ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কুতুবদিয়ায় সংসার চালাতে লবণ শ্রমিকের কাজ করছেন স্বামী পরিত্যক্ত রাজিয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি, কুতুবদিয়া ::
কুতুবদিয়া দ্বীপে সংসার ও একমাত্র মেয়েকে লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করতে লবণ মাঠের শ্রমিকের কাজ করে যাচ্ছে স্বামী পরিত্যক্ত রাজিয়া বেগম। আজ রবিবার (১৭ মে) উপজেলার লেমশীখালী ইউনিয়নে আলী বাপের পাড়া এলাকায় সরজমিনে গেলে স্বামী পরিত্যক্ত রাজিয়া বেগমের লবণ মাঠে পুরুষের ন্যায় কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। জানাযায়, বিগত ১৫ বছর পূর্বে লেমশীখালী ইউনিয়নের আলী বাপের পাড়া এলাকার মৃত আবুল কালামের মেয়ে রাজিয়া বেগমের সাথে একই ইউনিয়নের আকবর আলী সিকদার পাড়া এলাকার মৃত হাজী আব্দু ছমতের ছেলে মৌলভী শাহাজানের সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের মাথায় স্বামী কতৃর্ক তালাক প্রাপ্ত হয়। তখন থেকে স্বামী পরিত্যক্ত রাজিয়া বেগম ছোট্ট মেয়ে উম্মে হাবিবাকে নিয়ে খুব কষ্ট করে দিনাতিপাত করতেন। জীবনের তাগিদে কখনও মানুষের বাড়িতে ঝিয়ে কাজ করতেন। আবার কখনো গার্মেন্টস কর্মীর কাজ করে মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে স্বামী পরিত্যক্ত রাজিয়া বেগমের মেয়ে উম্মে হাবিবা (১৩) লেমশীখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেধাবী ছাত্রী। গত ২ বছর পূর্বে রাজিয়া বেগমের পিতা আবুল কালাম মারা গেলে গার্মেন্টস কর্মীর কাজ ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে আসে। মেয়ের পড়া লেখা চালিয়ে নেওয়ার জন্য এই কর্মট মহিলা পুরুষের ন্যায় লবণ মাঠের শ্রমিকের কাজ করে যাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে লেমশীখালী ইউনিয়নের আলী বাপের পাড়া এলাকায় ৩০ শতক জমি বর্গা নিয়ে লবণ মাঠ শুরু করেন। দিনরাত লবণ মাঠে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন শুধু মাত্র মেয়েকে লেখাপড়া করায়ে মানুষের মত মানুষ গড়ার জন্য। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়ে জীবন যুদ্ধে হার না মানা রাজিয়া। তার মেয়ের লেখাপড়া নিয়ে বর্তমানে শঙ্কিত রয়েছেন। আদৌও কি পারবেন মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। তবে স্বামী পরিত্যক্ত কর্মট রাজিয়া বেগমকে যদি সরকারী ভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলে তার বেঁচে থাকার জীবন যুদ্ধে হার মানবে না। তার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল। এ ব্যাপারে স্বামী পরিত্যক্ত রাজিয়া বেগম বলেন,বিয়ের ১ বছরের মাথায় স্বামী কতৃর্ক তালাক প্রাপ্ত হওয়ার পর আমার গর্ভের সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করবো এ সংকল্প করছিলাম। সেই থেকে আজ পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। কখনো মানুষের বাড়িতে ঝিয়ে কাজ করি,কখন গার্মেন্টস কর্মীর কাজ, কখনো শ্রমিকের কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও লবণের মূল্য কম থাকায় চরম আর্থিক অনটনে দিনাতিপাত করছি। সরকারি ভাবে কোন সুযোগ সুবিধা পেলে আমার মেয়েকে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে কোন সমস্যা হবে না। আমার স্বপ্ন পূরণ হবে।

পাঠকের মতামত: