ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কুতুবদিয়ায় জোয়ারে ঘর ভাঙ্গা মানুষের ঈদের আমেজ নেই

নিজস্ব প্রতিনিধি, কুতুবদিয়া ::
ঈদের আনন্দ কি জিনিসি তা বুঝে না জোয়ারে ঘর ভাঙ্গা পরিবারগুলো। রমাদানের রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ, কবি কাজি নজরুল ইসলামের এই গানের খুশির ভাগিদার হতে পারেনি বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়া পরিবারের লোকজন। ঈদের আনন্দের জন্য নতুন জামা তো দূরের কথা পুরনো জামা খোঁজে পায়নি। তিল তিল করে গড়ে তোলা সুখের সংসার স্বপ্ন পূরণে তাসের ঘর একদিনে অর্থাৎ সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ভেঙে নিয়ে গেছে। ঈদের আনন্দের পুরনো জামা তো দূরের কথা সেমাইও তাদের ভাগ্যে জোঠেনি। জোয়ারে তাদের সব কেড়ে নিয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে বাস্তবচিত্রে দেখা গেছে,কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের কায়ছার পাড়া, নয়াকাটা এলাকায় দুই গ্রামের শতাধিক পরিবার (২৫মে) সোমবার ঈদুল ফিতরের আনন্দ উপভোগ করেনি। রমাদানের রোজা রেখেছেন শুধু পানি খেয়ে । ইফতার করেছে একই রকম।
পরিবারগুলোর খবর নিয়ে জানা গেছে,জোয়ার এলেই ঘরভিটি ফেলে আত্নীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিতে চলে যায়। নেই কর্ম, নেই অর্থবিত্ত, যাবে কোথায়! করোনা ভাইরাসের কারণে আত্নীয়ের বাড়িতেও আশ্রয় নেয়া বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা লোকজন।
কাইছার পাড়ার আমেনা বেগম (৬৫) বলেন, করোনা ভাইরাসেন কারণে লকডাউনে থাকা মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। ভিক্ষা করে তার সংসার চলে। লকডাউনের কারণে মানুষের ঘরে গিয়ে হাতপাতা যাচ্ছে না। পরিষদ থেকে কিছু ত্রাণ পেলেও তা চলে না। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে এ এলাকার বাঁধ ভাঙা থাকায় লোকালয়ে জোয়ার ভাটা বসেছে। বাঁধের পাশে ঘর ছিল তা ঘূর্ণিঝড় আম্পানের জোয়ারে ভেঙে গেছে ঘরটি। বর্তমানে প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
স্থানীয় মেম্বার ছলিম উল্লাহ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োগ প্রাপ্ত ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে বাঁধ মেরামত করার কথা থাকলেও যথাসময়ে বাঁধ মেরামত না করায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪/৫ ফুট পানি উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়। এতে শতশত পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়ে।
উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আ,স,ম শাহরিয়ার চৌধূরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসে লকডাউনে থাকা শ্রমজীবি কর্মহীন মানুষের ঘরবাড়ি জোয়ারে ভেঙে যাওয়ায় মারাত্নক দূর্ভোগে পড়েছে। তাদের ঘরে ঈদের আনন্দ নেই বললে চলে।
কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আলহাজ ফরিদুল ইসলাম চৌধূরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, যার ঘর নেই,তার ঈদের আনন্দ থাকার কথা নয়। সমসাময়িক ত্রাণ এসব ঘরহারা পরিবারের কি হবে। তবে জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ মেরামত করা অবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। ঠিকাদার কর্তৃপক্ষকে ভাঙন বাঁধ এক মাসের মধ্যে মেরামত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেন বলে জানান।

পাঠকের মতামত: