ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

রামুতে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসকের শাস্তি দাবি, চালের বরাদ্ধে বিমাতাসূলভ আচরণ

সোয়েব সাঈদ, রামু ::  কক্সবাজারের রামু উপজেলায় জেলা প্রশাসকের চালের বরাদ্দে বিমাতাসূলত আচরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রামু উপজেলা আওয়ামীলীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের শতাধিক নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তরে বক্তারা বলেন, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য, তুখোড় পার্লামেন্টারিয়ান, সাইমুম সরওয়ার কমলের বাড়ি রামু উপজেলায়। জনবান্ধব ও সাহসী এ নেতার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে জেলা প্রশাসন কমলের প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামাত নেতাদের সাথে আতাঁত করে পরিকল্পিতভাবে রামু উপজেলায় তুচ্ছ পরিমান বরাদ্ধ দিয়েছেন। বৃহৎ ও অধিক জনসংখ্যার উপজেলা হওয়া সত্ত্বেও রামুতে বরাদ্ধের পরিমান অন্যান্য উপজেলার চেয়ে অনেক নগণ্য। করোনায় দিশেহারা মানুষের সাথে এমন বিমাতাসুলভ আচরণে পুরো রামুবাসী ফুঁসে উঠেছে।

মঙ্গলবার (৫ মে) বিকাল চারটায় রামু চৌমুহনীস্থ উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলায় আরো কম সংখ্যক জনসংখ্যার উপজেলায় ৩০০ মেট্রিক টন (৩ লক্ষ কেজি) এর উপরে বরাদ্দ আর রামুতে জনসংখ্যা ও দারিদ্রতার হার বেশি থাকা সত্ত্বেও মাত্র ১১৯ মেট্্িরক টন (১লক্ষ ১৯ হাজার কেজি) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা রামুবাসীকে ক্ষুদ্ধ করেছে।

গত ০৩ মে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এক বিবৃতিতে বলেছে- রামুতে চাহিদা পত্র অনুযায়ী যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক। এতে রামুবাসী মনে করে চাহিদাপত্র জেলা প্রশাসন সঠিকভাবে নির্ণয় করেনি। স্থানীয় চেয়ারম্যানরা ৩০ হাজার এর অধিক চাহিদাপত্র দিলেও জেলা প্রাশসন মাত্র ৮ হাজার অনুমোদন দিয়েছে। জেলা প্রশাসন চাহিদাপত্র ইচ্ছাকৃত মনগড়া তৈরী করেছে।

রামু উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মনে করেন এ চাহিদাপত্র রামুবাসীকে বঞ্চিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। দারিদ্রতা ও কর্মজীবি মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও মাত্র ৮ হাজার সংখ্যা দেখানো রামু বাসীকে ইচ্ছেকৃত বঞ্চিত করার সামিল।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের ঘরে ঘরে ত্রান পৌছে দেওয়ার যে ঘোষনা দিয়েছেন তা জেলা প্রশাসকের বিমাতাসূলভ আচরণের কারনে রামুতে আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। রামুতে সরকারের ন্যায্য ত্রান না পাওয়ায় প্রতিটি এলাকার মানুষের মধ্যে যেমন ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তেমনি সরকারের ভাবমৃর্তিও নষ্ট হয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনের দেওয়া বিবৃতিটি রামু উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে। ভবিষ্যতে জনসংখ্যা অনুপাতে ত্রান বরাদ্দ দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় এ সংবাদ সম্মেলনে।

ত্রান বরাদ্দের বিষয়ে যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে তাদেরকে জেলা প্রশাসন হুমকি প্রদর্শন করেছে। যদি তাদের কোন ধরনের শাস্তি ভোগ করতে হয় তার প্রতিদানে শেখ হাসিনার সরকারের অধিনে কিভাবে শাস্তি ভোগ করতে হয় তা কুড়িগ্রাম থেকে শিক্ষা নিতে হবে। কক্সবাজারের মানুষ এখনো ভূলে নাই এলও অফিসের শতকোটি টাকার দূর্নীতির কথা।

লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, হোষ্ট কমিউনিটি হিসেবে কক্সবাজার রামুর জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কোটি টাকা বরাদ্দের হিসাব জানাতে হবে। কক্সবাজার সদর উপজেলা ও পৌরসভায় জেলা প্রশাসনের বরাদ্দের সাথে পৌর মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পাওয়া বরাদ্দের কোন মিল নেই। গত ৩০ এপ্রিল ৫১.০১.২২০০.০০০.৩০.০০৪.২০.২৯৬ নং স্মারক মূলে কক্সবাজার জেলার জন্য ৪৫০ মেট্র্কি টন জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে। তাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার জন্য ১০৮ মেট্্িরক টন, চকরিয়া উপজেলার জন্য ১০২ মেট্রিক টন, মহেশখালী উপজেলার জন্য ৫০ মেট্র্কি টন বরাদ্দ দেওয়া হলেও রামু উপজেলার জন্য মাত্র ১২ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা চরম বিমাতাসুলভ।

উখিয়া-টেকনাফে কম সংখ্যক বরাদ্দ দেওয়া হলেও উখিয়া-টেকনাফের প্রতিটি ঘরে ঘরে অর্থাৎ হোষ্ট কমিউনিটির জন্য আর্ন্তজাতিক সংস্থা ডব্লিউএফপি ত্রান বরাদ্দের দায়িত্ব নিয়েছে। রামুর জনগণের জন্য কোন সংস্থার পক্ষ থেকে এরকম দায়িত্ব নেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে রামু বাসীর জন্য যে ৮ হাজার চালের কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাও অন্যান্য উপজেলা থেকে অনেক কম। এ কারণে রামুবাসী জেলা প্রশাসকের এমন অনিয়মে ক্ষুদ্ধ। তাই রামুবাসীর বকেয়া পাওয়া চালও বরাদ্দের জোর দাবী জানানো হয় এ সংবাদ সম্মেলনে।

এছাড়াও লিখিত বক্তব্যে, জেলা প্রশাসকের এমন বিমাতাসূলভ আচরনে রামু বাসীর কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে দাবি করে, এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা এবং জেলা প্রশাসকের শাস্তির দাবী করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ যথাক্রমে-আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্য জীবি লীগ, ওলামা লীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ, ছাত্র লীগ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র ফেডারেশন ও বাস্তুহারা লীগের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

পাঠকের মতামত: