাল কিনছে। এই কারণে কুষ্টিয়া, দিনাজপুর ও আশুগঞ্জের মিল মালিকরা বাজারে চালের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। একইসাথে তারা চিকন চালের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। যা একেবারে হওয়ার কথা নয়। সরকার তো আর চিকন চাল কিনছেন না। পুরো দেশের মানুষের নজর এখন করোনাভাইরাস পরিস্থিতির দিকে। সরকারের নীতিনির্ধারকরাও করোনা প্রতিরোধে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এই সময়টাতে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়াচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ আগেও শুধুমাত্র পাহাড়তলী বাজারে প্রতিদিন প্রায় দেড়শত গাড়ি চাল আসতো। এখন আসছে একশত গাড়ি।
চট্টগ্রাম চাউল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম বলেন, ধানের দাম বাড়ার কারণে চালের দাম বাড়ছে। প্রতি তিন মণ ধান থেকে এক মণ চাল পাওয়া যায়। প্রতি মণ ধানের দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। ধানের দাম কমে গেলে আশা করি চালের দামও কমে যাবে।

পাঠকের মতামত: